সাক্ষাৎকার : মোহাম্মদ আলী মিয়া
মহৎ পেশা কলুষিত করা সবাই আইনের আওতায় আসবে
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ | ০৬:০৯
ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে যে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়েছিলেন, তাতে তাদের অভিভাবকরা সহযোগিতা করেছিলেন। চিকিৎসাব্যবস্থাকে কলুষিত করতে কোচিং সেন্টারের আড়ালে যেসব ডাক্তার ও অন্য পেশার লোকজন এটা করেছেন, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্নে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছেন, তাদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে। চক্রের যারা দেশের বাইরে চলে গেছেন, তাদেরও ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হবে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।
সিআইডিপ্রধান আরও বলেন, সাধারণত ভালো শিক্ষার্থীরা মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে লেখাপড়া করেন। তবে আমরা দেখছি, ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে এমন অনেকে ভর্তি হয়েছেন, তাদের একাডেমিক ফল ভালো ছিল না। এরপর টেনেটুনে পাস করে তারা চিকিৎসক হয়েছেন। এ ধরনের ডাক্তারের মাধ্যমে রোগীর ভুল চিকিৎসার শঙ্কা থাকে। অনেক সময় ভুল চিকিৎসার মাধ্যমে রোগী মারা গেলে স্বজনরা মামলা করেন। এতে ডাক্তার কমিউনিটির একটা দুর্নাম হয়। একটি মহৎ পেশাকে এই ধরনের চিকিৎসকরা কলুষিত করেন। শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নয়, এমন অপরাধ প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসা উচিত। যারা অনৈতিকভাবে ডাক্তার হয়েছেন, তাদের চিকিৎসা সনদ বাতিল হওয়া জরুরি। যাদের শনাক্ত করেছি, তাদের বিএমএ সনদ বাতিলের জন্য চিঠি দেব।
মোহাম্মদ আলী মিয়া আরও বলেন, মেডিকেল প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে চাই। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এভাবে পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অশুভ চিন্তা না করেন। আমরা এই বার্তা শক্তভাবে দিতে চাই, অপরাধ যত আগের হোক না কেন চিহ্নিত হলেই ব্যবস্থা। ২০ বছর আগেও যদি কেউ অপরাধ করে পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে এলে, ফৌজদারি আইনেই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করার বিধান রয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের চক্রে জড়িয়ে এখন তো অনেকে সরকারি চাকরিও হারাবেন।
সিআইডিপ্রধান বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের মতো ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। তদন্ত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এ চক্রের শিকড়ে পৌঁছতে চাই। যত বড় রাঘববোয়াল হোক, কোনো ছাড় পাবে না। আমরা রাঘববোয়ালদের এখন খুঁজছি। অনেকেই এখন আমাদের ফোন করে বলছেন, তাঁর সন্তান মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ভালো প্রস্তুতি নেওয়ার পরও চান্স পাননি। এটা সত্য, প্রশ্ন ফাঁসের কারণে বহু মেধাবী ডাক্তার হওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
- বিষয় :
- প্রশ্নপত্র ফাঁস