ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

‘বন্দুকযুদ্ধে’ কাউন্সিলরসহ ১১ জন নিহত

‘বন্দুকযুদ্ধে’ কাউন্সিলরসহ ১১ জন নিহত

নিহত মো. একরামুল

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ মে ২০১৮ | ০৪:০৮ | আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ | ১১:১০

দেশব্যাপী চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে শনিবার গভীর রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত 'বন্দুকযুদ্ধে' ১১ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে টেকনাফে র‌্যাবের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' এক কাউন্সিলর এবং সীতাকুণ্ড, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, খুলনা, ময়মনসিংহ, চাঁদপুর, বাগেরহাট ও ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আটজন নিহত হন। অন্যদিকে ঝিনাইদহ এবং মেহেরপুরে মাদক ব্যবসায়ীদের দু'পক্ষের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সমকাল ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

টেকনাফ (কক্সবাজার): কক্সবাজারের টেকনাফে র‌্যাবের সঙ্গে 'বন্ধুকযুদ্ধে' মো. একরামুল হক নামের এক ব্যাক্তি নিহত হয়েছেন। 

তিনি টেকনাফ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর এবং পৌরসভার কায়ুখালী পাড়া মৃত আবদুল সাত্তারের ছেলে। তবে তিনি সরকারের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে দাবি র্যাাবের।  

শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে টেকনাফ উপজেলা সদর ইউনিয়নের নোয়াখালী পাড়া এলাকার মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি খুদেবার্তায় নিশ্চত করেছেন র্যা ব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. রুহুল আমিন।

তিনি বলেন, গভীর রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের নোয়াখালী পাড়া এলাকায় দিয়ে একটি ইয়াবার চালান পাচারের খবর পেয়ে এক ব্যক্তির গতিরোধ করে র্যা ব সদস্যরা। এ সময় র্যা বকে লক্ষ্য করে ওই ইয়াবা ব্যবসায়ী গুলি ছুঁড়ে। এ সময় র্যা বও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান একরামুল হক। সে স্বরাষ্টমন্ত্রালয়ে তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী।

তিনি বলেন, এ সময় তার কাছ থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি দেশীয় তৈরি অস্ত্র ও একটি বিদেশি পিস্তল ও ৫ টি খালি খোসা উদ্ধার করা হয়।

টেকনাফ থানার ওসি রণজিৎ কুমার বড়ুয়া বলেন, নিহত একরামুল হক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী এবং টেকনাফ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর। রাত ১টার দিকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছে।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডক্তার সুভন দাস বলেন, রাতে হাসপাতালে ট্রাকে করে গুলিবিদ্ধ এক মৃত ব্যাক্তিকে আনা হয়। তার পেটে ও বুকের দুই পাশে গুলির চিহ্ন রয়েছে।

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক ইয়াবা ব্যবসায়ী   নিহত হয়েছেন। এ সময় তার তিন সহযোগীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের ৫ সদস্য। উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র ও ইয়াবা। 

সারাদেশে চালানো মাদক বিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে চট্টগ্রামে বন্দুকযুদ্ধের এটিই প্রথম ঘটনা।

শনিবার রাত ১টার দিকে উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী সাগর উপকূলীয় বেড়িবাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহতের  নাম রেহান উদ্দিন (২৮)। সে উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের গোলাবাড়িয়া গ্রামের মৃত মালিউল হকের পুত্র। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি ও ইয়াবা পাচারসহ সাতটি মামলা রয়েছে। 

আটককৃতরা হলেন উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের ভাটেরখীল গ্রামের মোহাম্মদ ইউসুফের ছেলে মোহাম্মদ জাফর, একই এলাকার মৃত ইয়ার মোহাম্মদের ছেলে সমুন প্রকাশ ওরফে কালা সুমন ও দক্ষিণ পশ্চিম সৈয়দপুর এলাকার মৃত শরীয়ত উল্লাহর ছেলে  ইউসুফ প্রকাশ টিটু।

পুলিশ জানায়, শনিবার রাত ১টার দিকে পুলিশ খবর পায় উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী সাগর উপকূলে ইয়াবার একটি চালান যাচ্ছে। পরে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি ইফতেখার হাসানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ঘেরাও করে। এসময় ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুঁড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান ইয়াবা ব্যবসায়ী রেহান উদ্দিন। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে দুইটি এলজি, ১০ রাউন্ড কার্তুজ, একটি রাম দা ও একটি ছুরিসহ ৫ হাজার পিচ উয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

