ঢাকা শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪

এবার বাড়ল চিনির দাম

এবার বাড়ল চিনির দাম

ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ২১:২৩

রাজধানীর খুচরা বাজারে চিনির দামও বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরায় কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। মূলত সরকারি চিনির দাম গত মাসে কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বাড়ানোর ফলে মিল মালিকরাও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। 

যদিও বিদেশ থেকে কম দামে আমদানি করা চিনি এখন বিক্রি হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে দর বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছেন বিক্রেতারা। একই সঙ্গে শুল্ক-কর না কমায় দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করছেন তারা। 

আসছে গ্রীষ্মকালীন মৌসুম ও রোজা। এ সময়ে চিনির চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সুযোগ নিতে মিল পর্যায়ে এখন চিনির দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত দুই সপ্তাহ ধরেই চিনির পাইকারি দাম বাড়ছে। পাইকারিতে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) দাম বেড়েছে প্রায় ২৫০ টাকা। এ হিসাবে কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বেড়েছে। পাইকারিতে প্রতি বস্তা চিনি তিন হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ছে ৬৩ টাকা। খুচরায় ক্রেতাদের তা কিনতে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা গুনতে হচ্ছে। 

মিরপুর ১নং বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন জানান, পাইকারি বাজারে বাড়তে থাকায় খুচরায়ও দাম বেড়েছে। রমজান আসার আগেই কোম্পানিগুলো দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ কারণে চিনির বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।

জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) বাজেটে কর বাড়ানোর অজুহাতে চিনির দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাজেটের পর থেকে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত কয়েক দফায় খুচরা পর্যায়ে চিনির দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা। বাজেটের আগে প্রতি কেজি চিনি ছিল ৫০ টাকা। এর পর গত ডিসেম্বরে বেড়ে ৬৫ টাকা হয়। যদিও চিনির বাজার স্থিতিশীল রাখতে উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) অন্যতম কাজ। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা তা না করে জানুয়ারির শেষ দিকে চিনির দাম বাড়িয়ে দেয়। এর পর থেকে কোম্পানিগুলোও দাম বাড়াতে শুরু করে বলে অভিযোগ করেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে বাড়ছে চিনির দাম। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি চিনি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা ছিল। এখন তা বেড়ে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতি পাউন্ড চিনির বুকিং মূল্য ছিল ২৯ সেন্ট। এর পর দু-এক সেন্ট কমলেও গত ডিসেম্বরে ৩০ সেন্ট ছিল। এখন আগামী মার্চে সরবরাহযোগ্য চিনির বুকিং দাম হচ্ছে প্রতি পাউন্ড ১৫ দশমিক ৭৮ সেন্ট। গত বছরজুড়ে চিনির দামে তেমন হেরফের হয়নি। আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও দেশের বাজারে অস্থির হয়ে পড়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর ১৫ লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে রমজানে আড়াই লাখ টন চিনির প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া গ্রীষ্মকালীন সময়ে চিনির চাহিদা বেশি থাকে। এই চাহিদা সমন্বয় করে রমজানে বাজার সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সম্প্রতি এক লাখ টন চিনি আমাদানির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন।

এ অবস্থায় মৌসুমের আগে করপোরেশন দাম বাড়ানোর ফলে দেশের চিনির বাজার আবারও অস্থির হয়ে পড়ল। দীর্ঘদিনই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার চিনির কেজিপ্রতি ডিলার মূল্য ছিল ৫০ টাকা। গত বছরে এক দফা ডিলারদের চিনির দাম কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ৫৫ টাকা করা হয়। সর্বশেষ জানুয়ারির শেষ দিকে ডিলারদের চিনির কেজিপ্রতি মূল্য আরও পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ৬০ টাকা করা হয়।

বাজারে অন্যান্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আগে প্রতি কেজি চীনা পেঁয়াজ ৭০ টাকা এবং পাকিস্তান ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১০০ টাকা ছিল। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়ে চীনা পেঁয়াজ ১০০ টাকা ও আমদানি করা অন্য পেঁয়াজ ১১০ টাকা হয়েছে। দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য পণ্যের দামে তেমন হেরফের হয়নি।

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×