- বাংলাদেশ
- দুর্যোগেও বাণিজ্যেই চোখ বেসরকারি হাসপাতালের
করোনা চিকিৎসা
দুর্যোগেও বাণিজ্যেই চোখ বেসরকারি হাসপাতালের

করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ২৩ মে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা সাইফুর রহমান। সুস্থ হওয়ার পর ২ জুন তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পান। কিন্তু হাসপাতাল থেকে তাকে ধরিয়ে দেওয়া হয় বিশাল অঙ্কের একটি বিল। চমকে যান তিনি। হাসপাতালটিতে ১১ দিনে চিকিৎসা ব্যয়ের বিল করা হয় এক লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ টাকা। সাইফুর রহমান সমকালকে বলেন, 'হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার অক্সিজেন কিংবা আইসিইউ সাপোর্ট লাগেনি। কোনো অস্ত্রোপচারও করা হয়নি। হাসপাতাল থেকে দুটি এক্স-রে ও দুবার রক্ত পরীক্ষা করা হয়। ওষুধ হিসেবে তাকে নাপা ও গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট সেবন করতে দেওয়া হয়। এর বাইরে যেসব ওষুধের দেওয়া হয়েছে, তা বাইরে থেকে তিনি নিজে ক্রয় করেছেন। এর পরও এত টাকা বিল কেন!'
হাসপাতাল থেকে দেওয়া সাইফুর রহমানের বিলের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২৩ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত হাসপাতাল বিল বাবদ এক লাখ ১৪ হাজার ৫৭০ টাকা, ইনভেস্টিগেশন বাবদ ১৯ হাজার ৪৭৫ টাকা, চিকিৎসকের ব্যয় বাবদ ১৮ হাজার ৭০০ টাকা, ওষুধের ব্যয় বাবদ ৫ হাজার ২২৬ টাকা ৮৫ পয়সা এবং সার্ভিস চার্জ বাবদ ১২ হাজার ৯০৩ টাকা। সব মিলিয়ে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ টাকা ৮৫ পয়সা। মোট বিল আসে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ টাকা।
শেষ পর্যন্ত সরকারের চাপে মাত্র দু'দিনের বিল রেখে বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে সাইফুর রহমানকে। এই দু'দিনের বিল নেওয়া হয় ৫৪ হাজার ৮৮০ টাকা। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র বলছে, চুক্তি অনুযায়ী ৩১ মে পর্যন্ত চিকিৎসাবাবদ রোগীর কাছ থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো টাকা নিতে পারে না। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এই চুক্তি কার্যকর থাকবে। কিন্তু আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল ৩১ মের পর আর চুক্তি বাড়াতে চায়নি। আবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও তাদের বাধ্য করেনি। এ কারণে সরকারের চাপে ১ ও ২ জুন দু'দিনের বিল রেখে বাকি টাকা রোগীকে ফেরত দেওয়া হয়। রোগী চিকিৎসার নামে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ ধরনের বিলের বিষয়টি নিয়ে সর্বত্রই আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
নাপা ও গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিয়ে সাধারণ ওয়ার্ডে রেখে একজন রোগীকে এত টাকার বিল কীভাবে দেওয়া হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞরাও। তাদের অভিমত, এ ধরনের বিল আদায়ের মাধ্যমে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নগ্ন বাণিজ্যিক চেহারা প্রকাশ পেয়েছে। করোনার এই দুর্যোগে এভাবে বাণিজ্য করা ঠিক না। এটি অন্যায়।
এ পরিস্থিতিতে অনেকে পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে সরকার চাইলে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে রিকুইজিশন করতে পারে। এজন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো পরিচালন ব্যয় দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে সাধারণ জনগণের চিকিৎসার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, মূল্য নির্ধারণ করে যেভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নমুনা পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, একইভাবে চিকিৎসার ক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া যেতে পারে। অন্যথায় সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হবেন।
