- বাংলাদেশ
- মুখোমুখি মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর
মুখোমুখি মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর
স্বাস্থ্যের ডিজিকে কারণ দর্শাও নোটিশ

আবুল কালাম আজাদ
করোনা মহামারির মধ্যেই স্বাস্থ্য বিভাগের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। করোনার নমুনা পরীক্ষায় জেকেজি ও রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণার ঘটনা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা এখন মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা কার্যক্রমে ওই দুটি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা নিয়ে দু'পক্ষই পরস্পরকে দায়ী করেছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের আগ্রহেই এ কাজে বিতর্কিত ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের যুক্ত হওয়া নিয়ে সমকালসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রচার হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দাবি করে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। অধিদপ্তরের এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল রোববার ডিজিকে শোকজ করা হয়েছে।
করোনা মহামারির এই সংকটকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের এমন মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের অভিমত, স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষের পরস্পরবিরোধী এই অবস্থানের মধ্য দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে সমন্বয়হীনতার চিত্রই ফুটে উঠেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মন্ত্রণালয়কে দায়ী করে এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি পাঠাতে পারেন না। কারণ তিনি মন্ত্রণালয়ের অধীনেই কাজ করেন। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতা থাকলে সেটি তারা নিজেদের ফোরামে আলোচনা করে নিতে পারত। গণমাধ্যমে ওই বিজ্ঞপ্তি পাঠানোর অর্থ হলো- মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের মধ্যে নূ্যনতম সৌজন্য বিনিময় কিংবা কথাবার্তাও হয়তো হয় না। সে জন্যই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে ডিজি গণমাধ্যমের দ্বারস্থ হয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরস্পরবিরোধী এমন অবস্থান দুর্যোগময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার বিষয়টিকে আরও কঠিন করে তুলবে বলে মনে করেন তারা।
স্বাস্থ্যের ডিজিকে শোকজ : গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে শোকজ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের 'ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ' বলতে কী বোঝানো হয়েছে তার ব্যাখ্যা চেয়ে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব (পার-২) শারমিন আক্তার জাহান স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির প্রতি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, 'মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করেছে। কোনো হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির পূর্বে তা সরেজমিন পরিদর্শন, হাসপাতাল পরিচালনার অনুমতি, পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, জনবল, ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ ইত্যাদি বিশ্নেষণ করে উপযুক্ততা বিবেচিত হলেই কভিড পরীক্ষা/চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চুক্তি সম্পন্ন করার সুযোগ রয়েছে। রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির পূর্বে কী কী বিষয় বিবেচনা করা হয়েছিল, চুক্তি করার পর ওই শর্তগুলো প্রতিপালনে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে কী বোঝানো হয়েছে, তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আগামী দিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রদান করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।'
রিজেন্ট-জেকেজিকাণ্ডে মন্ত্রণালয়কে দায়ী করে অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি : এর আগে গত শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, মার্চ মাসে করোনা আক্রান্ত রোগী যখন কোনো হাসপাতালে ভর্তি নিচ্ছিল না, তখন রিজেন্ট হাসপাতাল কভিড ডেডিকেটেড হিসেবে চুক্তি করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। তখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করে। এই চুক্তির আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ তাকে (রিজেন্টে মালিক মো. সাহেদ) চিনতেন না, পরিচয় থাকা তো দূরের কথা।
