- বাংলাদেশ
- সেই 'সাধু বাবা'কে হত্যার বর্ণনা দিল জঙ্গি মোজাহিদ
সেই 'সাধু বাবা'কে হত্যার বর্ণনা দিল জঙ্গি মোজাহিদ
লাশ ফেলা হয় শীতলক্ষ্যায়

সিলেটে 'অপারেশন এলিগ্যান্ট বাইট' নামে বিশেষ অভিযানের পরই কাউন্টার টেররিজম ইউনিট জানতে পারে, গাজীপুরে এক ব্যক্তিকে খুন করেছে নব্য জেএমবির জঙ্গিরা। কিন্তু ওই অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিরা এতটুকু তথ্য দিতে পারলেও 'নিহত' ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। কবে, কোথায়, কীভাবে বা কেন সেই খুন- তাও ছিল অন্ধকারে। শেষ পর্যন্ত গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর উত্তরা থেকে নব্য জেএমবির চার জঙ্গিকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে সেই খুনের রহস্য।
নিহত ওই ব্যক্তির নাম সোহেল রানা। তার বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমী বাজারে থাকতেন। মাইজভাণ্ডারী পীরের অনুসারী সোহেল রানাকে বরমী বাজারের লোকজন চিনতেন সুজন নামে। ন্যাড়া মাথায় নানা পুঁতির মালা এবং বিচিত্র রং ও ডিজাইনের পোশাক পরায় বাজারের লোকজন তাকে 'সাধু বাবা' বলেও ডাকতেন। তিনি ওই বাজারে ঘুরে ঘুরে তাবিজ ও হাতের আংটির পাথর বিক্রি করতেন।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলেছেন, গত ১ আগস্ট (আরবি ১০ জিলহজ) সোহেল রানাকে নব্য জেএমবির জঙ্গিরা হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়। গত বৃহস্পতিবার উত্তরা থেকে জঙ্গি মামুন আল মোজাহিদ ওরফে সুমন ওরফে আবু আবদুর রহমান, আল আমিন ওরফে আবু জিয়াদ, মোজাহিদুল ইসলাম ওরফে রোকন ওরফে আবু তারিক ও সারোয়ার হোসেন রাহাতকে গ্রেপ্তারের পর এই তথ্য বেরিয়ে আসে। চারজনই রিমান্ডে রয়েছে।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, গাজীপুরের সোহেল রানাকে নব্য জেএমবির জঙ্গিরা খুন করেছে। রিমান্ডে থাকা চার জঙ্গির কাছ থেকে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু তথ্য মিলেছে।
এদিকে ওই ঘটনায় নিহত সোহেল রানার ভাই সাইফুল ইসলাম জুয়েল গত মঙ্গলবার শ্রীপুর থানায় হত্যা মামলা করতে যান। তবে পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা নিয়েছে। জুয়েল সমকালকে বলেন, পুলিশ হত্যা মামলা নেয়নি। অপহরণ মামলা নিয়েছে।
জানতে চাইলে শ্রীপুর থানায় ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম সারোয়ার সমকালকে বলেন, সোহেল রানা নামের ওই লোক মারা গেছেন কিনা, তা তারা নিশ্চিত নন। প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে, তাকে বরমী বাজার থেকে অপহরণ করা হয়েছে। এ জন্য অপহরণ মামলা নেওয়া হয়েছে। হত্যার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেলে ওই মামলাই হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে।
যে কারণে খুন সাধু বাবা :কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে জঙ্গি মোজাহিদ রিমান্ডে সোহেল রানা ওরফে সাধু বাবাকে খুনের বিষয়ে লোমহর্ষক বিবরণ দিয়েছে। সে জানিয়েছে, অনলাইনের মাধ্যমে সে নব্য জেএমবিতে যোগ দেয়। এরপর তাকে গ্রুপের শীর্ষ নেতারা জিলহজ মাসের ১ তারিখের মধ্যে একটি অপারেশন সম্পন্নের নির্দেশ দেয়। পুলিশ, আওয়ামী লীগ, হিন্দু ধর্মালম্বী ও মাজার পূজারিদের কাউকে খুন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী টার্গেট ঠিক করতে সে তার গ্রুপের সদস্য আল আমিন ও রোকনকে দায়িত্ব দেয়। অপারেশনের টার্গেট হিসেবে মাজারপন্থি বরমী বাজারের সাধু বাবাকে নির্ধারণ করা হয়। এরপর তাকে হত্যা করতে গ্রুপের অপর সদস্য রাহাত ও রোকন মিলে চাকু, রশি, রেইনকোট, হ্যান্ড গ্লাভস, ঘুমের ওষুধসহ প্রয়োজনীয় কিছু সংগ্রহ করে। নির্দেশ অনুযায়ী জিলহজ মাসের শুরুর দিকে অপারেশন সম্পন্ন করতে না পারলেও ১০ তারিখ রাতে সাধু বাবাকে কবিরাজির কথা বলে ডেকে বরমীর মাঝিপাড়া ইটভাটায় নেওয়া হয়।
যেভাবে খুন করা হয় :মোজাহিদ জানিয়েছে, ইটভাটায় নিয়ে সাধু বাবার হাত-পা ও মুখ বাঁধা হয়। এরপর নির্জন স্থানে সে (মোজাহিদ) সাধু বাবাকে জবাই করে। রাহাত এতে সহায়তা করে এবং আল আমিন ভিডিও করে। সাধু বাবার লাশের সঙ্গে ৩০ কেজি ওজনের পাথর বেঁধে শীতলক্ষ্যার কাপাসিয়া অংশে তা ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনার পুরো ভিডিও ও ছবি সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের অনলাইন যোগাযোগমাধ্যমে পাঠানো হয়।