আদেশ দিয়েই দায়িত্ব শেষ স্বাস্থ্য বিভাগের :করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে চিকিৎসায় যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ লক্ষ্যে গত ২৪ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এক আদেশে ৫০ শয্যা ও এর ওপরে থাকা শয্যা সংখ্যার প্রত্যেকটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে বলা হয়। ওই আদেশে প্রত্যেকটি হাসপাতালকে কভিড ও নন-কভিড জোনে ভাগ করে চিকিৎসা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়। কিন্তু আদেশে করোনার চিকিৎসার সঙ্গে যেসব বেসরকারি হাসপাতাল যুক্ত হবে, সেগুলোর ব্যয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি। ব্যয় সম্পর্কিত কোনো গাইডলাইন না থাকায় প্রত্যেকটি হাসপাতালে রোগীদের নিজের পকেট থেকে বড় অঙ্কের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে দরিদ্র, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের পক্ষে চিকিৎসা গ্রহণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।
আবার আদেশের পর কতদিনের মধ্যে হাসপাতাল প্রস্তুত করতে হবে, সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ নেই। এতে করে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা সম্প্রসারণের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে ওই আদেশের আগেই হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বসুন্ধরা গ্রুপসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করে স্বাস্থ্য বিভাগ। ওই চুক্তি অনুযায়ী হাসপাতালগুলোর পরিচালন ব্যয় সরকার বহন করবে। কিন্তু আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল সেই চুক্তি থেকে সরে গেল। নতুন করে জারি করা নির্দেশনায় এ-সম্পর্কিত কোনো বিষয় উল্লেখ নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশের পরও সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতাল করোনা চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত হয়নি। এর আগে ১২ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অপর এক আদেশে সব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলো ওই আদেশ আমলে নেয়নি। হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কয়েকজন রোগীর নির্মম মৃত্যু হয়েছে। এমনকি চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবিরও তার মাকে চট্টগ্রামের কোনো হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারেননি।
বেসরকারি খাতে চিকিৎসা নিয়ে শঙ্কা :সরকারি কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় করোনা চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালগুলোর যুক্ত হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী সমকালকে বলেন, করোনা চিকিৎসায় অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। করোনা রোগীর চিকিৎসা ব্যয় অন্য রোগীদের তুলনায় বেশি পড়বে। কারণ আট ঘণ্টা পর পর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকারী সব চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রীর পরিবর্তন করতে হবে। প্রত্যেকটি পিপিইর দাম ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা পড়বে। প্রতিবার ওয়ার্ড পরিদর্শনের সময়ই পিপিই পরিবর্তন করতে হয়। এ ছাড়া করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়তি বেতন দিতে হয়। নতুন করে চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দিতে গিয়ে দেখা যায়, আগে আইসিইউর একজন কনসালট্যান্টের বেতন ৪০ হাজার টাকা এবং নার্সের জন্য ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা দিতে হতো। কিন্তু করোনা ইউনিটে কাজ করার জন্য তারা দ্বিগুণ বেতন দাবি করছেন। আবার একজন চিকিৎসক ও নার্স ১০ দিন ডিউটি করার পর ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে চলে যাবেন। এ হিসাবে এক মাস করোনা ইউনিট চালাতে তিনগুণ চিকিৎসক ও নার্সের প্রয়োজন হবে। এসব চিকিৎসক ও নার্সরা ৮ ঘণ্টা করে ডিউটি করবেন। ২৪ ঘণ্টার ডিউটির জন্য তিনটি শিফট প্রয়োজন হবে। এতে করে আগের তুলনায় প্রায় নয়গুণ বেশি ব্যয় হবে।
