বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে তেল-গ্যাস নেবে ভারত
রাজীব আহাম্মদ
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২২ | ১১:১৫ | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২২ | ০০:৪৯
সিলেট, মৌলভীবাজারের সড়ক ব্যবহার করে আসাম থেকে ত্রিপুরা, মণিপুর রাজ্যে জ্বালানি তেল ও তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) নেবে ভারত। বন্যা ও ভূমিধসে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিধ্বস্ত হওয়ায় ভারতকে এ সুবিধা দিচ্ছে বাংলাদেশ।
বুধবার এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে।
বাংলাদেশের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) এবং ভারতের ইন্ডিয়ান ওয়েল করপোরেশন লিমিটেড (আইওসিএল) বেলা আড়াইটায় সড়ক পরিবহন সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরীর উপস্থিতিতে এমওইউ সই হওয়ার কথা রয়েছে। সওজের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান এমওইউ সইয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কী শর্তে, কতদিনের জন্য ভারতীয় কোম্পানি বাংলাদেশের সড়ক ব্যবহার করে জ্বালানি পরিবহন করতে পারবে— তা নির্ধারিত থাকবে সমঝোতা স্মারকে।
সওজ সূত্র সমকালকে জানিয়েছে, ভারতকে আপদকালীন সময় অর্থাৎ দুই মাসের জন্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে জ্বালানি পরিবহনের সুবিধা দেওয়া হবে। জ্বালানীবাহী ভারতীয় গাড়ির ভারতীয় ভিসা, ইমিগ্রেশন, কাস্টম ও রুট পারমিট সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। কিলোমিটারে প্রতি টন জ্বালানি পরিবহনের জন্য ভারতীয় গাড়ি ১ টাকা ৮৫ পয়সা টোল দেবে। চট্টগ্রাম, আশুগঞ্জ বন্দর থেকে (ট্রান্সশিপমেন্ট) পণ্য নিয়ে আসাম, ত্রিপুরায় যাওয়া ট্রাককে একই পরিমাণ টোল দিতে হয়।
ভারতীয় জ্বালানিবাহী গাড়ির চলাচলের সুবিধার্থে মৌলভীবাজার-শমসেরনগর-চাতলাপুর সড়কের ধলই সেতুর পুনর্বাসন এবং তামাবিল-সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ-রাজনগর-ব্রাহ্মণবাজার-শমসেরনগর-চাতলাপুর সড়কের সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার সওজে পাঠানো মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের খরচে এই সংস্কার কাজ করা হবে।
এমওইউ অনুযায়ী, মেঘালয়ের ডাউকি থেকে বাংলাদেশের সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢুকবে জ্বালানি তেল, এলপিজিবাহী গাড়ি। সিলেট থেকে মৌলভীবাজারের শমশেরনগর থেকে চাতলাপুর চেকপোস্ট হয়ে ত্রিপুরার কৈলাশহরে যাবে। জ্বালানি পরিবহন শেষে একই পথে ভারতে ফিরে যাবে।
বন্যা ও ভূমিধসে আসামের সড়ক ও রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজধানী গোহাটি থেকে রাজ্যটির ডিমাহাসও জেলা, বরাক উপত্যকা হয়ে জ্বালানি তেল ও গ্যাস ত্রিপুরা, মনিপুর পাঠায় দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা আইওসিএল। রেলপথ বিধ্বস্ত হওয়ায় গোহাটি থেকে মেঘালয় ঘুরে ত্রিপুরা, মনিপুর, মিজোরামে জ্বালানি পাঠাতে হচ্ছে। এতে পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। সময়ও লাগছে দ্বিগুণ। দূরত্ব বেড়েছে ১৭৩ কিলোমিটার।
পাহাড়ি বিপদসঙ্কুল পথ এড়িয়ে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে জ্বালানি সরবরাহের সুবিধা চেয়ে গত ২২ মে ভারত অনুরোধ জানায়। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে বন্যা পরবর্তী সময়ে আসাম থেকে বাংলাদেশ হয়ে ত্রিপুরায় জ্বালানি তেল পাঠিয়েছিল ভারত।
আসামের বেতকুচি জ্বালানি ডিপো থেকে ত্রিপুরার ধর্মনগর ডিপোর দূরত্ব ৩৭৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে পড়ছে ১৩৭ কিলোমিটার পথ। ১৫ টন জ্বালানি তেলবাহী ভারতীয় ট্যাংকার এই পথ ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশকে ৩ হাজার ৮০০ টাকা টোল দেবে। খালি অবস্থায় ফিরে যাওয়ার সময়ও একই পরিমাণ টোল দিতে হবে ভারতীয় গাড়িকে।