- বাংলাদেশ
- ১১ বছরে মাথাপিছু আয় তিনগুণ হয়েছে: কৃষিমন্ত্রী
১১ বছরে মাথাপিছু আয় তিনগুণ হয়েছে: কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক- ফাইল ছবি
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বিএনপির শাসনামলে মাথাপিছু আয় ছিল ৬০০ ডলারের নিচে। তা এখন দুই হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার মাত্র ১১ বছরে মাথাপিছু আয় তিনগুণ করেছে। এর পেছনে কৃষিখাতের বড় অবদান রয়েছে। কৃষিতে সরকারের প্রণোদনা এবং ভর্তুকি দেওয়ায় এসেছে নানা সাফল্য। বিশেষ করে সারের মূল্য ৮২ টাকা থেকে ১৬ টাকায় নামানো পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
শনিবার এক অনলাইন সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি আয়োজিত 'বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি' শিরোনামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষি দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জিডিপিতে কৃষির অবদান কমলে কৃষির গুরুত্ব একটুও কমেনি। মূলত কৃষির উন্নয়নই দেশের অন্যান্য উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে থাকে। এজন্য কৃষিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এখনও দেশের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। তাদের জীবিকার মূল উৎস কৃষি। কৃষিতে অর্জন অনেক। এজন্য কৃষিবিদরা গর্ব করতে পারেন। তবে যারা রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভেজে ঘামকে সোনালি ফসলে রুপান্তর করেন, সেই কৃষক সমাজের অবদান অনেক বেশি। তারা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করেছে।
কৃষিতে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৈশোর-তরুণ বয়স থেকে বাংলার কৃষকের দৈন্যদশা স্বচক্ষে দেখেছেন, যা বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ে গভীরভাবে রেখাপাত করে। তার রাজনৈতিক জীবনজুড়ে কৃষক ও কৃষির উন্নয়ন ও কল্যাণ ভাবনা নিবিড়ভাবে কাজ করেছে। বাংলার দুঃখী মানুষ-কৃষক শ্রমিকের জন্য বঙ্গবন্ধুর ভালবাসা ছিল অকৃত্রিম।
ড. রাজ্জাক আরও বলেন, ষাটের দশকে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে আধুনিক চাষাবাদের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য 'সবুজ বিপ্লব' শুরু হলেও তার ছোঁয়া পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠি বাংলাদেশের মাটিতে লাগতে দেয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশে সরকার গঠনের পরপরই বঙ্গবন্ধু উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সবুজ বিপ্লবের ডাক দেন। কৃষি উপকরণ, কৃষি গবেষণা, নতুন জাত ও আধুনিক কৃষিতে গুরুত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, এই পৃথিবীতে অনেক নেতা আসবে, অনেক নেতা এসেছে কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মতো মানবদরদী মহান নেতা আসবেন না। সমুদ্রের গভীরতা মাপা যাবে, আপনারা আটলান্টিক মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরতা মাপতে পারবেন, কিন্তু বাঙালি জাতির প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালবাসার গভীরতা আপনার মাপতে পারবেন না। বঙ্গবন্ধু সবসময় বাংলার মানুষ ও মাটির প্রতি বিশ্বাসী ছিলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমার বাংলার মাটি যদি থাকে, মানুষ যদি থাকে, একদিন এই বিধ্বস্ত বাংলাকেই আমি সুজলা, সফলা, শস্য- শ্যামল বাংলায় রূপান্তর করব।
তিনি আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশ যে সবদিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এই ভিত্তি বঙ্গবন্ধু স্থাপন করেছিলেন। কৃষকোর প্রতি বঙ্গবন্ধুর যে দরদ ছিল তা চিন্তা করা যায় না।
সভায় বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসানের সভাপতিত্বে আলোচক হিসাবে অংশগ্রহণ করেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও লেখক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম. এ. সাত্তার মন্ডল, বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুল হক কাজল, সাবেক সচিব মো. আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার প্রমুখ।
মন্তব্য করুন