ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

কলকাতায় প্রধানমন্ত্রী

কলকাতায় প্রধানমন্ত্রী

দুই দিনের সফরে কলকাতায় যাওয়ার পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী-ফোকাস বাংলা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ মে ২০১৮ | ০৪:৫০ | আপডেট: ২৫ মে ২০১৮ | ০৭:৫৫

ভারত সরকারের আমন্ত্রণে দুই দিনের সফরে কলকাতায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ভিভিআইপি ফ্লাইটটি কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। খবর বাসসের।

কলকাতায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান পশ্চিমবঙ্গের পৌর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি শান্তি নিকেতনের পথে রওনা করেন প্রধানমন্ত্রী যাবেন তিনি। 

এর আগে, শুক্রবার সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সফরে গেলেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন করবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। এরপর তারা এই বাংলাদেশ ভবনেই বৈঠকে বসবেন। শনিবার আসানসোলে কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট অব লিটারেচার 'ডি-লিট' ডিগ্রিও দেওয়া হবে। 

আলোচ্যসূচিতে যা থাকছে: পররাষ্ট্র ও কূটনৈতিক সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে তিস্তার পানি বণ্টন, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, রোহিঙ্গা সংকট এবং দুই বন্ধু রাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক যৌথ স্বার্থসংশ্নিষ্ট বিষয়গুলো রয়েছে। 

বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তিস্তা চুক্তি সংক্রান্ত বিদ্যমান পরিস্থিতি সাপেক্ষে আলোচনা এর চেয়ে বেশি এগোনোর সম্ভাবনা কম। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট পরিস্থিতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের দিক থেকে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করা এবং সংকটের স্থায়ী সমাধানে ভারতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর আরও আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

বর্তমানে বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা ক্রমশ বাড়ছে। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নেও বাড়ছে ভারতের অংশীদারিত্ব। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, যোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও যৌথ সহযোগিতার সম্পর্ক উত্তরোত্তর বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এবারের শীর্ষ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার বিষয় বিশেষভাবে স্থান পাচ্ছে। 

বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং দুই দেশের যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার বিষয়ও গুরুত্ব পাবে। তবে এ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে কোনো সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। 

শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি বৈঠক সম্পর্কে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমান সমকালকে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক উত্তরোত্তর নিবিড় হচ্ছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দু'দেশের সম্পর্ক ভিন্ন এক উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। এ অবস্থায় শুক্রবার তাদের মধ্যে যে বৈঠক হবে, তা দু'দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও একটি মাইলফলক হবে। তিনি বলেন, তার বিবেচনায় এ আলোচনায় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্নিষ্ট বিষয়গুলোই প্রাধান্য পাবে। এর বাইরে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হবে।

সমকালের কলকাতা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বোলপুর ও বিশ্বভারতীজুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চলে গেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয় সময় বেলা ৩টা ৩০ পর্যন্ত শান্তিনিকেতনেই থাকবেন। তিনি সেখানে ভারতীয় সময় ৩টায় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ হাইকশিনের প্রতিনিধিসহ অন্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বিশ্বভারতী সূত্র জানিয়েছে, নবনির্মিত বাংলাদেশ ভবন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সরকার ওই বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৫ কোটি রুপি অতিরিক্ত করপাস ফান্ড হিসেবে দেবে। 

আরও পড়ুন

×