অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিস্কৃত নেত্রী গ্রেফতার শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে ৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে মঙ্গলবার কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ মামলাটি দায়ের করেন।

জানা গেছে, অনৈতিক, অসামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া ও তার স্বামী মো. মফিজুর রহমানসহ চার জনকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে তাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়। গ্রেফতারের কিছু দিন পর পাপিয়ার দম্পতির সম্পদ অনুসন্ধানে নামে দুদক। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার মামলা করা হলো।

দুদকের এজাহারে বলা হয়- এই দম্পতির নামে স্থাবর-অস্থাবর মোট ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। যার পুরোটাই অবৈধভাবে অর্জিত।

এজাহারে আরও বলা হয়, গত বছরের ১২ অক্টোবর থেকে গ্রেফতারের পর ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলের ২২০১ নং প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট ও ২২০১ নং- চেয়ারম্যান স্যুটসহ ২৫ টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, খাবারের রেষ্টুরেন্ট, মদের বার, স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ফুড, মিনি বারে বিল বাবদ মোট ৩ কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬০ টাকা পাপিয়া নিজে পরিশোধ করেছেন। তিনি বিলাসবহুল জীবন যাপন পছন্দ করতেন বিধায় ওয়েস্টিন হোটেলে থাকাবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেছেন। যা তিনি নিজেই দুদককে জানিয়েছেন।

এতে বলা হয়, গত ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ৫ বছরে মাসিক ৫০ হাজার টাকা হারে ৩০ লাখ টাকার বাসা ভাড়া দিয়েছেন। গাড়ির ব্যবসায় ১ কোটি টাকা ও নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশানে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। বিভিন্ন ব্যাংকে তার ও তার স্বামীর নামে নগদ ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকা জমা আছে। র‌্যাব তার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। স্বামী মফিজুর রহমান সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ-২০১২ মডেলের একটি গাড়ি আছে যার মূল্য ২২ লাখ টাকা।

এভাবেই পাপিয়া ও তার স্বামী অপরাধলব্ধ সর্বমোট ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকা জ্ঞাত সারে খরচ করেন। ওই পরিমাণ টাকার সম্পদ অর্জনের স্বপক্ষে তারা বৈধ উৎস্য দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

ওই সম্পদের বিপরীতে তারা কোনরূপ দালিলিক রেকর্ডপত্রাদি/প্রমাণাদি উপস্থাপন করেননি। তাতে ওই পরিমাণ সম্পদ জ্ঞাত আয় বর্হির্ভুত বলে প্রতীয়মান হয়েছে। ওই পরিমাণ অবৈধ সম্পদ সম্পদ তাদের ভোগ দখলে রেখে অভিযুক্ত শামীমা নূর পাপিয়া এবং তার স্বামী মফিজুর রহমান দুদক আইন -২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। আইনের এই ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়।