আনুমানিক চিকিৎসা ব্যয়ের বিষয়টি তুলে ধরে প্রীতি চক্রবর্তী বলেন, তার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা হিসাব করে দেখেছেন, সাধারণ শয্যায় ভর্তি থাকা একজন রোগীর সাধারণ ওষুধপত্র, চার বেলা খাবারসহ এক দিনে ছয় হাজার টাকার মতো ব্যয় হবে। এর বাইরে অক্সিজেন সাপোর্ট লাগলে পৃথক ব্যয় যুক্ত হবে। আইসিইউতে ভর্তি থাকা একজন রোগীর জন্য আগে দিনে ১২ হাজার ৫০০ টাকা নেওয়া হতো। বর্তমানে তা ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা পড়বে। তবে অক্সিজেন ও ওষুধ যে পরিমাণ প্রয়োজন হবে, সেই টাকা পৃথকভাবে যুক্ত হবে। এর নিচে সংকুলান করা সম্ভব হবে না।
ল্যাবএইড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এএম শামীম সমকালকে বলেন, সরকারি নির্দেশনার পর পরই তারা ৩০ শয্যার করোনা ইউনিট চালু করেছেন। করোনা রোগীর চিকিৎসা পরিচালনা ব্যয় সাধারণ রোগীদের তুলনায় বেশি পড়বে। কারণ প্রতি আট ঘণ্টা পর পর পিপিই ও মাস্ক পরিবর্তন করতে হবে। প্রতিদিন তিন শিফটে ভাগ হয়ে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবায় নিয়োজিত হতে হবে। এ ছাড়া করোনা ইউনিটে দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অন্যদের তুলনায় বেতন-ভাতা বেশি দিতে হবে। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএমসিএ) সভাপতি এমএ মবিন খান সমকালকে বলেন, দেশে বেসরকারি ৬৯টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। সরকার চাইলে এই প্রতিষ্ঠানগুলো করোনা চিকিৎসায় যুক্ত হতে পারে। সম্প্রতি ১০টি প্রতিষ্ঠান করোনা চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। কিন্তু কিছু জানানো হয়নি।
বাণিজ্যিক মনোভাব কাম্য নয়- মত বিশেষজ্ঞদের :দুর্যোগকালীন সময়ে বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের এ ধরনের বাণিজ্যিক মনোভাব কাম্য নয় বলে মনে করেন করোনা প্রতিরোধ-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। তিনি সমকালকে বলেন, সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে একটি যৌক্তিক পর্যায়ে ব্যয় নির্ধারণ করা যেতে পারে। দুর্যোগকালীন সময়ে মুনাফাভিত্তিক বাণিজ্যিক মনোভাব কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সরকারকে এ বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব সমকালকে বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার বিষয়ে সরকারি আদেশকে ভিত্তিহীন বলতে হবে। কারণ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া কোনো রোগের চিকিৎসা নিয়ে সরকার দ্বৈতনীতি অবলম্বন করতে পারে না। প্রত্যেকটি মানুষের চিকিৎসা ব্যয় সরকারকেই বহন করতে হবে। দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে এ ধরনের আইনও রয়েছে। সুতরাং দুর্যোগকালে চিকিৎসার দায়িত্ব সরকার বেসরকারি খাতের ওপর ছেড়ে দিতে পারে না। বেসরকারি খাতকে যুক্ত করা হলে তা সরকারই দেখভাল করবে। প্রয়োজনে সব বেসরকারি হাসপাতালকে রিকুইজিশন করে সরকারের চিকিৎসা পরিচালনা করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, দুর্যোগের এই সময়ে এক শ্রেণির মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসাসুবিধা পাবেন। আর অপর একটি শ্রেণিকে নিজের পকেট থেকে ব্যয় মেটাতে হবে- এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকার এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবে বলে আশা করি। অন্যথায় করোনা চিকিৎসা নিয়ে বৈষম্য তৈরি হবে। তখন দরিদ্র, নিম্নবিত্ত মানুষ চিকিৎসার নাগালের বাইরে থাকবে। এতে করে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
কর্তৃপক্ষের ভাষ্য : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ফোকাল পারসন ও অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান খান সমকালকে বলেন, করোনা সংক্রমণের পর বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আবার যেগুলো চালু ছিল সেগুলোতেও সাধারণ রোগীদের সেবা মিলছিল না। এতে করে রোগীদের চিকিৎসা প্রাপ্তি নিয়ে সংকট তৈরি হয়। এসব বিবেচনা করে করোনা আক্রান্তদের পাশাপাশি অন্যদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ওই আদেশ দেওয়া হয়েছিল।