একই বিজ্ঞপ্তিতে জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ার (জেকেজি) নামের আরেক প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার বিষয়েও নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এতে দাবি করা হয়, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সমন্বয়ক আরিফুল চৌধুরী ওভাল গ্রুপ লিমিটেড নামে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের স্বত্বাধিকারী। ওই গ্রুপ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে স্বাস্থ্যসেবা সপ্তাহ ২০১৮-এর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব পালন করে। কভিড সংকট শুরুর পর আরিফুল হক চৌধুরী অধিদপ্তরে এসে জানান, জেকেজি দক্ষিণ কোরিয়ার মডেলে বাংলাদেশে কিছু বুথ স্থাপন করতে চায়। ওভাল গ্রুপের সঙ্গে আগে থেকেই কাজের অভিজ্ঞতা থাকার কারণে তাদের অনুমতি দেওয়া যায় বলে মনে করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা মন্ত্রণালয়। কিন্তু পরে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জেকেজি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সমকালকে বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করা আছে কিনা, প্রতিষ্ঠানটি করোনা চিকিৎসার উপযোগী কিনা, তা যাচাই-বাছাই করার দায়িত্ব তো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করার পর মন্ত্রণালয় ও তাকে অবহিত করা হয়। এরপর দিনক্ষণ নির্ধারণ করে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তাকে এবং স্বাস্থ্যসেবা সচিবসহ আরও দুটি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি মন্ত্রী হিসেবে উপস্থিত থেকেছেন। সুতরাং মন্ত্রণালয়ের কোনো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক) নির্দেশ দিয়েছে এবং সে অনুযায়ী রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে, সেটি জানতে চাওয়া হয়েছে।
জেকেজি সম্পর্কে অধিদপ্তরের বক্তব্যের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জেকেজি নামে ওই প্রতিষ্ঠানটিকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ দেওয়ার জন্য তিনি কখনও সুপারিশ করেননি। এমনকি অভিযুক্তদের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত পরিচয় দূরের কথা, প্রতারণার ঘটনা প্রকাশের আগে তাদের চিনতেনও না।
সব জেনেও নীরব ছিল অধিদপ্তর :রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজির প্রতারণার বিষয়টি জানার পরও নীরব ছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মহাপরিচালকসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে রিজেন্ট হাসপাতাল ও নমুনা সংগ্রহকারী আরও কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার বিষয়ে গত ৭ জুন অভিযোগ করেছিলেন নিপসমের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশিদ রিয়াজ। কিন্তু অধিদপ্তর থেকে ৯ জুন পাল্টা চিঠি দিয়ে তাকে ওইসব প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো নমুনা পরীক্ষার কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়। গ্রেপ্তারের আগে ডা. সাবরিনা চৌধুরী গত শনিবার একটি গণমাধ্যমে বলেছেন, জেকেজির প্রতারণার বিষয়টি মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে তিনি ওই প্রতিষ্ঠান থেকে সরে আসেন। সংশ্নিষ্টদের মতে, এতেই প্রমাণ হয় সবকিছু জেনেও নীরব থেকেছে অধিদপ্তর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর জেকেজি ও রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়।
জেকেজি ও রিজেন্টকে যুক্ত করার নেপথ্যে কারা রয়েছেন- এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেকেজি, রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে শুরু করে করোনাকালে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতরা সবাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের ঘনিষ্ঠজন। তার আশ্রয়-প্রশ্রয়েই এসব দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে স্বাস্থ্য খাতের চেইন অব কমান্ড একরকম ভেঙে পড়েছে। ডিজির সিন্ডিকেটের কর্মকর্তাদের ইশারা ছাড়া কোনো ফাইলও নড়ে না।
জেকেজি ও রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণার খবর উদ্ঘাটিত হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মধ্য দিয়ে। দুটি প্রতিষ্ঠানই নমুনা সংগ্রহ করে নিজেদের ইচ্ছামতো পজিটিভ ও নেগেটিভ সনদ দিয়ে আসছিল বলে গুরুতর তথ্য বেরিয়ে আসে। এরই মধ্যে দুই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীকেও। এর পরই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
গ্রেপ্তারের আগে ডা. সাবরিনা চৌধুরী একটি গণমাধ্যমে বলেন, জেকেজির প্রতারণার বিষয়টি তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন। এ বিষয়ে তিনি সমকালকে আরও বলেন, অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ইনস্টিটিউট অব রেফারেল ল্যাবরেটরি মেডিসিনের পরিচালক ও ডা. রিজওয়ানুল করিম শামীম- এই তিনজনকে জানিয়ে তিনি জেকেজি থেকে সরে আসেন।
রিজওয়ানুল করিম শামীম নামের ওই কর্মকর্তাকে জানানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, শামীম তাদের পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করতেন। এ জন্যই তাকে জানানো হয়েছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, করোনা মহামারির সময়ে যখন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা পিপিই, মাস্কসহ সুরক্ষা সামগ্রী পাচ্ছিলেন না, তখন ওই শামীমের সহায়তায় জেকেজিকে এক হাজার ২০০ পিস পিপিই সরবরাহ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. রিজওয়ানুল করিম শামীম সমকালকে বলেন, ডা. সাবরিনা তার প্রতিষ্ঠানের একজন চিকিৎসককে নিয়ে একদিন অফিসে এলে জেকেজি নিয়ে কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরে কাকে জানাবেন, তা জানতে চান। এরপর আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথা বলেছিলাম। আমি তো অথরিটির কেউ নই। সুতরাং আমাকে জানাবেন কেন?
পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সমন্বিত করোনা কন্ট্রোল রুম থেকে সব হাসপাতালে লেভেল-৩ মানের পিপিই সরবরাহ করা হতো। তিনি সেখানে কাজ করতেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। বিভিন্ন প্রতিবেদনের জন্য তার বক্তব্য চেয়ে গত কয়েকদিন ধরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করছেন না।
মুখোমুখি অবস্থান পরিস্থিতি জটিল করবে- মত বিশেষজ্ঞদের :করোনা মহামারির এ সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের এমন মুখোমুখি অবস্থান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম। সমকালকে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর তো প্রতিপক্ষ নয়। মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান হলো অধিদপ্তর। কাকে কীভাবে যুক্ত করা হয়েছে, সেটি তো দুই বিভাগের সবার জানার কথা। গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার অর্থ হলো- মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় নেই। হয়তো কথাবার্তাও বন্ধ আছে। না হলে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি আসবে কেন? এ ধরনের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সমন্বয় না থাকলে করোনার মতো মহামারি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের পরিবর্তে আরও ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে পারে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়কে এ বিষয়টি আমলে নিতে হবে।
বিএমএর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব সমকালকে বলেন, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর আগে কখনও এ ধরনের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দিয়েছে কিনা জানা নেই। তবে ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে তাদের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বিষয়টি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়বে।
করোনা মহামারির এই সংকটকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের এমন মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের অভিমত, স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষের পরস্পরবিরোধী এই অবস্থানের মধ্য দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে সমন্বয়হীনতার চিত্রই ফুটে উঠেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মন্ত্রণালয়কে দায়ী করে এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি পাঠাতে পারেন না। কারণ তিনি মন্ত্রণালয়ের অধীনেই কাজ করেন। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতা থাকলে সেটি তারা নিজেদের ফোরামে আলোচনা করে নিতে পারত। গণমাধ্যমে ওই বিজ্ঞপ্তি পাঠানোর অর্থ হলো- মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের মধ্যে নূ্যনতম সৌজন্য বিনিময় কিংবা কথাবার্তাও হয়তো হয় না। সে জন্যই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে ডিজি গণমাধ্যমের দ্বারস্থ হয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরস্পরবিরোধী এমন অবস্থান দুর্যোগময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার বিষয়টিকে আরও কঠিন করে তুলবে বলে মনে করেন তারা।
স্বাস্থ্যের ডিজিকে শোকজ : গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে শোকজ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের 'ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ' বলতে কী বোঝানো হয়েছে তার ব্যাখ্যা চেয়ে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব (পার-২) শারমিন আক্তার জাহান স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির প্রতি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, 'মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করেছে। কোনো হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির পূর্বে তা সরেজমিন পরিদর্শন, হাসপাতাল পরিচালনার অনুমতি, পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, জনবল, ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ ইত্যাদি বিশ্নেষণ করে উপযুক্ততা বিবেচিত হলেই কভিড পরীক্ষা/চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চুক্তি সম্পন্ন করার সুযোগ রয়েছে। রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির পূর্বে কী কী বিষয় বিবেচনা করা হয়েছিল, চুক্তি করার পর ওই শর্তগুলো প্রতিপালনে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে কী বোঝানো হয়েছে, তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আগামী দিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রদান করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।'