বন্দুকযুদ্ধে সীতাকুণ্ড মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহাফুজুর রহমান, নাছির উদ্দিন ও এএসআই হাসান তারেকসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোজাম্মেল হক বলেন, বন্দুকযুদ্ধের পর নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

থানার সেকেন্ড অফিসার মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম খান বলেন, এ ঘটনায় ইয়াবা উদ্ধার, হত্যা ও অস্ত্র আইনে পৃথক তিনটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চললে। পুলিশ বাদি হয়ে এই মামলাগুলো দায়ের করবেন বলে জানান তিনি।

মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনীতে দুইদল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলিতে হাফিজুল ইসলাম ওরফে হাফি (৪৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। পুলিশের ধারণা, নিজেদের মধ্য মাদকের ভাগাভাগি নিয়ে এ ঘটনা ঘটতে পারে। 

নিহত হাফিজুল ইসলাম গাংনী চৌগাছা গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হারেজ উদ্দীনের ছেলে। 

শনিবার গভীর রাতে গাংনী উপজেলার কাথুলি ইউনিয়নের গাঁড়াবাড়িয়া বাথান মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি পিস্তল ও ১১২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গাংনী থানার ওসি হরেন্দনাথ সরকার জানান, রাত ২ টার দিকে গাঁড়াবাড়িয়া গ্রামের বাথান মাঠ এলাকায় দুই দল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হচ্ছে এমন সংবাদে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ হাফিজুল ইসলামের দেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এমকে রেজা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি জানান, নিহত হাফিজুল ইসলামের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও মাদক দ্রব্যের বিষয়ে পৃথক দুটি মামলা হবে।

ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মাদক ব্যবসায়ীদের দুপক্ষের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ লিটন মোল্লা ওরফে গাঁজা লিটন (৩৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

শনিবার রাত আড়াইটার দিকে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া  মহাসড়কের বড়দা জামতলা নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটে।  

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, রাতে তারা খবর পান বড়দা জামতলা এলাকায় গোলাগুলি হচ্ছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী লিটন মোল্লার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৪  শ’ পিস ইয়াবা, ১০ বোতল ফেনসিডিল, একটি  ওয়ান সুটার পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি ও ১০ টি বন্দুকের কার্তুজ উদ্ধার করে। 

তিনি আরও জানান, নিহত লিটন উপজেলার শেখপাড়া এলাকার আব্দুল হাকিম মোল্লার ছেলে। সে একজন তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী এবং তার বিরুদ্ধে ১০টি মাদকের, একটি চাঁদাবাজি ও ১টি পুলিশ এ্যসল্ট মামলাসহ ১২ টি মামলা রয়েছে।  ধারণা করা হচ্ছে মাদকের চালানের ভাগাভাগি নিয়ে দুপক্ষের গোলাগুলিতে লিটন নিহত হয়েছেন। তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হালিম মন্ডল (৩৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। 

শনিবার রাত দেড়টার দিকে শহরের হাউসিং ‘ডি’ ব্লক মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, মাদক দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশে একদল মাদক ব্যবসায়ী ওই মাঠে অবস্থান করছে এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায় । পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য কর গুলি ছুঁড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে একজন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়।

ওসি বলেন, পরে পুলিশ জানতে পারে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তি শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হালিম মন্ডল। তিনি পুলিশের তালিকাভুক্ত একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে ১টি সাটার গান, ১টি পাইপ গান, ৩ রাউন্ড গুলি ও ৮শ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

নোয়াখালী: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হাসান ওরফে ইয়াবা হাসান নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন পুলিশের তিন সদস্য।

শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বগাদিয়া এলাকার আঞ্চলিক এজতেমা মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি (অস্ত্র), সাত রাউন্ড গুলি, ৫টি ধারালো অস্ত্র ও ১২৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। 

নিহত হাসান উপজেলার বানুয়াই গ্রামের মৃত হাফিজ মিয়ার ছেলে।

সোনাইমুড়ী থানার ওসি নাসিম আহম্মেদ জানান, রাতে চিহ্নিত ও কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হাসানকে গ্রেফতারে উপজেলার বগাদিয়া ইজতেমা মাঠে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় হাসানের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে  গুলি ছুঁড়ে। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে হাসান গুলিবিদ্ধ হন। 

তিনি জানান, পরে তাকে উদ্ধার করে সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

