- বাংলাদেশ
- বিদেশফেরত কর্মীদের অর্ধেকেরই জরুরি সহায়তা প্রয়োজন
বিদেশফেরত কর্মীদের অর্ধেকেরই জরুরি সহায়তা প্রয়োজন

ফাইল ছবি
বিদেশ থেকে আসা কর্মীদের ৪০ শতাংশই দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছে করোনা পরিস্থিতির কারণে। কেউ ফিরেছেন কাজ হারিয়ে। কেউ ফিরেছেন রোজগার বন্ধ হওয়ায়। শুক্রবার ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রকাশিত জরিপে এ তথ্য এসেছে।
‘বিদেশফেরত অভিবাসী কর্মীদের জীবন ও জীবিকার ওপর কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব’ শীর্ষক জরিপে বলা হয়েছে, ফেরত আসা অভিবাসী কর্মীদের ৮৭ শতাংশ এখন পর্যন্ত বেকার। সঞ্চয় দিয়ে তিন মাস বা তার বেশি সময় চলতে পারবেন বিদেশ ফেরত এমন কর্মী রয়েছেন ৩৩ শতাংশ। ৫২ শতাংশ বলছেন, তাদের জরুরি আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।
অনলাইন ব্রিফিংয়ে জরিপ প্রকাশ অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী করোনা সঙ্কট শুরু পর ফেরত আসা কর্মীদের মধ্যে ৫৫৮ জনের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে জরিপ প্রতিবেদন করা হয়েছে। জরিপে অংশ নেওয়া কর্মীরর ৮৬ শতাংশই ফিরেছেন গত মার্চে। তাদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ এসেছেন মধ্যপ্রাচ্য সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন ওমান এবং কুয়েত থেকে। বাকিরা মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইতালি, মালদ্বীপসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরেছেন।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৪০ শতাংশ বলেছেন, করোনার কারণে তারা দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। ৩৫ শতাংশ বলছেনে, তারা ছুটিতে এসে আটকা পড়েছেন। ১৮ শতাংশ বলেছেন, তারা পারিবারিক কারণে চলে এসেছেন। সাত শতাংশ বলেছেন, তাদের ফেরার সঙ্গে করোনার সম্পর্ক নেই। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৮৪ শতাংশ কর্মী জানিয়েছেন, তারা দেশে ফিরে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। দুই শতাংশ এক সপ্তাহ কোরারেন্টাইনে ছিলেন। বাকি ১৪ ঠিকমতো কোয়ারেন্টাইন মানতে পারেননি। ৭৪ শতাংশ কর্মী জানিয়েছেন, তারা এখনো মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও ভীতির মধ্যে রয়েছেন।
জরিপে অংশ নেওয়া অভিবাসী কর্মীদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ জানান, তাদের নিজেদের সঞ্চয় বলতে এখন আর কিছু নেই। ১৯ শতাংশ জানান, তাদের যে সঞ্চয় আছে তা দিয়ে আরও এক-দুই মাস চলতে পারবেন। নিজেদের সঞ্চয় দিয়ে তিন মাস বা তার বেশি সময় চলতে পারবেন এমন সংখ্যা ৩৩ শতাংশ। ১০ শতাংশ জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে তারা ইতোমধ্যেই ঋণ করেছেন।
মোবাইল ফোনে সাক্ষাৎকার গ্রহনের মাধ্যমে পরিচালিত এই জরিপে দেখা যায়, ফেরত আসা অভিবাসীদের শতকরা ৮৪ ভাগ জানান তারা এখনো জীবিকা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা করতে পারেননি। ৬ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা পুনরায় বিদেশ যাওয়ার কথা ভাবছেন। বাকীরা কৃষিভিত্তিক ছোট ব্যবসা, মুদি দোকান বা অন্য কিছু করার পরিকল্পনা করছেন। ৯১ শতাংশ বলেছেন তারা এখনো সরকারি বা বেসরকারি সাহায্য সহযোগিতা পাননি। বাকি ৯ শতাংশ জানান, সামান্য হলেও সহযোগিতা পেয়েছেন।
অভিবাসীদের নানা ধরনের সেবা দিতে ২০০৬ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি। বিদেশ ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণের জন্যও ব্র্যাকের একাধিক উদ্যোগ রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি সাত হাজার ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী ও তার পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা করেছে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচি। কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেছেন, এই করোনা পরিস্থিতিতে মে মাসের ১৯ দিনে ১০৯ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। চলতি বছরে ৫৫ হাজার কোটি টাকা পাঠিয়েছেন। এই সঙ্কটময় সময়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
মন্তব্য করুন