রিজেন্ট-জেকেজিকাণ্ডে মন্ত্রণালয়কে দায়ী করে অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি : এর আগে গত শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, মার্চ মাসে করোনা আক্রান্ত রোগী যখন কোনো হাসপাতালে ভর্তি নিচ্ছিল না, তখন রিজেন্ট হাসপাতাল কভিড ডেডিকেটেড হিসেবে চুক্তি করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। তখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করে। এই চুক্তির আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ তাকে (রিজেন্টে মালিক মো. সাহেদ) চিনতেন না, পরিচয় থাকা তো দূরের কথা।
একই বিজ্ঞপ্তিতে জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ার (জেকেজি) নামের আরেক প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার বিষয়েও নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এতে দাবি করা হয়, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সমন্বয়ক আরিফুল চৌধুরী ওভাল গ্রুপ লিমিটেড নামে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের স্বত্বাধিকারী। ওই গ্রুপ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে স্বাস্থ্যসেবা সপ্তাহ ২০১৮-এর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব পালন করে। কভিড সংকট শুরুর পর আরিফুল হক চৌধুরী অধিদপ্তরে এসে জানান, জেকেজি দক্ষিণ কোরিয়ার মডেলে বাংলাদেশে কিছু বুথ স্থাপন করতে চায়। ওভাল গ্রুপের সঙ্গে আগে থেকেই কাজের অভিজ্ঞতা থাকার কারণে তাদের অনুমতি দেওয়া যায় বলে মনে করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা মন্ত্রণালয়। কিন্তু পরে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জেকেজি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সমকালকে বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করা আছে কিনা, প্রতিষ্ঠানটি করোনা চিকিৎসার উপযোগী কিনা, তা যাচাই-বাছাই করার দায়িত্ব তো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করার পর মন্ত্রণালয় ও তাকে অবহিত করা হয়। এরপর দিনক্ষণ নির্ধারণ করে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তাকে এবং স্বাস্থ্যসেবা সচিবসহ আরও দুটি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি মন্ত্রী হিসেবে উপস্থিত থেকেছেন। সুতরাং মন্ত্রণালয়ের কোনো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক) নির্দেশ দিয়েছে এবং সে অনুযায়ী রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে, সেটি জানতে চাওয়া হয়েছে।
জেকেজি সম্পর্কে অধিদপ্তরের বক্তব্যের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জেকেজি নামে ওই প্রতিষ্ঠানটিকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ দেওয়ার জন্য তিনি কখনও সুপারিশ করেননি। এমনকি অভিযুক্তদের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত পরিচয় দূরের কথা, প্রতারণার ঘটনা প্রকাশের আগে তাদের চিনতেনও না।
সব জেনেও নীরব ছিল অধিদপ্তর :রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজির প্রতারণার বিষয়টি জানার পরও নীরব ছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মহাপরিচালকসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে রিজেন্ট হাসপাতাল ও নমুনা সংগ্রহকারী আরও কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার বিষয়ে গত ৭ জুন অভিযোগ করেছিলেন নিপসমের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশিদ রিয়াজ। কিন্তু অধিদপ্তর থেকে ৯ জুন পাল্টা চিঠি দিয়ে তাকে ওইসব প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো নমুনা পরীক্ষার কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়। গ্রেপ্তারের আগে ডা. সাবরিনা চৌধুরী গত শনিবার একটি গণমাধ্যমে বলেছেন, জেকেজির প্রতারণার বিষয়টি মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে তিনি ওই প্রতিষ্ঠান থেকে সরে আসেন। সংশ্নিষ্টদের মতে, এতেই প্রমাণ হয় সবকিছু জেনেও নীরব থেকেছে অধিদপ্তর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর জেকেজি ও রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়।
