- বাংলাদেশ
- করোনা চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালে প্রস্তুতি নেই
করোনা চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালে প্রস্তুতি নেই

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নির্ধারিত বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালগুলো এখন পর্যণ্ত কোনো প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি।
রাজধানীর শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি। কারো কারো ক্ষেত্রে এই রোগের চিকিৎসায় অনাগ্রহও দেখা গেছে। তারা যুক্তি হিসেবে অন্য রোগীদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের অভাবের কথা বলছেন।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ভেন্টিলেশন সিস্টেমের কারণে তাদের পক্ষে করোনা রোগীর জন্য আইসোলেশন ইউনিট করা সম্ভব হবে না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
বেসরকারি আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী সমকালকে জানান, করোনা রোগী ডেঙ্গু বা অন্য রোগীর মতো নয়, এটা মারাত্মক সংক্রমক। করোনা আক্রান্তদের পুরোপুরি আইসোলেটেড রাখতে হয়। এ কারণে এ ধরনের কোনো রোগী সন্দেহ হলে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান- আইইডিসিআরে যোগাযোগের নির্দেশ দেওয়া আছে।
তিনি বলেন, ‘নিয়মিতই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর যোগাযোগ হচ্ছে। সেখান থেকে পাওয়া নির্দেশ অনুযায়ীই আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি।’
তিনি জানান, করোনা প্রতিরোধে কী করণীয় তা নিয়ে প্রতিনিয়তই তারা সেমিনার করছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সতর্কতামূলক পরামর্শ দিচ্ছেন।
বেসরকারি হাসপাতাল ল্যাবএইডের দায়িত্বশীল একজন জানান, এ হাসপাতালে করোনা রোগীর উপযোগী একটিমাত্র আইসোলেশন বেড রয়েছে।কিন্তু সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, করোনা উপসর্গ নিয়ে এখানে কোনো রোগী এলে আইইডিসিআরে যোগাযোগের নির্দেশ রয়েছে। রোগীকে কোথায় রাখা হবে সে সিদ্ধান্তও দেবে আইইডিসিআর। এখন পর্যন্ত এ হাসপাতালে শুধু করোনা রোগীদের জন্য আলাদাভাবে আইসোলেশন ওয়ার্ড নেই। তবে সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে।
অ্যাপেলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালে সব রকমের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সে অনুযায়ী কাজ করছে এ হাসপাতাল।
এ হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ড. আরিফ মাহমুদ জানান, দেশে জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালও একইভাবে কাজ করে-এটাই স্বাভাবিক। ডেঙ্গুর সময়ও তাই হয়েছে। তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার যা নির্দেশ দেবে সে অনুযায়ী আমাদের হাসপাতালও কাজ করবে।’
একই চিত্র বেসরকারি ইউনাইটেড হসপিটাল ও স্কয়ার হসপিটালেরও।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহজনক রোগীদের জন্য রেফারন্স হাসপাতাল হিসেবে দেশের কয়েকটি হাসপাতাল নির্দিষ্ট রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল। হাসপাতালগুলো সোমবার থেকে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে আরও কয়েকজনকে।
মন্তব্য করুন