- বাংলাদেশ
- প্রয়োজন ছাড়া প্রসূতির সিজারে কেন ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ নয়
হাইকোর্টের রুল
প্রয়োজন ছাড়া প্রসূতির সিজারে কেন ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ নয়

ফাইল ছবি
প্রয়োজন ছাড়া লক্ষ্মীপুরের এক প্রসূতি নারীকে অস্ত্রোপচারের (সিজার) ঘটনায় ওই নারীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে ওই প্রসূতি নারীকে ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে অভিযুক্ত নোয়াখালীর ট্রাস্টওয়ান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্নিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ চিকিৎসা অবহেলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তাও রুলে জানাতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই রুল জারি করেন। আগামি চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ মোট ১২২ জন বিবাদীকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী মো. জেআর খান রবিন ও শাম্মী আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার গোরারবাগ গ্রামের জামাল হোসেন বিপুর মেয়ে রিমা সুলতানা নিপার পক্ষে গত বছরের ২১ নভেম্বর আইনজীবী জে আর খান রবিন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। রিটে বলা হয়, রিমা সুলতানা নিপা গত ৮ জুন সন্তান প্রসাবের বেদনায় নোয়াখালীর ট্রাস্ট ওয়ান হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তখন জানায়, রোগীর সিজার বাধ্যতামূলক। পরদিন ৯ জুন চিকিৎসকের পরামর্শে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। যদিও আল্ট্রাসনোগ্রাম প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রসূতির জটিলতা ছিল না, এমনকি অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন ছিল না। গত ১২ জুন প্রসূতিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিলে তিনি বাড়িতে ফিরে যান। এরপর প্রসূতির শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়লে ১৪ জুন তাকে আবার একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার সেলাইয়ের জায়গায় ক্ষত দেখা দেয়। এ পর্যায়ে চিকিৎসকরা নিপার সেলাইতে ক্ষতের বিষয়টি স্বীকার করেন। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্নিষ্ট ডাক্তারকে বিষয়টি জানানো হলে তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, বরং প্রসূতির বাবার অনুরোধে অন্য হাসপাতালের দুজন চিকিৎসককে নিয়ে আসেন। পরে ওই চিকিৎসকরা এবং সিজারকারী ডাক্তার আয়েশা মজুমদার প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় রাজধানীর বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। গত ২০ জুন বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি পর দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। বিআরবি হাসপাতালে সুস্থ হন প্রসূতি। এরপর বিআরবি হাসপাতালের চিকিৎকরা সুপারিশে বলেন, তার প্রথম অস্ত্রোপচার দরকার ছিল না। এ প্রেক্ষিতে সবমিলিয়ে প্রসূতির চিকিৎসায় তার পরিবারের ব্যয় হয় ৫ লাখ টাকা। সঙ্গে ক্ষতিপূরণ ২০ লাখ টাকাসহ মোট ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ট্রাস্ট ওয়ান হাসপাতালের বিরুদ্ধে রিটটি করা হয়।
মন্তব্য করুন