চিকিৎসা ব্যয় সম্পর্কে হাবিবুর রহমান খান বলেন, করোনা চিকিৎসার সুনির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। তাছাড়া আক্রান্তদের বেশিরভাগেরই সংক্রমণ মৃদু। তাদের তেমন ওষুধেরও প্রয়োজন হয় না। সুতরাং ব্যয় বেশি হবে না। শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য সমস্যা থাকলে আইসিইউর প্রয়োজন হবে। তবে এটি সীমিত সংখ্যক মানুষের লাগবে। এর বাইরে অন্যান্য চিকিৎসা ব্যয় খুব একটা বেশি নয়।
আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। রোগীর কাছে থেকে নেওয়া টাকা হাসপাতালটি ফেরত দিয়েছে। সুতরাং বিষয়টি নিয়ে এখন আর সমস্যা নেই।
হাসপাতাল থেকে দেওয়া সাইফুর রহমানের বিলের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২৩ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত হাসপাতাল বিল বাবদ এক লাখ ১৪ হাজার ৫৭০ টাকা, ইনভেস্টিগেশন বাবদ ১৯ হাজার ৪৭৫ টাকা, চিকিৎসকের ব্যয় বাবদ ১৮ হাজার ৭০০ টাকা, ওষুধের ব্যয় বাবদ ৫ হাজার ২২৬ টাকা ৮৫ পয়সা এবং সার্ভিস চার্জ বাবদ ১২ হাজার ৯০৩ টাকা। সব মিলিয়ে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ টাকা ৮৫ পয়সা। মোট বিল আসে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ টাকা।
শেষ পর্যন্ত সরকারের চাপে মাত্র দু'দিনের বিল রেখে বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে সাইফুর রহমানকে। এই দু'দিনের বিল নেওয়া হয় ৫৪ হাজার ৮৮০ টাকা। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র বলছে, চুক্তি অনুযায়ী ৩১ মে পর্যন্ত চিকিৎসাবাবদ রোগীর কাছ থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো টাকা নিতে পারে না। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এই চুক্তি কার্যকর থাকবে। কিন্তু আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল ৩১ মের পর আর চুক্তি বাড়াতে চায়নি। আবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও তাদের বাধ্য করেনি। এ কারণে সরকারের চাপে ১ ও ২ জুন দু'দিনের বিল রেখে বাকি টাকা রোগীকে ফেরত দেওয়া হয়। রোগী চিকিৎসার নামে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ ধরনের বিলের বিষয়টি নিয়ে সর্বত্রই আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
নাপা ও গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিয়ে সাধারণ ওয়ার্ডে রেখে একজন রোগীকে এত টাকার বিল কীভাবে দেওয়া হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞরাও। তাদের অভিমত, এ ধরনের বিল আদায়ের মাধ্যমে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নগ্ন বাণিজ্যিক চেহারা প্রকাশ পেয়েছে। করোনার এই দুর্যোগে এভাবে বাণিজ্য করা ঠিক না। এটি অন্যায়।
এ পরিস্থিতিতে অনেকে পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে সরকার চাইলে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে রিকুইজিশন করতে পারে। এজন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো পরিচালন ব্যয় দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে সাধারণ জনগণের চিকিৎসার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, মূল্য নির্ধারণ করে যেভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নমুনা পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, একইভাবে চিকিৎসার ক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া যেতে পারে। অন্যথায় সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হবেন।
আদেশ দিয়েই দায়িত্ব শেষ স্বাস্থ্য বিভাগের :করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে চিকিৎসায় যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ লক্ষ্যে গত ২৪ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এক আদেশে ৫০ শয্যা ও এর ওপরে থাকা শয্যা সংখ্যার প্রত্যেকটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে বলা হয়। ওই আদেশে প্রত্যেকটি হাসপাতালকে কভিড ও নন-কভিড জোনে ভাগ করে চিকিৎসা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়। কিন্তু আদেশে করোনার চিকিৎসার সঙ্গে যেসব বেসরকারি হাসপাতাল যুক্ত হবে, সেগুলোর ব্যয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি। ব্যয় সম্পর্কিত কোনো গাইডলাইন না থাকায় প্রত্যেকটি হাসপাতালে রোগীদের নিজের পকেট থেকে বড় অঙ্কের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে দরিদ্র, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের পক্ষে চিকিৎসা গ্রহণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।
