ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠক

শক্তি প্রয়োগে কুকি-চিন নির্মূলের সুপারিশ

শক্তি প্রয়োগে কুকি-চিন নির্মূলের সুপারিশ

জাতীয় সংসদ ভবনে শান্তি কমিটির বৈঠক অুনষ্ঠিত হয়

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০

কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে (কেএনএফ) দমনে আরও কঠোর হওয়ার সুপারিশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটি। কেএনএফকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে কমিটি বলেছে, তাদের সঙ্গে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। শক্তি প্রয়োগই একমাত্র পথ বলে মনে করছে কমিটি।

রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে কমিটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। এতে কমিটির সদস্য জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) ও কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা অংশ নেন। এ ছাড়া বিশেষ আমন্ত্রণে বাসন্তী চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য গৌতম কুমার চাকমা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে কমিটির পক্ষ থেকে কেএনএফের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বলা হয়েছে। একাধিক সূত্র জানায়, বৈঠকে কেএনএফের কর্মকাণ্ডসহ পার্বত্য অঞ্চলের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় কেএনএফকে যে কোনো মূল্যে দমনের সুপারিশ করা হয়। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে বৈঠকে বলা হয়, তারা রাজনৈতিক দল হলে রাজনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধান করা হতো। সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে তাদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ বলেন, কেএনএফ পাহাড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। কমিটি তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছে। কারণ যতই দিন যাচ্ছে, তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা ততই বেড়ে চলছে। তারা পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি বিনষ্টের চেষ্টা চালাচ্ছে।

কেএনএফ পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি নিষিদ্ধ সংগঠন। ২০১৭ সালে নাথান বম প্রতিষ্ঠিত কেএনএফ রাঙামাটি এবং বান্দরবান জেলার ৯টি উপজেলা নিয়ে বম জনগণের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টায় লিপ্ত। গত দুই বছরে তারা ওই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। তারা বিভিন্ন সময় সেনাসদস্যসহ বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে।

বৈঠকে জানানো হয়, তিন পার্বত্য জেলার সরকারি দপ্তরগুলো পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তরের কাজ সফলভাবে এগিয়ে চলছে। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে রাঙামাটি জেলা পরিষদে ৩০, খাগড়াছড়িতে ২৯ ও বান্দরবানে ২৮টি বিভাগ ও দপ্তর হস্তান্তরিত হয়েছে। এতে পার্বত্যবাসী সরকারি সেবা কার্যক্রমের সুফল পাচ্ছে। এ কার্যক্রমকে অধিকতর ফলপ্রসূ করতে সভায় একটি কমিটি গঠন করা হয়। সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির কার্যক্রম গতিশীল করতে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ জনবল কাঠামো বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়।

সভায় পার্বত্য অঞ্চলের সেনাবাহিনীর প্রত্যাহার করা ২৪০টি ক্যাম্পের ৩০টিতে পুলিশ মোতায়েন করার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় আরও জানানো হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বিধিমালা-২০১৯ দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রণয়নের জন্য শিগগির ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। বৈঠকে পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করা হয়। পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলা, পর্যটন শিল্প ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে এগিয়ে নিতে সভায় ঐকমত্য পোষণ করা হয়।

আরও পড়ুন

×