ঢাকা শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

বিএনপি নেতা টুকুকে আত্মসমর্পনের নির্দেশ

বিএনপি নেতা টুকুকে আত্মসমর্পনের নির্দেশ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৩ | ১৩:৪৭ | আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৩ | ১৩:৪৭

দুর্নীতির মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওযা রায়ের পুর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে। ২৭৩ পৃষ্ঠার রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েব সাইটে বুধবার প্রকাশ করা হয়। বিষয়টি সমকালকে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে গত ৩০ মে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেছিলেন। 

প্রকাশিত পুর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, এ রায় বিচারিক আদালত গ্রহণের পর ১৫ দিনের মধ্যে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, রাজনীতিবিদরা দুর্নীতিতে লিপ্ত হলে পুরো সমাজ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। তাছাড়া রাজনীতিবিদরা রক্ষক হয়ে ভক্ষক হওয়া ঠিক নয়।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিতে হবে। অনেক রাজনৈতিক নেতা এবং হাইপ্রোফাইল ব্যক্তি বিভিন্ন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। রাজনীতিবিদরা জনগণ ও দেশের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার লক্ষ্যে রাজনীতিতে জড়িত হন। এটি জনগণ ও দেশের কল্যাণের জন্য এক ধরনের মহান ত্যাগ ও নিষ্ঠার কাজ। রাজনীতি টাকা উপার্জনের কোনো মাধ্যম হতে পারে না। বৈধ ব্যবসা এবং অন্যান্য পেশার আশ্রয় নিয়ে অর্থ ও সম্পত্তি অর্জনের অনেক উপায় রয়েছে।

আদালত বলেন, দুর্নীতি সমস্ত লিঙ্গ, বয়স এবং বর্ণের মানুষকে প্রভাবিত করে এবং এটি দরিদ্র এবং দুর্বল গোষ্ঠীকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করে। দেশের জনগণ বিশেষ করে দায়িত্বশীল স্টেকহোল্ডারদের একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত, যে তারা কেবল দুর্নীতির শিকারই নয়, এর বিরুদ্ধে সংগ্রামের মূল খেলোয়াড়ও।

দুর্নীতিবাজরা তাদের সমালোচকদের চুপ করতে এবং চুরি করা সম্পদ লুকানোর জন্য একে অপরকে সাহায্য করে। তাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করার সময় এসেছে।

হাইকোর্ট বলেন, আপনি যদি বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চান, তাহলে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনার জন্য একটি কার্যকর ও শক্তিশালী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। হিসাব দেওয়ার দায়িত্ব থাকতে হবে এবং আইনের বিধান অনুসরণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাল্যকাল থেকেই শিশুদের সততা এবং অসততার মধ্যে পার্থক্য করতে শেখানো উচিত বলে রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়েছে।

আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। টুকুর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, আইনজীবী সাইফুল্লাহ মামুন ও মামুন চৌধুরী।

চার কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার ৯১৬ টাকার সম্পদের হিসাব ও আয়ের উৎস গোপন করার অভিযোগে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ বিএনপি দলীয় সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী টুকুর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় এ মামলা করে দুদক। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত এ মামলার রায়ে টুকুকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন বিশেষ আদালত। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১১ সালের ১৬ জুন তাকে খালাস দেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি খালাসের রায় বাতিল করে পুন:শুনানির আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এই রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করলে তা খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এরপর হাইকোর্ট বিভাগে আপিলের পুন:শুনানি শেষে ৩০ মে রায় দেন হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন

×