যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালিস ওয়েলস কক্সবাজারের টেকনাফের শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরির্দশন করেছেন। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার সঙ্গে ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন শামলাপুর রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প ঘুরে দেখেন অ্যালিস ওয়েলস।

এ সময় তিনি ইউনিসেফের সহায়তায় কোডেক পরিচালিত রোহিঙ্গা শিশুদের স্কুলে সময় কাটান এবং তাদের ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা শোনেন। শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধি ও সিনিয়র সহকারী সচিব (শামলাপুর) ক্যাম্প ইনচার্জ পুলক কান্তি চক্রবর্তী এসব তথ্য জানান।

জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ একটি প্রতিনিধি দল টেকনাফ শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছে। এরপর তারা রোহিঙ্গা শিশুদের স্কুল ঘুরে দেখেন এবং শিশুদের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেন। এ সময় অ্যালিস ওয়েলস রোহিঙ্গা শিশুদের কাছে জানতে চান, কোন বিষয় পড়তে ভালো লাগে। জবাবে কেউ ইংরেজি, কেউ গণিত, আবার অনেকে নিজ দেশের ভাষা বার্মিজ পড়তে বেশি ভালো লাগে বলে জানায়। অন্য এক প্রশ্নে ভবিষ্যতে কেউ ডাক্তার, কেউ শিক্ষক, কেউ সমাজসেবক হতে চায় বলে জানায়। পরে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত শামলাপুর ত্যাগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা ও এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিরা।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালিস ওয়েলস ও রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার দুপুরে কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মাহবুব আলম তালুকদারের সঙ্গে তার কার্যালয়ে বৈঠক করেন। এ সময় রোহিঙ্গা ইস্যুতে বর্তমান পরিস্থিতি ও সার্বিক অবস্থা তাদের অবহিত করা হয়।

মিয়ানমারের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা যথেষ্ট নয়: বনি গ্লিক যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএস এইডের উপ-প্রশাসক বনি গ্লিক বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর এই সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সবসময়ই তৎপর। তবে আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ যে, তারা মিয়ানমার থেকে নির্যাতিত হয়ে পালিয়ে আসা ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। দুপুরে রোহিঙ্গাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের পরিস্থিতি দেখে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমার সরকারের প্রতি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। এখন স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর ধারাবাহিক চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয়দের ক্ষতি কমিয়ে আনতেও আমরা কাজ করছি।

বনি গ্লিকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলটি প্রথমে কক্সবাজারে বেসরকারি সংস্থা ইপশার কার্যালয়ে যায়। সেখানে মানব পাচারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে। এরপর যায় রামু উপজেলার রাজারকুল এলাকায়। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কথা বলেন তারা।