আসিয়া বিবিকে আশ্রয় দিতে চায় কানাডা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ | ০৬:৩৭
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানের জেল থেকে সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া খ্রিস্টান নারী আসিয়া বিবিকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করছে কানাডা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই কথা জানিয়েছেন। খবর বিবিসি বাংলার
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট তাকে মুক্তির আদেশ দেওয়ার আগে আট বছর কারাগারে কাটিয়েছেন মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসিয়া বিবি। তার অব্যাহতির আদেশ হওয়ার পর পাকিস্তানে সহিংস বিক্ষোভ শুরু করে ইসলামপন্থীরা।
জাস্টিন ট্রুডো বার্তা সংস্থা এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন যে, আসিয়া বিবিকে কানাডায় নিয়ে আসা এবং আশ্রয় দিতে চায় তার সরকার।
প্যারিসে একটি কনফারেন্সে ট্রুডো বলেন, সেখানে (পাকিস্তানে) অনেক স্পর্শকাতর বিষয় রয়েছে, যে কারণে এ বিষয়ে আমি বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে আমি মনে করিয়ে দিতে চাই, কানাডা একটি আন্তরিক দেশ।
আসিয়া বিবির স্বামী বলেছেন, তাদের পরিবার এখন বিপদে আছে এবং যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় তিনি আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন।
হত্যার হুমকি পাওয়ার পর আসিয়া বিবির আইনজীবী, সাইফুল মুলুককে অস্থায়ী শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দিয়েছে নেদারল্যান্ডস।
আসিয়া বিবিকে অব্যাহতির আদেশের পর শুরু হওয়া সহিংসতা ঠেকাতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পাকিস্তানের সরকার সম্মত হয়েছিল যে, তার বিদেশ যাওয়া ঠেকাতে তারা পদক্ষেপ নেবে।
বেশ কয়েকটি দেশ তাকে আশ্রয় দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
আসিয়া বিবিকে আশ্রয় দেয়ার এই সিদ্ধান্তে কানাডার বিরোধী রক্ষণশীল পার্টিরও সমর্থন রয়েছে। তার পরিবারকে আশ্রয় দিতে সবরকম ক্ষমতা ব্যবহার করার জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোকে অনুরোধ জানিয়েছে।
বিবিসি জানায়, ৪৭ বছর বয়সী খামার শ্রমিক আসিয়া তিন সন্তানের জননী। ২০০৯ সালে খামারে কাজ করার সময় এক গরমের দিনে মুসলিম শ্রমিকদের গ্লাসে চুমুক দিয়ে পানি পান করেন। আর এ কারণে মুসলিম সহকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
তারা দাবি করেন, আসিয়া যেহেতু মুসলিম নন, সেক্ষেত্রে গ্লাসটি ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে গেছে, সেটি আর ব্যবহার করা যাবে না। এ কারণে আসিয়াকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার দাবি জানান তারা। তবে তা প্রত্যাখ্যান করেন আসিয়া। সে সময় তাদের মাঝে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
পরে মুসলিম শ্রমিকরা দাবি করেন, আসিয়া বিবি নবী হযরত মোহাম্মদ (স.) কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তবে আসিয়া বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের কথা স্বীকার করলেও; তিনি দাবি করেন ধর্ম অবমাননাকর কিছু বলেননি।
২০১০ সালে পাকিস্তানের ধর্ম অবমাননা সংক্রান্ত আইনে দেশটির প্রথম নারী হিসেবে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিশ্বজুড়ে এ নিয়ে তুমুল সমালোচনা হয়। এমনকি পাকিস্তানেও তার পক্ষে দাঁড়ান অনেকে। তবে এদের মধ্যে অন্তত দুই জনকে তাদের অবস্থানের কারণে প্রাণ দিতে হয়।
- বিষয় :
- আসিয়া বিবি