- বাংলাদেশ
- শর্ত ভঙ্গ করায় যুদ্ধাপরাধী জোবায়েরের জামিন বাতিল চাইবে প্রসিকিউশন
শর্ত ভঙ্গ করায় যুদ্ধাপরাধী জোবায়েরের জামিন বাতিল চাইবে প্রসিকিউশন

রাজধানী ঢাকায় অবস্থানসহ সাত শর্তে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি জোবায়ের মনিরকে অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। জামিনের সেই শর্ত ভঙ্গ করে কোরবানির ঈদে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় দৌলতপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে যান তিনি। সেখানে দলবল নিয়ে হাওরে ঘুরে বেড়ান যুদ্ধাপরাধী জোবায়ের মনির।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, জামিনের শর্ত ভঙ্গ করায় জোবায়ের মনিরের জামিন বাতিল চাওয়াসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালে দুই একদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত আবেদন দাখিল করা হবে।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জোবায়ের মনির। পেরুয়া গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা রজনী দাসের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জোবায়ের মনিরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এরপর ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর জোবায়ের মনির, জাকির হোসেন, তোতা মিয়া, সিদ্দিকুর রহমান, আবদুল জলিল, আবদুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাকী ৫ আসামি পলাতক। ২০১৯ সালের জুন মাসে জোবায়ের মনিরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নুর হোসেন।
এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার হওয়া ৬ আসামির মধ্যে জোবায়ের মনিরকে অসুস্থতা ও মানবিক কারণে চলতি বছর ৯ ফেব্রুয়ারি সাত শর্তে অন্তবর্তী জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল। উল্লেখযোগ্য জামিনের শর্ত ছিল ঢাকার (বাড়ি নম্বর-১০২১, রোড নম্বর ১৭/১, বায়তুল আমান হাউজিং, আদাবর, মোহাম্মদপুর) এই ঠিকানায় অবস্থান করতে হবে। না জানিয়ে শহরের বাইরে যাওয়া যাবে না। পাসপোর্ট ট্রাইব্যুনালে জমা দিতে হবে। কোন মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলা যাবে না। মামলার বাদী ও সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখানো যাবেনা। কিন্তু সেই শর্ত ভেঙে এবারের ঈদে গ্রামের বাড়িতে কোরবানি দেন এবং দল-বল নিয়ে প্রকাশ্যে হাওরে ঘুরে বেড়িয়েছেন এই আসামি। এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মামলার বাদী, সাক্ষীরা। তারা বিষয়টি প্রসিকিউশন ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ-আল মালুম সমকালকে বলেন, অসুস্থতাজনিত মানবিক কারণে গত ফেব্রুয়ারিতে আসামি জোবায়ের মনিরকে ২০ হাজার টাকার মুচলেকায় জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল। জামিনের শর্ত অনুযায়ী তিনি ঢাকায় থাকবেন। কিন্তু গাড়িতে করে তিনি এলাকায় ঘুরেছেন বলে আমরা শুনেছি। জোবায়ের মনির ট্রাইব্যুনালের দেয়া জামিনের শর্ত বরখেলাপ করেছেন। এলাকায় গিয়ে মামলায় বাদী, সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। আমরা তার জামিন বাতিলসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দুই একদিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন দাখিল করব।
মন্তব্য করুন