ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের উত্তাপ ছড়িয়েছে সংসদের বৈঠকেও। এ নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে কিনা তা নিয়ে সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছিলেন বিএনপিদলীয় সদস্য হারুনুর রশীদ। তার বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ বক্তব্য দিলেও তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তিনি।

পরে আওয়ামী লীগের সদস্যদের বিরুদ্ধে অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ তুলে একাদশ সংসদ থেকে প্রথমবারের মতো ওয়াকআউট করেন বিএনপির সদস্যরা। তবে এসব বিষয়ে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্যরা ছিলেন নিশ্চুপ।

মঙ্গলবার মাগরিবের নামাজের বিরতির পর সংসদের বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনার একপর্যায়ে এমন ঘটনা ঘটে।

হারুনুর রশীদ প্রশ্ন রেখে বলেন, এ নির্বাচন কি আসলেই হবে? এতে কি জনগণ ভোট দিতে পারবে? এ নির্বাচনের পরিবেশ কি সরকার নিশ্চিত করতে পারবে? এ বিষয়ে দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে উত্তর পেতে চাই। সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা এবং নির্বাচন নিয়ে যে সহিংসতা চলছে তা বন্ধের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সংসদে প্রধানমন্ত্রী নেই। শতকরা নব্বই ভাগ মন্ত্রী অনুপস্থিত। আমাদের এ কথাগুলো কে শুনবেন, কে জবাব দেবেন।

হারুনুর রশীদের বক্তব্যের পর সরকার দলের সিনিয়র সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, ঢাকা সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইবেন না। তবে তারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রাজনৈতিক বক্তব্য দেবেন। তিনি বলেন, যতক্ষণ বিএনপি না জেতে, ততক্ষণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় না। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর খালেদা জিয়া বলেছিলেন আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না। কিন্তু দেখা গেল ২০০৮ সালে বিএনপিই ৩০টি সিট পেয়েছিল। এই আওয়ামী লীগের আমলেই বিএনপি ৫টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিল।

বিদ্যমান আচরণবিধির সমালোচনা করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমরা সংসদ সদস্যরা কি সুবিধাভোগী। আমরা কি অফিস হোল্ড করি? তাহলে কেন আমরা প্রচারে নামতে পারব না। আমি মন্ত্রী ছিলাম, এখন এমপি; এটা আমার অপরাধ। বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ কি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নন? তিনি মন্ত্রী ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। উপরাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। তিনি গুরুত্বপূর্ণ নন। গুরুত্বপূর্ণ হলাম আমি, শেখ সেলিম।

আওয়ামী লীগের আরেক সিনিয়র সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, বিএনপি সব সময় নেগেটিভ নির্বাচন ও নেগেটিভ পলিটিকস করে আসছে। তারা ক্ষমতায় আসার জন্য অন্য পথ অবলম্বনের চেষ্টা করে। তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে। এর মধ্য দিয়ে তারা রাজনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রাজনৈতিক অপশক্তির ওপর আশ্রয় করে। রাজনীতি বিরোধী হিসেবেই তাদের জন্ম।

তরীকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী আচরণবিধির সমালোচনা করে বলেন, ধর্মীয় সভা নাকি করা যাবে না। আমি আগামীকাল থেকে দুই সিটিতে মিলাদ মাহফিল করব; আমাদের প্রার্থীদের জন্য দোয়া করব। দেখি আমাকে কে ঠেকায়?