দেশের উপকূলীয় জনপদের সর্বত্র ক্ষতচিহ্নি রেখে গেছে মহাঘূর্ণিঝড় আম্পান। বুধবার সন্ধ্যায় প্রথম আঘাতের পর আম্পান রাতভর তার ভয়াল থাবা নিয়ে যেখান দিয়ে অতিক্রম করেছে, যেসব অঞ্চল লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে। বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও ধ্বংস হয়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি, ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের, রাস্তাঘাট, পোলট্রি ফার্ম, গরুর খামারসহ বিভিন্ন স্থাপনা। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় ১১ জেলায়। অল্পবিস্তর ক্ষতি হয়েছে আরও ১৪ জেলায়। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শিশুসহ ১৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে যশোরে ছয়জন, সাতক্ষীরায় দু'জন, ভোলায় দু'জন, পিরোজপুরে দু'জন, পটুয়াখালীতে তিনজন এবং চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ, সিরাজগঞ্জ ও চাঁদপুরে একজন করে রয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই মারা গেছেন গাছচাপা পড়ে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সাতজনের প্রাণহানির খবর নিশ্চিত করেছে। গতকাল বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান আরও জানান, আম্পানে প্রাথমিক ক্ষতি এক হাজার ১০০ কোটি টাকা।

সমকালের ব্যুরো, অফিস ও জেলা-উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর- সাতক্ষীরা :শ্যামনগর, কালীগঞ্জ, আশাশুনি ও সদর উপজেলায় ২৫টি স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধ ভেঙে ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু শ্যামনগরেই প্লাবিত হয়েছে ২৫টি গ্রাম। অসংখ্য মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শ্যামনগরের সঙ্গে সাতক্ষীরা জেলা শহর বিচ্ছিন্ন রয়েছে। রাস্তায় পড়ে আছে অসংখ্য গাছ। বিধ্বস্ত হয়েছে পাঁচশ' থেকে সাতশ' কাঁচা ঘরবাড়ি। সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে সদরের শহরের বাঁকাল এলাকায় শামসুর রহমান (৫৫) ও কামালনগর সঙ্গীতা মোড়ে করিমননেছা (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

যশোর : বুধবার মধ্যরাত ১২টার পর যশোরের ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ১৩৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ে অধিকাংশ কাঁচা ঘরবাড়ি মাটিতে মিশে গেছে। গাছপালা উপড়ে গেছে। ভাঙা গাছ রাস্তায় রাস্তায় পড়ে যশোরের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল গতকাল পর্যন্ত। জেলার সব এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ট্রান্সফরমারসহ বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে।

এদিকে চৌগাছায় গাছচাপা পড়ে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন পৌরসভার হুদো চৌগাছা এলাকার ওয়াজেদ হোসেনের স্ত্রী চায়না বেগম (৪৫) ও মেয়ে রাবেয়া খাতুন (১৩)। এ ছাড়া গাছচাপা পড়ে শার্শা উপজেলার মালোপাড়ার সুশীল বিশ্বাসের ছেলে গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস, গোগা পশ্চিমপাড়ার শাহজাহানের স্ত্রী ময়না খাতুন (৪০), বাগআঁচড়া জামতলা এলাকার টেংরা গ্রামের আবদুল গফুর পলাশের ছেলে মুক্তার আলী (৬৫) এবং বাঘারপাড়া উপজেলার দরাজহাট বুদোপাড়া এলাকার সাত্তার মোল্লার স্ত্রী ডলি খাতুন (৪৫) নিহত হয়েছেন। জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, ঝড়ের আগে কৃষক ধান ঘরে তুলতে পারলেও সবজি ও আম-লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে পানের বরজেরও।

খুলনা : কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা ও ডুমুরিয়া উপজেলাসহ খুলনার আনাচে-কানাচে সব স্থানেই আম্পান তার তা ব চিহ্ন রেখে গেছে। কয়রা উপজেলার ১১টি জায়গায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। কয়রা সদর, উত্তর বেদকাশি, দক্ষিণ বেদকাশি ও মহারাজপুর ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছপালা, কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের বাংলোয় শতবর্ষী বটগাছটি ভেঙে পড়েছে।

