মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতে কারাবন্দি লক্ষীপুর ২ আসনে সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল এবং দুনীর্তির মামলায় দণ্ডিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৩ আসনে বিএনপি নেতা হারুনুর রশীদের সংসদ সদস্য পদের বৈধতা নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রুলে পাপুলকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করে তার নির্বাচনী আসন কেন শূন্য ঘোষণা করা হবে না এবং হারুনুর রশীদের সংসদ সদস্য পদে থাকা কেন অবৈধ ও তার নির্বাচনী আসন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ কে কেন শূন্য ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার দুটি রিটের শুনানি নিয়ে পৃথক এই রুল জারি করেন। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিব, লক্ষীপুরের জেলা প্রশাসক, সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল, চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে সংসদ সদস্য পাপুলের বিষয়ে করা রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ আওসাফুর রহমান। আর সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের বিষয়ে করা রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী দেওয়ান এম এ ওবাঈদ হোসেন।
নির্বাচনী হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়া ও শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ দাখিল করায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের সংসদ সদস্য পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত রোববার হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিটটি করেন আবুল ফয়েজ ভূঁইয়া। রিট আবেদনকারী গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে সেখানে জয়ী হয়ে আসেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল। যিনি মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাবন্দি আছেন। এ জন্য তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করা হয়েছে।
অপরদিকে শুল্ক্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়ি বিক্রি করে শুল্ক ফাঁকির মামলায় বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদকে গত বছর ২১ অক্টোবর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম। এ ঘটনায় তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে ১৩ আগস্ট রিটটি দায়ের করা হয়েছে। রিটে বলা হয়, সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো সংসদ সদস্যের দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্ত সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের সাজা হয়েছে পাঁচ বছর। কিন্ত তিনি এখনও সংসদ সদস্য পদে বহাল রয়েছেন।
এ বিষয়ে রিটকারীর আইনজীবী দেওয়ান ওবাঈদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত হারুনুর রশীদ আর সংসদ সদস্য পদে থাকতে পারেন না। এ জন্য রিটটি করা হয়েছে। হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন।