ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রতিরোধ নয়, স্বাগত জানাতে আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দিল্লিতে সহিংসতার জন্য মোদিকে দায়ী করে যারা তার বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করছেন তাদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিরোধিতা করা উচিৎ হচ্ছে না। মুজিববর্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানো উচিত।

সোমবার সচিবালয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ও ঢাকয় নিযুক্ত দেশটির হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাসকে পাশে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানের যোগ দিতে আগামী ১৭ মার্চ ঢাকায় আসার কথা রয়েছে নরেন্দ্র মোদির। তার সফরের প্রস্তুতি হিসেবে ঢাকায় এসেছেন শ্রিংলা। তিনি গত বছর পর্যন্ত ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন।

বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে (সিএএ) বিতর্কিত ও সাম্প্রদায়িক বললেও হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার দাবি এতে বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণ নেই। সিএএ নিয়ে দিল্লির সহিংসতার বিষয়ে তিনি বলেছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) হালনাগাদে ১৯ লাখ মানুষের নাম বাদ পড়েছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতারা তাদের অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি বলছেন। তবে ওবায়দুল কাদেরের পাশে বসে শ্রিংলা বলছেন, এনআরসির বিষয়টি বাংলাদেশের জনগণের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে মুসলিম বিরোধী সহিংসতার কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন দল ও সংগঠন মোদিকে দাঙ্গাবাজা আখ্যা দিয়ে তাকে মুজিবর্ষে আমন্ত্রণ না জানানোর দাবি তুলেছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিহতের ডাকে সরকার বিব্রত নয় বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। বিরোধিতাকারীদের বিষয়ে সরকারের অবস্থান সম্পর্কে তিনি বলেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতের লোকজন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। অনেকে ধর্মীয়ভাবেও বিষয়টি দেখছেনন। তবে এ নিয়ে ভারত উদ্বেগ জানায়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

দিল্লি সহিংসতার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রতিবেশীর ঘরে আগুন লাগলে পাশের ঘরে আঁচ অবশ্যই যায়। বাংলাদেশের মানুষ বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িকভাবে দেখেননি। দিল্লির মানুষও তাই করেছেন। সেখানে মুসলমানরা যখন বিপদে পড়েছেন, তখন অনেক হিন্দু মুসলমানদের মসজিদ রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছে।

মোদিকে বাদ দিয়ে ভারতের অন্য কোনো রাজনীতিককে মুজিববের্ষর অতিথির করার দাবির প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মোদি আসছেন মুজিববর্ষ উপলক্ষে, সম্মানিত অতিথি হয়ে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রধান মিত্র দেশের প্রতিনিধি হিসেবে আসছেন। যারা বিরোধিতা করছেন, তাদের করা উচিৎ হচ্ছে না। মুজিববর্ষকে সামনে রেখে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানো উচিত।

মোদির নিরাপত্তাকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ১৭ মার্চ মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বসবেন মোদি। দুই দেশের মধ্যে অমিমাংসিত ইস্যুর সমাধানে সেখানে অগ্রগতি হবে বলে আশাবাদী তিনি।

শ্রিংলা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। বাংলাদেশ ও ভারতের উন্নয়ন এক সূত্রে বাঁধা। বাংলাদেশের উন্নতি মানেই, ভারতের উন্নতি।