ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

অফিস বন্ধ বলে বেতন হয়নি ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর

অফিস বন্ধ বলে বেতন হয়নি ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২০ | ০৮:৫২

করোনাভাইরাসের ধাক্কা লেগেছে সারাদেশের এমপিওভুক্ত ৫ লাখ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীর বেতনেও। মার্চ মাসের বেতন পাননি তারা। চলমান সরকারি ছুটির কারণে ‘ডিজি অফিস’ হিসেবে পরিচিত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি) বন্ধ থাকায় সময়মতো বেতন-বিল তৈরি হয়নি। ফলে বিপাকে পড়েছেন এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারী।

অবশ্য মাউশি জানিয়েছে, তাদের কারণে নয়। বরং এজি অফিসের (মহা হিসাব নিরীক্ষকের দফতর) কারণে এ বিলম্ব হয়েছে। তারা আশা করছেন, আগামী ৭/৮ এপ্রিলের মধ্যে বেতন ছাড় করানো সম্ভব হবে। 

সারাদেশের এমপিওভুক্ত ২৬ হাজার স্কুল, কলেজ, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসার ৪ লাখ ৯৫ হাজার শিক্ষক ও কর্মচারী প্রতিমাসে সরকার থেকে এমপিও’র (মান্থলি পে-অর্ডার) অনুদান পান। স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের বিল-বেতন তৈরি করে মাউশির প্রশাসন শাখা। 

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ১৭মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিজ বাসায় অবস্থান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠান বন্ধের পর সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা নির্ধারিত সময়েই বেতন পেয়েছেন। অথচ এখনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সরকারি বেতনের অংশ (এমপিও) ছাড় করা হয়নি। এ অর্থ ব্যাংকে জমা দেওয়া হলেও তা শিক্ষক-কর্মচারীদের হাতে পৌঁছাতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লেগে যাবে। এ কারণে ক্ষুব্ধ সারাদেশের প্রায় পাঁচ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি সমকালকে বলেন, ‘করোনা আতঙ্কে এমনিতেই অসহনীয় সময় পার করতে হচ্ছে আমাদের। তার মধ্যে মাস শেষ হলেও এখনো আমাদের এমপিওভুক্তির অর্থছাড় দেওয়া হয়নি। বেতন না পেয়ে শিক্ষকরা বাড়িভাড়া দিতে পারছেন না। সরকার ব্যাংকের লোনের কিস্তি আদায় বন্ধের ঘোষণা দিলেও ব্যাংকগুলো নানা অজুহাত দেখাচ্ছে। শিক্ষকরা প্রায় ১৫ দিন ঘরে বসা। ঘরের বাজার শেষ। পকেট খালি, চারদিকে অন্ধকার হয়ে এলেও নিজের অভাব ও অভিযোগের কথা কাউকে বলতে পারছি না।‘ 

এই বেতন-বিল তৈরির দায়িত্ব থাকা মাউশির উপ-পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) মো. রুহুল মোমিন বৃহস্পতিবার সমকালকে বলেন, ‘গত ২৪ মার্চ এমপিও কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে নতুন নিয়মে বিল-বেতন তৈরি হবে। উপজেলাগুলোতে আর এমপিওশিট পাঠানো হবে না। সফট কপি অনলাইনে যাবে। ২৫ তারিখের মধ্যেই বিল-বেতন তৈরি করে এজি অফিসে পাঠানো হয়। তবে ২৬ তারিখ থেকে ছুটি শুরু হওয়ায় তারা চেক দিয়েছে ৫ এপ্রিলের তারিখ দিয়ে। এখন ৫ এপ্রিলের আগে এই চেক ব্যাংকে অনার করানো যাচ্ছে না। মূলত এজি অফিসের কারণেই এই বিলম্ব, মাউশির কারণে নয়।‘ 

আর মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ছাড়ের সব কাজ শেষ হয়েছে। আগামী রোববার নাগাদ বেতন-ভাতার চেক ব্যাংকে জমা দেওয়া হবে।‘ এটা নিয়ে শিক্ষকদের দুশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দেন তিনি।


আরও পড়ুন

×