বাগেরহাট : বিভিন্ন উপজেলার পাউবোর বেড়িবাঁধ, ঘরবাড়ি ও মৎস্য ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি  হয়েছে। পাঁচ সহস্রাধিক মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মোংলা বন্দরের পণ্য ওঠানামাসহ বন্দরের  সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

পাউবোর নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ উদ জামান জানান, স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে ৭-৮ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে শরণখোলা উপজেলায় পাউবোর ৩৫/৩ পোল্ডারের দুইশ' মিটার রিংবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ডুকে পড়েছে। গতকাল সকালে পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ নির্মাণে কাজ শুরু করেছেন তারা।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, কোনো বন্যপ্রাণী মারা যাওয়ার খবর বা বনের গাছপালার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনও পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম : উপকূলীয় সাতটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সন্দ্বীপ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. সালাহউদ্দিন নামে এক তরুণ মারা গেছেন। নগরীর পতেঙ্গা বিচের পাশে থাকা কিছু কাঁচা ঘর লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে আম্পান।

বরিশাল : জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান জানান, জেলায় ২৪ হাজার ৪৮০টি কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। তার মধ্যে ১৬ হাজার ৩২০টি আংশিক ৮ হাজার ৩৬০টি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়।

জলোচ্ছ্বাসে ডুবে মারা গেছে বরগুনার পাথরঘাটার সংরক্ষিত বনের অনেক হরিণ। বৃহস্পতিবার সকালে এরকমই একটি হরিণ মরে পড়ে থাকতে দেখা যায় হরিণঘাটা এলাকায় -সমকাল

বরগুনা : জলোচ্ছ্বাসে বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ডুবে গেছে ওইসব এলাকার ঘরবাড়ি। পানিতে ভেসে গেছে মাছের ঘের, মুগডাল, চিনাবাদাম ও ভুট্টার ক্ষেত। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বুধবার রাতে বরগুনায় সাড়ে ১১ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল, এতে জেলার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৫টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হয়। জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, আম্পানে জেলার ৯ হাজার ৮০০ কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।

ভোলা : চরাঞ্চলগুলো দুই থেকে তিন ফুট পানির নিচে ডুবে যায়। বিশেষ করে ঢালচর, কুকরী-মুকরী এবং মনপুরা উপজেলার বিচ্ছিন্ন চরগুলোতে কয়েকশ' পরিবার পানিবিন্দ হয়ে পড়েছিল। জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। গাছপালা উপড়ে পড়েছে শত শত। বোরহানউদ্দিন উপজেলা সংলগ্ন মেঘনায় ১১ যাত্রীসহ একটি ট্রলার ডুবে গেলে রফিকুল ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবক নিহত হন। এ ছাড়া বুধবার দুপুরে চরফ্যাসন উপজেলার দক্ষিণ আইচা এলাকায় গাছ পড়ে নিহত হন সিদ্দিক ফকির (৭০)। ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক হরগোপাল মধু জানান, জেলায় ৭৬৩ হেক্টর জমির রবিশস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পিরোজপুর : বুধবার সন্ধ্যায় মঠবাড়িয়া উপজেলার পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকায় দেয়ালচাপায় নিহত হন শাহজাহান মোল্লা (৫৫) নামক এক শ্রমিক। এ উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নে দুপাদী গ্রামে পানিতে ডুবে মারা যান গোলেনুর বেগম (৭০) নামের একজন। বুধবার রাতে ওই গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেলে ওই বৃদ্ধ অন্যদের সঙ্গে উঁচু স্থানে যাওয়ার সময় পানির স্রোতের মধ্যে পড়ে ডুবে মারা যান।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল বারী জানান, এ জেলায় ৬ হাজার ৭৫৫টি মাছের ঘের ও পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ৫ হাজার ৫৭৫ জন মৎস্যচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু হেনা মো. জাফর জানান, জেলায় ৩৫৭ হেক্টর জমির বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া গ্রীষ্ফ্মকালীন শাকসবজি, কলা, পান, পেঁপে, মুগ ডাল, চিনাবাদাম, মরিচের ক্ষতি হয়েছে।