নিহত হাসানের বিরুদ্ধে মাদক আইনে ২১টি এবং তিনটি অস্ত্র মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

খুলনা: খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর গ্রামের মজুদখালি শ্মশানঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আবুল কালাম মোল্লা নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। 

শনিবার রাত পৌনে ৩ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত কালামের বাড়ি যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা গ্রামে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে ৫টি মামলা রয়েছে। 

পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন যে, ৪ জন মাদক ব্যবসায়ী ২টি মোটরসাইকেল নিয়ে বারাকপুরে অবস্থান করছে। রাতে সেখানে পুলিশ অভিযান চালালে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল ও গুলি ছুঁড়ে। তখন পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। গুলি বিনিময়ের একপর্যায়ে কালাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। 

এ সময় তিনজন পালিয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি টুটু বোর রাইফেল, ৪ রাউন্ড গুলি, ২০ পিস ইয়াবা ও নম্বর বিহীন একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের এএসআই আমান ও পলাশ আহত হয়েছেন।

ময়মনসিংহ: ময়মনিসংহে গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাত এক যুবক নিহত হয়েছেন।

শনিবার রাত দেড়টার দিকে নগরীর মরাখলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। 

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আশিকুর রহমান জানান,  গভীর রাতে নগরীর মরাখলা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক ভাগাভাগি করছে, এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

‘বন্দুকযুদ্ধে’ পুলিশ কনস্টেবল হুমায়ূন এবং আমির হামজা আহত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে ১০০ গ্রাম হেরোইন, ৪টি গুলির খোসা, ২টি রামদা ও ১০০ টি পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

চাঁদপুর: চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সেলিম (৩৭) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

রোববার ভোরে মতলব দক্ষিণের হাজীর ডোন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত সেলিম মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী ইউনিয়নের সালামত উল্লাহর ছেলে। তার বিরুদ্ধে সাতটি মাদক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মতলব দক্ষিণ থানার ওসি কুতুব উদ্দিন জানান, ভোরে থানা ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল মতলব সড়কের হাজীর ডোন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সেলিমকে আটক করে। এ সময় সেলিমের সহযোগীরা পুলিশের উপর গুলি চালালে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। এ সময় সেলিম গুলিবিদ্ধ হলে তাকে উদ্ধার করে মতলব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরতে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও জানান, এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৪ রাউন্ড গুলি, ৬ রাউন্ড কার্তুজ ও ১১০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

বাগেরহাট: বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মিটুল বিশ্বাস (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। 

শনিবার গভীর রাতে উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের চিংগুড়ি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত মিটুল উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের চিংগুড়ি গ্রামের খোকা বিশ্বাসের ছেলে। তার বিরুদ্ধে নয়টি মাদক, একটি হত্যা ও পুলিশের ওপর হামলার তিনটি মামলাসহ মোট ২০টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

চিতলমারী থানার ওসি অনুকুল চন্দ্র সরকার জানান, উপজেলার কুনিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শনিবার রাতে মিটুলকে আটক করা হয়। পরে তাকে নিয়ে উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের চিংগুড়ি গ্রামে মাদক উদ্ধার অভিযানে যায় পুলিশ। এ সময়  মিটুলের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।

ওসি বলেন, এক পর্যায়ে মিটুলের সহযোগীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে মিটুলের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। 

তিনি জানান, এ সময় ঘটনাস্থল থেকে শুটারগান, দুই রাউন্ড গুলি, দুই কেজি গাঁজা ও ১০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও): ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে রফিকুল ইসলাম ওরফে তালেবান (৫২) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

রোববার ভোরে জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ-মহারাজা রাস্তার দূর্লভপুর নামকস্থানে এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদ পেয়ে রাণীশংকৈল উপজেলার ভোরনিয়া শেয়ালডাঙ্গী গ্রামের হুমায়ুন কবিরের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামকে ধরতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় রফিকুলের সহযোগীরা পুলিশের উপর গুলি চালালে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় দুপক্ষের গোলাগুলিতে রফিকুল নিহত হন। পরে ঘটনাস্থল থেকে দেশে তৈরি একটি পাইপগান, ১০০ বোতল ফেন্সিডিল ও ২ টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। তার বিরুদ্ধে রাণীশংকৈল ও বালীয়াডাঙ্গী থানায় ৮টি মামলা রয়েছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাণীশংকৈল থানার ওসি আব্দুল মান্নান জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

আরও পড়ুন

×