
রংপুর অঞ্চলে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় দুই লাখ কৃষক। আধুনিক চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করে কৃষি বিভাগের সহায়তায় দু'দফা বন্যার পরও তাই এখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে আমনের আবাদ। ফলে রংপুর অঞ্চলে আউশের পর আমন ফলনে বিপ্লবের সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চল সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর রংপুর অঞ্চলের রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী এই পাঁচ জেলায় দু'দফা বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এক হাজার ২৬৫ হেক্টর আমন বীজতলা, ১১১ হেক্টর রোপা আমন, চার হাজার ৫৯৮ হেক্টর আউশ, এক হাজার ২৪৪ হেক্টর শাকসবজি, ২৯ হেক্টর ভুট্টা, ৩১ হেক্টর চিনাবাদাম, ৩৭৯ হেক্টর তিল, ২০ হেক্টর কাউন, ১৪০ হেক্টর চিনা, ২০৫ হেক্টর মরিচ, ছয় হাজার ৪৪৩ হেক্টর পাটের জমির ক্ষতি হয়েছে এ বন্যায়। সব মিলিয়ে এক লাখ ৭২ হাজার ৭৯ জন কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে ১৭২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
তবে কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এবার রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। চলতি বছর রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ছয় লাখ পাঁচ হাজার ১৪০ হেক্টর জমি। ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রংপুর অঞ্চলে ছয় লাখ এক হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে আমনের চারা রোপণ করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৯ দশমিক ৪৫ ভাগ।
রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকের জমিগুলো আমন ধানের চারায় হয়ে উঠেছে সবুজের বিছানা। জমিতে সার ছিটাতে কিংবা আগাছা তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা। পোকামাকড় থেকে ধানগাছ রক্ষায় অনেকে ব্যাপক হারে পার্চিং করেছেন। পার্চিংয়ের কঞ্চি কিংবা খুঁটিতে তাই মাঝেমধ্যেই দেখা যাচ্ছে উড়ে এসে ফিঙে পাখিদের বসতে। উঁচু জমিগুলোতে বন্যা ও বর্ষার পানি নেমে গেলেও নদীতীরের চরাঞ্চলের জমিগুলোতে বন্যার পানি কমেনি। গঙ্গাচড়ার পূর্ব ইচলী, শংকরদহ, জয়রাম ওঝাসহ বিভিন্ন গ্রামে এখনও পানিতে অর্ধেক ডুবে রয়েছে আমনের ক্ষেত। অনেক এলাকায় পানিতে শাকসবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
চর জয়রাম ওঝার কৃষক রুবেল হোসেন (২৫) বলেন, তৃতীয় দফায় দুই একর জমিতে আমন ধানের চারা লাগিয়েছি। এবার আমনের চারা পাশের গ্রাম থেকে বেশ চড়া দামে কিনতে হয়েছে। আবার নদীর পানি বেড়ে ধানগাছগুলো তলিয়ে গেছে। এবার রোপা আমন না বাঁচলে ধানের আবাদ হবে না।
নগরীর বুড়িরহাট এলাকার কৃষক মোকসেদ আলী (৫৮) বলেন, আমন ধানের গাছগুলো বেশ ভালো রয়েছে। জলাবদ্ধতা কমে যাওয়ায় গাছগুলোও বেশ সতেজ হয়ে উঠেছে। অতিবৃষ্টি না হলে এবারও আমনের আবাদ ভালো হবে।
এদিকে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরেজমিন এসব এলাকা পরিদর্শন করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। তারা রংপুর বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের মধ্যে আমনের চারা, বিভিন্ন শাকসবজির বীজ এবং ফলদ ও ঔষধিগাছের চারা বিতরণ করেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ২২১ একর নাবী জাতের রোপা আমনের বীজতলা তৈরি করে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেছি। প্রত্যেক কৃষককে দেড় শতক জমিতে বীজতলা করে দিয়েছি। ৫০০ ভাসমান আমনের বীজতলা তৈরি করে সেগুলো বিতরণ করা হয়েছে। ৩৬৮ জন কৃষককে ট্রেতে করে রোপা আমন চারা উৎপাদনের কলাকৌশল শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। এভাবে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় পূরণ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ২৮ হাজার ২০০ কৃষককে ১৪ ধরনের সবজি বীজ দেওয়া হয়েছে। বন্যার পানি কমে গেলে যেসব জমিতে আমন হবে না, সেখানে চাষের জন্য তিন হাজার ৯০০ বিঘা জমিতে মাষকলাইয়ের বীজ ও এমওপি-ডিওপি সার বিতরণ করা হবে।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম সমকালকে বলেন, উত্তরাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জন্য বিনা উদ্ভাবিত বিনাশাইল ধান খুব উপযোগী। