রাজধানীর শাহজাহানপুর রেল কলোনিতে পরিত্যক্ত পানির পাম্পে পড়ে মারা যাওয়া শিশু জিহাদের মামলায় চার আসামির সাজার রায় বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও বিচারপতি এস. এম আব্দুল মবিন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেন।

সাজা বাতিল হওয়া চারজন হলেন- শাহজাহানপুর রেল কলোনিতে পানির পাম্প বসানোর প্রকল্প পরিচালক রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেএসআরের মালিক প্রকৌশলী আব্দুস সালাম ওরফে শফিকুল ইসলাম, কমলাপুর রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন ও ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার জাফর আহমেদ শাকির।

আদালতে আসামিদেরপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, এসএম শাহজাহান, এম সারোয়ার আহমেদ, আনোয়ারুল ইসলাম শাহীন ও এম আলী মর্তুজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আমিনুল ইসলাম।

২০১৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত এক রায়ে শিশু জিহাদের মামলায় চার আসামিকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি তাদের ২ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ বছর করে কারাদণ্ডাদেশও দেওয়া হয়।

ওই রায়ে খালাস পান মামলার অপর দুই আসামি। বিচারিক আদালতের ওই রায়ের পর দণ্ডিত চার আসামি হাইকোর্টে আপিল করেন। বুধবার ওই আপিলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট।


২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুরে বাসার কাছে রেলওয়ে মাঠের পাম্পের পাইপে পড়ে যায় জিহাদ। প্রায় ২৩ ঘণ্টা শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের পর ২৭ ডিসেম্বর বিকেল তিনটার দিকে জিহাদকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহত জিহাদের বাবা নাসির ফকির ফৌজদারি আইনের ৩০৪/ক ধারায় 'দায়িত্বে অবেহেলায়' জিহাদের মৃত্যুর অভিযোগে শাহজাহানপুর থানায় মামলা করেন। ২০১৬ সালের ০৪ অক্টোবর আলোচিত এ মামলায় ৬ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন আদালত। যার ধারাবাহিকতায় পরে ২০১৭ সালে ২৬ ফেব্রুয়ারি চার আসামিকে সাজার রায় দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত।

এদিকে ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর জিহাদের পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে 'চিল্ড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। পরে উচ্চ আদালতের চূড়ান্ত নির্দেশনা অনুসারে ২০১৮ সালের ১২ আগষ্ট জিহাদের পরিবারকে ২০ লাখ ক্ষতিপূরণ দেয় ফায়ার সার্ভিস ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।