ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১০৬, অধিকাংশ কিশোর

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৩ | ১৫:১২ | আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৩ | ১৫:১২
ঈদুল আজহার আগে-পরে ১৫ দিনে ৩০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৪ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১১৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১০৬ জনের। অর্থাৎ দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশে ও নিহতের ৩২ দশমিক ৭১ শতাংশে মোটরসাইকেলের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। মোটরসাইকেলে নিহত ৫২ দশমিক ৮৩ শতাংশের বয়স ছিল ১৪ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।
শুক্রবার প্রকাশিত রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য এসেছে।
সংগঠনটি জানায়, ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের সই করা এই প্রতিবেদনে ২৩ জুন থেকে ৭ জুলাইয়ের দুর্ঘটনার তথ্য রয়েছে। একই সময়ে নৌদুর্ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রেলপথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ২৩ জনের।
১৮ বছরের কম বয়সীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার সুযোগ নেই। তারপরও দেখা যাচ্ছে বিপুল সংখ্যক কিশোর তরুণ মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছে।
সাইদুর রহমান বলেছেন, গতির নেশা তৈরি করে তরুণদের প্রলুব্ধ করছে মোটরসাইকেল কোম্পানিগুলো। এ প্রচারণা থামাতে হবে তরুণ প্রাণ রক্ষায়।
গত ৮ জুলাই প্রকাশিত যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঈদযাত্রার ১৫ দিনে ২৭৭ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৯৯ জন।
সব প্রতিবেদনে আসছে, মোটরসাইকেলই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। রোড সেফটির হিসাবে ৭ জুলাই সর্বোচ্চ ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি সংস্থা বিআরটিএ’র হিসাবে ওইদিন নিহত হয়েছেন ৩৭ জন।
রোড সেইফটির হিসাবে, ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান দুর্ঘটনায় ৭০ জন নিহত হয়েছেন। নসিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্রায় দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১১ জনের। সর্বোচ্চ ১৪৯টি বা ৪৯ দশমিক ১৭ শতাংশ দুর্ঘটনা হয়েছেন যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৫৯১টি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১২২টি মোটরসাইকেল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১৮টি ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান। এসব যানবাহনের মহাসড়কে চলাচলের অনুমতি না থাকলেও দাপিয়ে চলছে। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্তা ছিল ৫২টি নসিমন-ভটভটি-টমটম- মাহিন্দ্রা, লাটাহাম্বা-স্টিয়ারিং গাড়ির মতো স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত যানবাহনের। এগুলোর চলাচল নিষিদ্ধ। বন্ধে রয়েছে হাইকোর্টের রায়।
রোড সেফটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঈদযাত্রায় সবচেয়ে দুর্ঘটনা হয়েছে ঢাকা বিভাগে, ৯৩টি। প্রাণ গেছে ৯৯ জনের। একক জেলা হিসাবে টাঙ্গাইলে সর্বোচ্চ ১৯ দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন। এবারের ঈদযাত্রায় প্রতিদিন গড়ে ২১ দশমিক ৬ জনের প্রাণ গেছে। গত বছরে এই সংখ্যা ছিল ২৫ দশমিক ৯১ জন। আগের বছরের তুলনায় প্রাণহানি কমেছে ১৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, মন্ত্রণালয় এবং বিআরটিএ’র তৎপরতায় তা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী ঈদের আগে শুধু যমুনার বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় যানজটের ভোগান্তি ছিল। কিন্তু ঈদের পর নজরদারি কমায় ফিরতি যাত্রায় দুর্ঘটনা ও যানজট বেশি ছিল। দুর্ঘটনার ১০টি কারণ চিহ্নিত করে প্রতিরোধে ১৩ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।
- বিষয় :
- সড়ক দুর্ঘটনা
- নিতহ
- মোটরসাইকেল