আপিল বিভাগের মন্তব্য
কৃষকের কোমরে দড়ি, কোটি টাকা খেলাপিদের কিছু হয় না

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২২ | ০৯:১৮ | আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২২ | ০৯:১৮
চেক প্রতরণা সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে সম্প্রতি ২৫ হাজার টাকা ঋণ খেলাপির ঘটনায় পাবনার ১২ কৃষককে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। সোমবার ওই আদালতের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম শুনানিতে বলেন, ২৫ হাজার টাকার জন্য সাধারণ কৃষকদের কোমরে দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে যেতে পারেন, অথচ যাদের কাছে লক্ষ-কোটি টাকা পাওনা, তাদের কিছু হয় না। চেম্বার আদালতে এদিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান চেক ডিজঅনার মামলা করতে পারবে না বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের করা আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ করা হয়।
শুনানির শুরুতে এম আমিন উদ্দিন আদালতকে বলেন, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় বিষয়। হাইকোর্ট রায় দিয়ে বলেছেন, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারের মামলা করতে পারবে না। নিন্ম আদালতে এ সংক্রান্ত্র বিচারাধীন সব মামরায় স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। তখন চেম্বার বিচারপতি বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় না দেখে এ বিষয়ে আপাতত কিছু বলা যাবে না।
এ সময় ব্র্যাক ব্যাংকের আইনজীবীকে উদ্দেশে উষ্মা প্রকাশ করে আদালত বলেন, আপনারা ২৫ হাজার টাকার জন্য সাধারণ কৃষকদের কোমরে দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ যাদের কাছে লক্ষ-কোটি টাকা পাওনা, তাদের কিছু হয় না। ঋণ দেওয়ার সময় গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া ব্র্যাংক চেকের বিষয়ে চেম্বার বিচারপতি বলেন, এই চেকে কে স্বাক্ষর করে, কে টাকার অঙ্ক বসায়, কে কলাম পূরণ করে তার কোনো হদিস নেই। এই চেক নেওয়া যাবে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে তার পরেও ব্যাংকগুলো কেন মানছে না?
তখন আইনজীবী আমিন উদ্দিন চেম্বার বিচারপতির কাছে হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে বলেন, হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দরকার। নইলে ঋণের টাকা আদায় করা যাবে না। তখন চেম্বার বিচারপতি আইনজীবীর কাছে এ সংক্রান্ত উদাহরণ দেখতে চাইলে তা দেখাতে সময় চান ব্র্যাক ব্যাংকের আইনজীবী। পরে চেম্বার আদালত আগামী ১ ডিসেম্বর শুনানির তারিখ রেখে ব্র্যাক ব্যাংকের আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।