ঢাকা মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সংলাপে বিশিষ্টজন

বৈষম্যমূলক আচরণকে দণ্ডনীয় অপরাধ করতে হবে

বৈষম্যমূলক আচরণকে দণ্ডনীয় অপরাধ করতে হবে

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২২ | ১১:০৪ | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২২ | ১১:০৪

রাজধানীতে এক সংলাপে বিশিষ্টজন বলেছেন, এ দেশে বৈষম্যের শিকার ব্যক্তির প্রতিকার পাওয়ার প্রক্রিয়া জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি। তা সত্ত্বেও প্রস্তাবিত বৈষম্যবিরোধী আইনে বৈষম্যমূলক আচরণ বা কার্যের ফলে ফৌজদারি প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ফলে এটা আইনের মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করবে। বৈষম্যমূলক আচরণকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে আইনে ধারা সংযোজনের পক্ষেও মত দিয়েছেন তাঁরা।

বুধবার মহাখালী ব্র্যাক মিলনায়তনে আয়োজিত সংলাপে এ মত উঠে আসে। বর্তমানে জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটিতে পর্যালোচনার জন্য থাকা আইনটি নিয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ সময় কিছু সংযোজন ও পরিমার্জনের সুপারিশ করেছে।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ), ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও নাগরিক উদ্যোগ যৌথভাবে এ সংলাপের আয়োজন করে। এতে সংশ্লিষ্ট আইনপ্রণেতা, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ও বৈষম্যের শিকার বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সংলাপে খসড়া আইনের নানা অসংগতি তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে ২০ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়।

সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, আইনের খসড়ায় বৈষম্যমূলক আচরণকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিবেচনা করা হয়েছিল এবং পাশাপাশি ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান ছিল। কিন্তু উপস্থাপিত বিলে শাস্তির কোনো বিধান রাখা হয়নি।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এসডিজি প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অনেকেই বলেন আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। কিন্তু আইন তখনই কার্যকর হয়, যখন রাজনৈতিক ইচ্ছা দৃশ্যমান হয়, দক্ষ প্রশাসন থাকে এবং নাগরিকদের পক্ষ থেকে সক্রিয় মনিটর করা হয়। তিনি আরও বলেন, আইনে বৈষম্যের তালিকাটি আরও প্রসারিত ও সামগ্রিক করতে হবে।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, মানুষের মনোজগতে ও দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনা না গেলে আইন করে কোনো লাভ হবে না। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সামাজিক সম্প্রীতি সৃষ্টি করা। আইনের মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষ যেন ন্যায়বিচার পায়, সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।

ব্লাস্টের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, সেবা প্রাপ্তিতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নানা রকম বৈষম্যের শিকার হয়। যেমন শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকরি পাওয়া। বৈষম্যের সংজ্ঞাকে আরও ব্যাপকভাবে দেখাতে হবে।

নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, খসড়া আইনটিতে প্রথমে 'বৈষম্য বিলোপ বা নিরসন' কথাটি ছিল। এখন বলা হচ্ছে, 'বৈষম্যবিরোধী আইন', কাজেই আইনের সংজ্ঞা স্পষ্ট হওয়া দরকার। আইনটি পাস হওয়ার পর জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে দ্রুত মনিটরিং কমিটি গঠনের ব্যবস্থা করা ও কার্যকর করা উচিত।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলিত নেতা বিকাশ কুমার দাস। বক্তব্যে দেন বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের নির্মল চন্দ্র দাস, আদিবাসীদের পক্ষে সনজীব দ্রং, হিজড়া প্রতিনিধি পার্বতী আহমেদ ও প্রতিবন্ধীদের পক্ষে নাজমা আহমেদ পপি।

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×