পদ্মার ভাঙন রোধে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প
অবশেষে ঠিকাদার নিয়োগ
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ১৯:১৬
অবশেষে শরীয়তপুরের ক্ষতিগ্রস্ত নড়িয়াবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন হতে যাচ্ছে।
সর্বনাশা পদ্মা তাদের জীবনের সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। ওই অঞ্চলের অসহায় মানুষকে
বাঁচাতে নদীর তীর সংরক্ষণে এক বছর আগে যে প্রকল্প নেওয়া হয়, তা বাস্তব রূপ
পাচ্ছে। প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন আলোচ্য
প্রকল্পটির কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করেছে সরকার। সরকারি সংস্থা
খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। গতকাল বিকেলে সচিবালয়ে
অনুষ্ঠিত এ প্রকল্পের দর প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক
বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বলেছে, ঠিকাদার নিয়োগের মধ্য দিয়ে প্রকল্পের
কাজ শুরু হতে আর কোনো বাধা নেই। খুব শিগগিরই কাজ শুরু হবে। অর্থমন্ত্রী
আবুল মাল আবদুল মুহিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
গত বছরের অক্টোবরে একনেকে প্রকল্পটি পাস হয়। ঠিকাদার নিয়োগে নানা জটিলতার
কারণে এতদিন কাজ শুরু করা যায়নি। সম্প্রতি পদ্মার ভাঙনে নড়িয়া এলাকার
বেশিরভাগ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত
আলোচনায় নদীভাঙন বিষয়ে পূর্বপ্রস্তুতি না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানা যায়, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে
উল্লিখিত প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য সংশ্নিষ্টদের নির্দেশ দেন
প্রধানমন্ত্রী। এ পরিপ্রেক্ষিতে জরুরিভাবে আলোচ্য প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগ
অনুমোদন দেওয়া হয় গতকাল অর্থনৈতিকবিষয়ক মন্ত্রিসভার কমিটির বৈঠকে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে,
শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ডান তীর সংরক্ষণের
মাধ্যমে এলাকায় অবস্থিত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, হাটবাজার, ফসলি জমিসহ
সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা নদীভাঙন থেকে রক্ষা করা। প্রকল্প এলাকায়
আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা এবং ড্রেজিংয়ের
মাধ্যমে নদীর প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা। এ প্রকল্পের আওতায় ৮ দশমিক ৯০
কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ, ৯ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ড্রেজিং এবং ৮টি আরসিসি
পাকা ঘাট নির্মাণ করা হবে। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে পুরো অর্থের জোগান
দেওয়া হবে।
শরীয়তপুরে এখনও অব্যাহত রয়েছে পদ্মার ভাঙন। গত দেড় বছরে পদ্মার ভাঙনে
সেখানে নিঃস্ব হয়েছে পাঁচ হাজার ৮১টি পরিবার। ঝুঁকিতে রয়েছে আরও আট হাজার
পরিবার। নড়িয়ার কেদারপুর, মোক্তারের চর ইউনিয়ন ও নড়িয়া পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এসব এলাকায় সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ
হাজার হাজার ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র বলেছে,
প্রকল্প এলাকাটি পদ্মা সেতু থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার ভাটিতে এবং মেঘনা নদীর
মোহনা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার উজানে অবস্থিত।
- বিষয় :
- পদ্মার ভাঙন