আবার আদেশের পর কতদিনের মধ্যে হাসপাতাল প্রস্তুত করতে হবে, সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ নেই। এতে করে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা সম্প্রসারণের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে ওই আদেশের আগেই হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বসুন্ধরা গ্রুপসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করে স্বাস্থ্য বিভাগ। ওই চুক্তি অনুযায়ী হাসপাতালগুলোর পরিচালন ব্যয় সরকার বহন করবে। কিন্তু আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল সেই চুক্তি থেকে সরে গেল। নতুন করে জারি করা নির্দেশনায় এ-সম্পর্কিত কোনো বিষয় উল্লেখ নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশের পরও সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতাল করোনা চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত হয়নি। এর আগে ১২ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অপর এক আদেশে সব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলো ওই আদেশ আমলে নেয়নি। হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কয়েকজন রোগীর নির্মম মৃত্যু হয়েছে। এমনকি চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবিরও তার মাকে চট্টগ্রামের কোনো হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারেননি।
বেসরকারি খাতে চিকিৎসা নিয়ে শঙ্কা :সরকারি কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় করোনা চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালগুলোর যুক্ত হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী সমকালকে বলেন, করোনা চিকিৎসায় অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। করোনা রোগীর চিকিৎসা ব্যয় অন্য রোগীদের তুলনায় বেশি পড়বে। কারণ আট ঘণ্টা পর পর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকারী সব চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রীর পরিবর্তন করতে হবে। প্রত্যেকটি পিপিইর দাম ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা পড়বে। প্রতিবার ওয়ার্ড পরিদর্শনের সময়ই পিপিই পরিবর্তন করতে হয়। এ ছাড়া করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়তি বেতন দিতে হয়। নতুন করে চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দিতে গিয়ে দেখা যায়, আগে আইসিইউর একজন কনসালট্যান্টের বেতন ৪০ হাজার টাকা এবং নার্সের জন্য ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা দিতে হতো। কিন্তু করোনা ইউনিটে কাজ করার জন্য তারা দ্বিগুণ বেতন দাবি করছেন। আবার একজন চিকিৎসক ও নার্স ১০ দিন ডিউটি করার পর ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে চলে যাবেন। এ হিসাবে এক মাস করোনা ইউনিট চালাতে তিনগুণ চিকিৎসক ও নার্সের প্রয়োজন হবে। এসব চিকিৎসক ও নার্সরা ৮ ঘণ্টা করে ডিউটি করবেন। ২৪ ঘণ্টার ডিউটির জন্য তিনটি শিফট প্রয়োজন হবে। এতে করে আগের তুলনায় প্রায় নয়গুণ বেশি ব্যয় হবে।
আনুমানিক চিকিৎসা ব্যয়ের বিষয়টি তুলে ধরে প্রীতি চক্রবর্তী বলেন, তার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা হিসাব করে দেখেছেন, সাধারণ শয্যায় ভর্তি থাকা একজন রোগীর সাধারণ ওষুধপত্র, চার বেলা খাবারসহ এক দিনে ছয় হাজার টাকার মতো ব্যয় হবে। এর বাইরে অক্সিজেন সাপোর্ট লাগলে পৃথক ব্যয় যুক্ত হবে। আইসিইউতে ভর্তি থাকা একজন রোগীর জন্য আগে দিনে ১২ হাজার ৫০০ টাকা নেওয়া হতো। বর্তমানে তা ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা পড়বে। তবে অক্সিজেন ও ওষুধ যে পরিমাণ প্রয়োজন হবে, সেই টাকা পৃথকভাবে যুক্ত হবে। এর নিচে সংকুলান করা সম্ভব হবে না।