জেকেজি ও রিজেন্টকে যুক্ত করার নেপথ্যে কারা রয়েছেন- এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেকেজি, রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে শুরু করে করোনাকালে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতরা সবাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের ঘনিষ্ঠজন। তার আশ্রয়-প্রশ্রয়েই এসব দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে স্বাস্থ্য খাতের চেইন অব কমান্ড একরকম ভেঙে পড়েছে। ডিজির সিন্ডিকেটের কর্মকর্তাদের ইশারা ছাড়া কোনো ফাইলও নড়ে না।
জেকেজি ও রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণার খবর উদ্ঘাটিত হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মধ্য দিয়ে। দুটি প্রতিষ্ঠানই নমুনা সংগ্রহ করে নিজেদের ইচ্ছামতো পজিটিভ ও নেগেটিভ সনদ দিয়ে আসছিল বলে গুরুতর তথ্য বেরিয়ে আসে। এরই মধ্যে দুই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীকেও। এর পরই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
গ্রেপ্তারের আগে ডা. সাবরিনা চৌধুরী একটি গণমাধ্যমে বলেন, জেকেজির প্রতারণার বিষয়টি তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন। এ বিষয়ে তিনি সমকালকে আরও বলেন, অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ইনস্টিটিউট অব রেফারেল ল্যাবরেটরি মেডিসিনের পরিচালক ও ডা. রিজওয়ানুল করিম শামীম- এই তিনজনকে জানিয়ে তিনি জেকেজি থেকে সরে আসেন।
রিজওয়ানুল করিম শামীম নামের ওই কর্মকর্তাকে জানানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, শামীম তাদের পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করতেন। এ জন্যই তাকে জানানো হয়েছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, করোনা মহামারির সময়ে যখন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা পিপিই, মাস্কসহ সুরক্ষা সামগ্রী পাচ্ছিলেন না, তখন ওই শামীমের সহায়তায় জেকেজিকে এক হাজার ২০০ পিস পিপিই সরবরাহ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. রিজওয়ানুল করিম শামীম সমকালকে বলেন, ডা. সাবরিনা তার প্রতিষ্ঠানের একজন চিকিৎসককে নিয়ে একদিন অফিসে এলে জেকেজি নিয়ে কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরে কাকে জানাবেন, তা জানতে চান। এরপর আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথা বলেছিলাম। আমি তো অথরিটির কেউ নই। সুতরাং আমাকে জানাবেন কেন?
পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সমন্বিত করোনা কন্ট্রোল রুম থেকে সব হাসপাতালে লেভেল-৩ মানের পিপিই সরবরাহ করা হতো। তিনি সেখানে কাজ করতেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। বিভিন্ন প্রতিবেদনের জন্য তার বক্তব্য চেয়ে গত কয়েকদিন ধরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করছেন না।
মুখোমুখি অবস্থান পরিস্থিতি জটিল করবে- মত বিশেষজ্ঞদের :করোনা মহামারির এ সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের এমন মুখোমুখি অবস্থান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম। সমকালকে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর তো প্রতিপক্ষ নয়। মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান হলো অধিদপ্তর। কাকে কীভাবে যুক্ত করা হয়েছে, সেটি তো দুই বিভাগের সবার জানার কথা। গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার অর্থ হলো- মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় নেই। হয়তো কথাবার্তাও বন্ধ আছে। না হলে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি আসবে কেন? এ ধরনের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সমন্বয় না থাকলে করোনার মতো মহামারি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের পরিবর্তে আরও ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে পারে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়কে এ বিষয়টি আমলে নিতে হবে।
বিএমএর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব সমকালকে বলেন, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর আগে কখনও এ ধরনের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দিয়েছে কিনা জানা নেই। তবে ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে তাদের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বিষয়টি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়বে।
মন্তব্য করুন