গাজীপুর সিটি নির্বাচন
জাহাঙ্গীরকে একলা চলো নীতি পরিহারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
শাহেদ চৌধুরী
প্রকাশ: ২২ মে ২০১৮ | ১৯:১৫
গাজীপুরে আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে নিয়ে নির্বাচনী প্রচার
কার্যক্রম চালাতে দলের মেয়রপ্রার্থী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমকে নির্দেশ
দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি একইসঙ্গে দলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর
প্রার্থীদের সঙ্গে সমন্বয় করারও নির্দেশ দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা সমকালকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা সোমবার রাতে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে গাজীপুর সিটি করপোরেশন
নির্বাচনে দলের মেয়রপ্রার্থী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমকে ডেকে আনেন। এ সময়
তাকে নির্বাচন-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
সেখানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু,
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী
ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ এবং উপদেষ্টা
পরিষদ সদস্য রশিদুল আলম। তাদের মধ্যে দু'জন সমকালকে বলেছেন, গাজীপুরে
আওয়ামী লীগের সিনিয়র-জুনিয়র অর্থাৎ সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে নির্বাচনী
কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার জন্য দলের মেয়রপ্রার্থীকে নির্দেশ দিয়েছেন
প্রধানমন্ত্রী।
ওই সময় অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি ও
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সহজ নয়। সবাইকে নিয়েই রাজনীতি করতে হয়। একা
রাজনীতি হয় না। আবার রাজনীতিতে অনেকে সঙ্গে থেকেও সরে যান। নির্বাচনেও এমন
হয়ে থাকে। তাই সতর্ক থাকতে হবে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সফলভাবে নির্বাচনী
বৈতরণী পার হতে হলে প্রচার কার্যক্রমে আরও গতি আনতে হবে। দলের
সিনিয়র-জুনিয়র নেতাকর্মীদের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে শতভাগ সক্রিয় করতে হবে,
এর কোনো বিকল্প নেই।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানান, গাজীপুরে মেয়রপ্রার্থী অ্যাডভোকেট
জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে ঘাটতি থাকার প্রমাণ
মিলেছে। এই প্রার্থী দলের সকল নেতাকর্মীকে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত
করছেন না। এ সব নিয়ে গত রোববার গাজীপুরের টঙ্গীতে স্থানীয় এমপি জাহিদ আহসান
রাসেল এমপির বাসভবনে দলের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বৈঠকে বিশদ আলোচনাও
হয়েছে। এ বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হয়েছে। এরই
পরিপ্রেক্ষিতে মেয়রপ্রার্থীকে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মেয়রপ্রার্থীর সমন্বয় করতে দলের কেন্দ্রীয়
আট নেতার নির্বাচনী এলাকার আটটি থানায় নির্বাচনী কার্যক্রম দেখভাল করার
সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঈদুল ফিতর পর্যন্ত এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ সময়ে
বিভিন্ন স্থানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন এবং তারাবিহর নামাজের পর নির্বাচনী
বৈঠক করা হবে। সেই সঙ্গে নতুন নির্বাচনী অফিস স্থাপন করে সেখান থেকে
মেয়রপ্রার্থীর প্রতিদিনের কর্মসূচি সংশ্নিষ্ট নেতাকর্মীদের জানাবেন দলের
মহানগর ও জেলার দপ্তর এবং প্রচার সম্পাদক। সমন্বয়ের এই কার্যক্রম নিশ্চিত
করবেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী
নওফেল। এ ছাড়াও আগামী ২৬ জুন অনুষ্ঠেয় গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে আরও বেশি
সক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।