পটুয়াখালী : সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালি উপজেলায়। আগুনমুখা, রামনাবাদসহ নদী-তীরবর্তী গ্রামগুলো বুধবার রাতে ৪ থেকে ৫ ফুট জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, কলাপাড়ায় জলোচ্ছ্বাসে ৯০০ মাছের ঘের ডুবে গেছে। কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে ৫ শতাধিক। এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় গলাচিপা উপজেলার পান পট্টিতে গাছের ডাল ভেঙে নিহত হয় শিশু রাসেদ (৬)। এর আগে দুপুরে ঘূর্ণিঝড় সতর্কবার্তা প্রচার করতে গিয়ে কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের ছৈলাবুনিয়া গ্রামে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হয় স্বেচ্ছাসেবী শাহ আলমগীর। ৮ ঘণ্টা পর বুধবার রাত ১০টার দিকে তার লাশ পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইন্দুরকানি উপজেলার উমিতপুর গ্রামে শাহ আলম (৫৫) বুধবার রাতে ঘুম থেকে উঠে ঘরের মধ্যে জোয়ারের পানি দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

বগুড়া :  মাঠে থাকা বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কাটার অপেক্ষায় থাকা জেলার দুপচাঁচিয়া, কাহালু ও শিবগঞ্জ উপজেলা এলাকায় ধানের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জেলায় এবার ১ লাখ ৮৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। ৬০ শতাংশ ধানই কাটা হয়ে গেছে। বাকি যে ৪০ শতাংশ রয়েছে তার কিছু অংশের ক্ষতি হতে পারে।

পাবনা : ভোররাত পর্যন্ত চলা ঝড়ের তাণ্ডবে পাবনার বিভিন্ন এলাকায় ঘরবাড়ি, আম ও লিচু বাগান, গাছপালা, বৈদ্যুতিক লাইন ও দোকানপাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সড়কের অনেক গাছ ঝড়ে উপড়ে পড়ায় অনেক স্থানে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। প্রবল বর্ষণে ডুবে গেছে পাকা বোরো ধান।

সিরাজগঞ্জ : জেলায় গতকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত ঝড়ের পাশাপাশি ভারি বর্ষণ হয়েছে। এতে জেলার বিভিন্ন স্থানে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় গাছপালা উপড়ে গেছে। ভেঙে গেছে বিদ্যুতের খুঁটি। তাড়াশ উপজেলার চলনবিলে পাকা ধান জমিতে নুইয়ে পড়েছে। উল্লাপাড়ায় প্রায় আড়াইশ' হেক্টর জমির পাকা ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। বুধবার রাত ১০টার দিকে ঝড়ের সময় মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে জেলা শহরের বাসিন্দা দেলসাত আলী (৩৮) তিনি ঝড়ের কবলে পড়ে মারা যান।

মেহেরপুর : বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি, ফসল, বৈদুতিক খুঁটি, গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ১৫ ঘণ্টা জেলায় বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট ছিল না। এখন সীমিত আকারে ওইসব সেবা চালু করা হচ্ছে।

নড়াইল : কয়েক হাজার কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি, গাছপালা, বোরা ধান, শাকসবজি, উঠতি আম ও লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার অধিকাংশ এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার পড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। নড়াইল শহরে টানা ২২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না।

রাজবাড়ী : প্রায় সারারাতই চলে আম্পানের তাণ্ডব। ঝড়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ভেঙে বিধ্বস্ত হয়েছে কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার তিন হাজার ৮৬৭ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মাগুরা : জেলা প্রশাসক ড. আশাফুল আলম ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পংকজ কুণ্ডু জানান, ঝড়ে শত শত কাঁচা, আধাপাকা বাড়িঘর, গাছপালা ভেঙে পড়েছে। বিশেষ করে জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল হাজারপুরী লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ শতকোটি টাকা।

নোয়াখালী : হাতিয়ায় কাঁচা ঘরবাড়ি, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ফসলি জমি ও মৎস্য খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে দুই শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিনষ্ট হয়েছে। উপজেলার নিঝুমদ্বীপ, চরঈশ্বর, নলচিরা ও শুখচর ইউনিয়নে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি ঢুকে মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।

চাঁদপুর : গাছচাপায় বুধবার রাতে জান্নাত বেগম (৩৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়নের রাড়িরপুল এলাকার ওহাব গাজীর মেয়ে। স্থানীয়রা জানান, ঝড়ের সময় রাত ২টার দিকে জান্নাত বেগম আম কুড়াতে গেলে গাছের ডাল ভেঙে মাথায় পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।