- বাংলাদেশ
- উৎপাদনে এক হাজার পোশাক কারখানা
কাজ চলছে দুই শিফটে, মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রলালয়ে বৈঠক
উৎপাদনে এক হাজার পোশাক কারখানা

তাপমাত্রা মেপে শ্রমিকদের কারখানায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে
করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তৈরি পোশাক কারখানা চালুর দ্বিতীয় দিনে সোমবার নতুন আরও কিছু কারখানা উৎপাদনে ফিরেছে। সোমবার অন্তত এক হাজার কারখানায় সীমিত জনবল দিয়ে কাজ হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার স্বার্থে দুই শিফটে কাজ চলছে। প্রতি শিফটে ৩০ শতাংশ শ্রমিক কাজ করছে। তবে বকেয়ার দাবি এবং বিভিন্ন কারণে শ্রমিকরা কাজ করতে রাজি না হওয়ায় কয়েকটি কারখানায় বিশৃঙ্খলা হয়েছে। অন্যদিকে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমই এর নিষেধ থাকার পর সোমবারও সারাদেশ থেকে শ্রমিকদের সাভার ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন শিল্প এলাকায় ফিরতে দেখা গেছে।
এ দিকে করোনভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর উদ্যোগের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্থনৈতিক কার্যক্রম কতটুকু চালু করা যায়, তার ওপর সব পক্ষের মতামত নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার এ বিষয়ে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পের উদ্যোক্তা, শ্রমিক প্রতিনিধি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। চালু প্রায় সব কারখানায় শ্রমিকদের হাত ধোয়ার অস্থায়ী কলের ব্যবস্থা দ্বিগুন করা হয়েছে। নিরাপদ দূরত্ব মেনে শ্রমিকদের কারখানায় ঢোকানো হচ্ছে । কারখানার ভেতরেও একইভাবে দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিজিএমই এর গাইড লাইন কঠোরভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে। গাইড লাইনে কারখানায় প্রবেশ মুখে শ্রমিকদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা, কারখানা ভবনের বাইরে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা জুতায় জীবাণুনাশক স্প্রে করাসহ বিভিন্ন নিয়ম মানার কথা বলা হয়েছে। পরিচ্ছন্নতার স্বার্থে কারখানায় প্রবেশের আগে জুতা পলিব্যাগে রেখে একটি নির্দিষ্ট স্থানে (সু র্যাক) রাখা হচ্ছে। এসব স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে কিনা তা তদারক করতে মনিটরিং টিম গঠন করেছে বিজিএমইএ।
কারখানার আশে পাশে থাকা শ্রমিকদের নিয়ে সীমিত আকারে গত রোববার থেকে কিছু কারখানা চালু করা হয়। ক্রেতাদের রপ্তানি আদেশের পণ্য পৌঁছানোর চাপ আছে-এ রকম কারখানা এ অবস্থার মধ্যে খুলে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ।
আশুলিয়া এলাকায় শারমীন গ্রুপের বেশ কয়েকটি তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে । শারমীন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল হোসেন সমকালকে বলেন, কারখানায় প্রবেশের ক্ষেত্রে গোল নিরাপত্তা চিহ্ন দিয়ে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হচ্ছে। কর্মকর্তাদের পিপিইসহ শ্রমিকদের সব স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা রেখেই কারখানা খুলেছেন তিনি। দুই শিফটে কাজ চলছে তার কারখানায়। প্রতি শিফটে ৩০ শতাংশ শ্রমিক কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
বিজিএমইএ এবং শ্রম মন্ত্রণালয়ের যৌথ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কারখানা খোলার ক্ষেত্রে শুরুতে উৎপাদন ক্ষমতার ৩০ শতাংশ চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা বাড়ানো হবে। তবে রপ্তানি আদেশের কাজ না থাকা কিংবা কম থাকা কারখানাগুলো সরকারি সাধারণ ছুটির সঙ্গে মিল রেখে আগামী ৫ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শিল্পাঞ্চল পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত বিজিএমইএ এর সদস্যভূক্ত কারখানা খুলেছে ৭১৮টি । আগের দিন খোলার তালিকায় ছিল ৪৮০টি। বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ ও বেপজার কারখানা মিলে এক হাজার কারখানা খুলেছে। বেতনভাতাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অন্তত ২৯টি কারখানায় শ্রম অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বেতনভাতা ইস্যুতে ১৮টি কারখানায় এবং অন্যান্য ইস্যুতে আরো ১১টি কারখানায় বিক্ষোভ হয়েছে।
মন্তব্য করুন