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই ধানের চারা রোপণ করলেও ফলন স্বাভাবিকই হবে। বিনাশাইলের দুই টন বীজের চারা করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এ ধানের চারা বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিনা-১১ ধান বন্যায় ২০-২৫ দিন ডুবে থাকলেও তেমন ক্ষতি হয় না। বিনার পক্ষ থেকে দ্রুত বর্ধনশীল শাকসবজি বীজ কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চল সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর রংপুর অঞ্চলের রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী এই পাঁচ জেলায় দু'দফা বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এক হাজার ২৬৫ হেক্টর আমন বীজতলা, ১১১ হেক্টর রোপা আমন, চার হাজার ৫৯৮ হেক্টর আউশ, এক হাজার ২৪৪ হেক্টর শাকসবজি, ২৯ হেক্টর ভুট্টা, ৩১ হেক্টর চিনাবাদাম, ৩৭৯ হেক্টর তিল, ২০ হেক্টর কাউন, ১৪০ হেক্টর চিনা, ২০৫ হেক্টর মরিচ, ছয় হাজার ৪৪৩ হেক্টর পাটের জমির ক্ষতি হয়েছে এ বন্যায়। সব মিলিয়ে এক লাখ ৭২ হাজার ৭৯ জন কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে ১৭২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
তবে কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এবার রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। চলতি বছর রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ছয় লাখ পাঁচ হাজার ১৪০ হেক্টর জমি। ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রংপুর অঞ্চলে ছয় লাখ এক হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে আমনের চারা রোপণ করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৯ দশমিক ৪৫ ভাগ।
রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকের জমিগুলো আমন ধানের চারায় হয়ে উঠেছে সবুজের বিছানা। জমিতে সার ছিটাতে কিংবা আগাছা তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা। পোকামাকড় থেকে ধানগাছ রক্ষায় অনেকে ব্যাপক হারে পার্চিং করেছেন। পার্চিংয়ের কঞ্চি কিংবা খুঁটিতে তাই মাঝেমধ্যেই দেখা যাচ্ছে উড়ে এসে ফিঙে পাখিদের বসতে। উঁচু জমিগুলোতে বন্যা ও বর্ষার পানি নেমে গেলেও নদীতীরের চরাঞ্চলের জমিগুলোতে বন্যার পানি কমেনি। গঙ্গাচড়ার পূর্ব ইচলী, শংকরদহ, জয়রাম ওঝাসহ বিভিন্ন গ্রামে এখনও পানিতে অর্ধেক ডুবে রয়েছে আমনের ক্ষেত। অনেক এলাকায় পানিতে শাকসবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
চর জয়রাম ওঝার কৃষক রুবেল হোসেন (২৫) বলেন, তৃতীয় দফায় দুই একর জমিতে আমন ধানের চারা লাগিয়েছি। এবার আমনের চারা পাশের গ্রাম থেকে বেশ চড়া দামে কিনতে হয়েছে। আবার নদীর পানি বেড়ে ধানগাছগুলো তলিয়ে গেছে। এবার রোপা আমন না বাঁচলে ধানের আবাদ হবে না।
নগরীর বুড়িরহাট এলাকার কৃষক মোকসেদ আলী (৫৮) বলেন, আমন ধানের গাছগুলো বেশ ভালো রয়েছে। জলাবদ্ধতা কমে যাওয়ায় গাছগুলোও বেশ সতেজ হয়ে উঠেছে। অতিবৃষ্টি না হলে এবারও আমনের আবাদ ভালো হবে।
এদিকে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরেজমিন এসব এলাকা পরিদর্শন করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। তারা রংপুর বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের মধ্যে আমনের চারা, বিভিন্ন শাকসবজির বীজ এবং ফলদ ও ঔষধিগাছের চারা বিতরণ করেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ২২১ একর নাবী জাতের রোপা আমনের বীজতলা তৈরি করে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেছি। প্রত্যেক কৃষককে দেড় শতক জমিতে বীজতলা করে দিয়েছি। ৫০০ ভাসমান আমনের বীজতলা তৈরি করে সেগুলো বিতরণ করা হয়েছে। ৩৬৮ জন কৃষককে ট্রেতে করে রোপা আমন চারা উৎপাদনের কলাকৌশল শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। এভাবে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় পূরণ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ২৮ হাজার ২০০ কৃষককে ১৪ ধরনের সবজি বীজ দেওয়া হয়েছে। বন্যার পানি কমে গেলে যেসব জমিতে আমন হবে না, সেখানে চাষের জন্য তিন হাজার ৯০০ বিঘা জমিতে মাষকলাইয়ের বীজ ও এমওপি-ডিওপি সার বিতরণ করা হবে।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম সমকালকে বলেন, উত্তরাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জন্য বিনা উদ্ভাবিত বিনাশাইল ধান খুব উপযোগী। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই ধানের চারা রোপণ করলেও ফলন স্বাভাবিকই হবে। বিনাশাইলের দুই টন বীজের চারা করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এ ধানের চারা বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিনা-১১ ধান বন্যায় ২০-২৫ দিন ডুবে থাকলেও তেমন ক্ষতি হয় না। বিনার পক্ষ থেকে দ্রুত বর্ধনশীল শাকসবজি বীজ কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করছি।
মন্তব্য করুন