ল্যাবএইড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এএম শামীম সমকালকে বলেন, সরকারি নির্দেশনার পর পরই তারা ৩০ শয্যার করোনা ইউনিট চালু করেছেন। করোনা রোগীর চিকিৎসা পরিচালনা ব্যয় সাধারণ রোগীদের তুলনায় বেশি পড়বে। কারণ প্রতি আট ঘণ্টা পর পর পিপিই ও মাস্ক পরিবর্তন করতে হবে। প্রতিদিন তিন শিফটে ভাগ হয়ে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবায় নিয়োজিত হতে হবে। এ ছাড়া করোনা ইউনিটে দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অন্যদের তুলনায় বেতন-ভাতা বেশি দিতে হবে। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএমসিএ) সভাপতি এমএ মবিন খান সমকালকে বলেন, দেশে বেসরকারি ৬৯টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। সরকার চাইলে এই প্রতিষ্ঠানগুলো করোনা চিকিৎসায় যুক্ত হতে পারে। সম্প্রতি ১০টি প্রতিষ্ঠান করোনা চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। কিন্তু কিছু জানানো হয়নি।
বাণিজ্যিক মনোভাব কাম্য নয়- মত বিশেষজ্ঞদের :দুর্যোগকালীন সময়ে বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের এ ধরনের বাণিজ্যিক মনোভাব কাম্য নয় বলে মনে করেন করোনা প্রতিরোধ-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। তিনি সমকালকে বলেন, সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে একটি যৌক্তিক পর্যায়ে ব্যয় নির্ধারণ করা যেতে পারে। দুর্যোগকালীন সময়ে মুনাফাভিত্তিক বাণিজ্যিক মনোভাব কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সরকারকে এ বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব সমকালকে বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার বিষয়ে সরকারি আদেশকে ভিত্তিহীন বলতে হবে। কারণ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া কোনো রোগের চিকিৎসা নিয়ে সরকার দ্বৈতনীতি অবলম্বন করতে পারে না। প্রত্যেকটি মানুষের চিকিৎসা ব্যয় সরকারকেই বহন করতে হবে। দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে এ ধরনের আইনও রয়েছে। সুতরাং দুর্যোগকালে চিকিৎসার দায়িত্ব সরকার বেসরকারি খাতের ওপর ছেড়ে দিতে পারে না। বেসরকারি খাতকে যুক্ত করা হলে তা সরকারই দেখভাল করবে। প্রয়োজনে সব বেসরকারি হাসপাতালকে রিকুইজিশন করে সরকারের চিকিৎসা পরিচালনা করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, দুর্যোগের এই সময়ে এক শ্রেণির মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসাসুবিধা পাবেন। আর অপর একটি শ্রেণিকে নিজের পকেট থেকে ব্যয় মেটাতে হবে- এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকার এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবে বলে আশা করি। অন্যথায় করোনা চিকিৎসা নিয়ে বৈষম্য তৈরি হবে। তখন দরিদ্র, নিম্নবিত্ত মানুষ চিকিৎসার নাগালের বাইরে থাকবে। এতে করে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
কর্তৃপক্ষের ভাষ্য : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ফোকাল পারসন ও অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান খান সমকালকে বলেন, করোনা সংক্রমণের পর বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আবার যেগুলো চালু ছিল সেগুলোতেও সাধারণ রোগীদের সেবা মিলছিল না। এতে করে রোগীদের চিকিৎসা প্রাপ্তি নিয়ে সংকট তৈরি হয়। এসব বিবেচনা করে করোনা আক্রান্তদের পাশাপাশি অন্যদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ওই আদেশ দেওয়া হয়েছিল।
চিকিৎসা ব্যয় সম্পর্কে হাবিবুর রহমান খান বলেন, করোনা চিকিৎসার সুনির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। তাছাড়া আক্রান্তদের বেশিরভাগেরই সংক্রমণ মৃদু। তাদের তেমন ওষুধেরও প্রয়োজন হয় না। সুতরাং ব্যয় বেশি হবে না। শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য সমস্যা থাকলে আইসিইউর প্রয়োজন হবে। তবে এটি সীমিত সংখ্যক মানুষের লাগবে। এর বাইরে অন্যান্য চিকিৎসা ব্যয় খুব একটা বেশি নয়।
আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। রোগীর কাছে থেকে নেওয়া টাকা হাসপাতালটি ফেরত দিয়েছে। সুতরাং বিষয়টি নিয়ে এখন আর সমস্যা নেই।
মন্তব্য করুন