ব্র্যাকের গবেষণা
জেন্ডার সহিংসতার ৩৮৫ মামলায় দোষী সাড়ে ৩%

প্রতীকী ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ১০:৫৬ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ১০:৫৬
দেশে জেন্ডার সহিংসতার ৩৮৫টি মামলার ৫০৫ জন আসামির মধ্যে মাত্র ৩৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার এ হার মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এ গবেষণার ফল ও সুপারিশমালা তুলে ধরতে অ্যাডভোকেসি সংলাপের আয়োজন করা হয়। 'জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও মেয়েদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে পাবলিক প্রসিকিউশন সিস্টেমকে শক্তিশালী করা' শীর্ষক সংলাপে গবেষক এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাজুল ইসলাম গবেষণার ফল তুলে ধরেন। চলতি বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গবেষণাটি চালানো হয়।
জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা সংক্রান্ত মামলাগুলোর ক্ষেত্রে পাবলিক প্রসিকিউশন সিস্টেমের বিদ্যমান দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করতে এবং সংস্কারের সুপারিশ করতে ব্র্যাক এ গবেষণা চালিয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বাধার কারণে দেশে নির্যাতনের শিকার নারী ও মেয়েশিশুদের ন্যায়বিচার পাওয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে কম। জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও মেয়েশিশুদের অধিকাংশই তাদের সঙ্গে সংঘটিত অপরাধের বিচার চাইতে অক্ষম। তারা মামলা করলেও তদন্ত বিলম্বিত হয়, বিচার দীর্ঘায়িত হয় এবং শেষ পর্যন্ত খুব কম মামলায়ই দায়ীরা দোষী সাব্যস্ত হয়।
গবেষণায় সুপারিশ হিসেবে সরকারি কৌঁসুলিদের জন্য প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং তাঁদের কর্মক্ষমতা ও জবাবদিহিতা নিরীক্ষণ ব্যবস্থা নিশ্চিতের কথা বলা হয়। সংলাপে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান বলেন, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে সংবেদনশীল আচরণ নিশ্চিত করতে বিচার কাজের সঙ্গে জড়িতদের জন্য জেন্ডার সংবেদনশীলতা প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
ঢাকা জজ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ তানজিনা ইসমাইল বলেন, নারী নির্যাতন সংক্রান্ত মামলাগুলোর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সরকারি কৌঁসুলিদের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। সংলাপে আরও বক্তব্য দেন বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক গোলাম কিবরিয়া, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার মোফেলা খাতুন মেমী, ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি ইনোভেশন অ্যান্ড মাইগ্রেশন সিনিয়র ডিরেক্টর কেএএম মোর্শেদ, ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির পরিচালক নবনিতা চৌধুরী, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ, ন্যাশনাল লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস অর্গানাইজেশনের পরিচালক (জেলা জজ) মোহাম্মদ আল মামুন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি বিভাগের কর্মসূচি প্রধান মাসুমা বিল্লাহ।
- বিষয় :
- জেন্ডার সহিংসতা
- ব্র্যাক