কে এই জঙ্গি মোজাহিদ :আসল নাম মামুন আল মোজাহিদ হলেও সংগঠনে তার নাম আবু আবদুর রহমান। তার বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুরের পাঠানটেক গ্রামে। ৩৪ বছর বয়সী মোজাহিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা রয়েছে। বিভিন্ন মামলায় কারাগারে গিয়ে আলম নামের এক ডাকাতের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা কারাগার থেকে বের হয়ে একসঙ্গে থাকে। ২০০৮ সালের দিকে পুলিশ অস্ত্র ও মাদকের মামলায় আলম ও তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর আরও কিছু মামলা হয় তার নামে।
তবে মোজাহিদের বাবা মোসলেম মাস্টার জানিয়েছেন, তার ছেলে জঙ্গি হতে পারে, তা তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। তার ছেলেকে গত ১৮ আগস্ট ডিবি পরিচয়ে বাসা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল।
নিহত ওই ব্যক্তির নাম সোহেল রানা। তার বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমী বাজারে থাকতেন। মাইজভাণ্ডারী পীরের অনুসারী সোহেল রানাকে বরমী বাজারের লোকজন চিনতেন সুজন নামে। ন্যাড়া মাথায় নানা পুঁতির মালা এবং বিচিত্র রং ও ডিজাইনের পোশাক পরায় বাজারের লোকজন তাকে 'সাধু বাবা' বলেও ডাকতেন। তিনি ওই বাজারে ঘুরে ঘুরে তাবিজ ও হাতের আংটির পাথর বিক্রি করতেন।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলেছেন, গত ১ আগস্ট (আরবি ১০ জিলহজ) সোহেল রানাকে নব্য জেএমবির জঙ্গিরা হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়। গত বৃহস্পতিবার উত্তরা থেকে জঙ্গি মামুন আল মোজাহিদ ওরফে সুমন ওরফে আবু আবদুর রহমান, আল আমিন ওরফে আবু জিয়াদ, মোজাহিদুল ইসলাম ওরফে রোকন ওরফে আবু তারিক ও সারোয়ার হোসেন রাহাতকে গ্রেপ্তারের পর এই তথ্য বেরিয়ে আসে। চারজনই রিমান্ডে রয়েছে।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, গাজীপুরের সোহেল রানাকে নব্য জেএমবির জঙ্গিরা খুন করেছে। রিমান্ডে থাকা চার জঙ্গির কাছ থেকে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু তথ্য মিলেছে।
এদিকে ওই ঘটনায় নিহত সোহেল রানার ভাই সাইফুল ইসলাম জুয়েল গত মঙ্গলবার শ্রীপুর থানায় হত্যা মামলা করতে যান। তবে পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা নিয়েছে। জুয়েল সমকালকে বলেন, পুলিশ হত্যা মামলা নেয়নি। অপহরণ মামলা নিয়েছে।
জানতে চাইলে শ্রীপুর থানায় ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম সারোয়ার সমকালকে বলেন, সোহেল রানা নামের ওই লোক মারা গেছেন কিনা, তা তারা নিশ্চিত নন। প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে, তাকে বরমী বাজার থেকে অপহরণ করা হয়েছে। এ জন্য অপহরণ মামলা নেওয়া হয়েছে। হত্যার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেলে ওই মামলাই হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে।
যে কারণে খুন সাধু বাবা :কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে জঙ্গি মোজাহিদ রিমান্ডে সোহেল রানা ওরফে সাধু বাবাকে খুনের বিষয়ে লোমহর্ষক বিবরণ দিয়েছে। সে জানিয়েছে, অনলাইনের মাধ্যমে সে নব্য জেএমবিতে যোগ দেয়। এরপর তাকে গ্রুপের শীর্ষ নেতারা জিলহজ মাসের ১ তারিখের মধ্যে একটি অপারেশন সম্পন্নের নির্দেশ দেয়। পুলিশ, আওয়ামী লীগ, হিন্দু ধর্মালম্বী ও মাজার পূজারিদের কাউকে খুন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী টার্গেট ঠিক করতে সে তার গ্রুপের সদস্য আল আমিন ও রোকনকে দায়িত্ব দেয়। অপারেশনের টার্গেট হিসেবে মাজারপন্থি বরমী বাজারের সাধু বাবাকে নির্ধারণ করা হয়। এরপর তাকে হত্যা করতে গ্রুপের অপর সদস্য রাহাত ও রোকন মিলে চাকু, রশি, রেইনকোট, হ্যান্ড গ্লাভস, ঘুমের ওষুধসহ প্রয়োজনীয় কিছু সংগ্রহ করে। নির্দেশ অনুযায়ী জিলহজ মাসের শুরুর দিকে অপারেশন সম্পন্ন করতে না পারলেও ১০ তারিখ রাতে সাধু বাবাকে কবিরাজির কথা বলে ডেকে বরমীর মাঝিপাড়া ইটভাটায় নেওয়া হয়।
যেভাবে খুন করা হয় :মোজাহিদ জানিয়েছে, ইটভাটায় নিয়ে সাধু বাবার হাত-পা ও মুখ বাঁধা হয়। এরপর নির্জন স্থানে সে (মোজাহিদ) সাধু বাবাকে জবাই করে। রাহাত এতে সহায়তা করে এবং আল আমিন ভিডিও করে। সাধু বাবার লাশের সঙ্গে ৩০ কেজি ওজনের পাথর বেঁধে শীতলক্ষ্যার কাপাসিয়া অংশে তা ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনার পুরো ভিডিও ও ছবি সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের অনলাইন যোগাযোগমাধ্যমে পাঠানো হয়।
কে এই জঙ্গি মোজাহিদ :আসল নাম মামুন আল মোজাহিদ হলেও সংগঠনে তার নাম আবু আবদুর রহমান। তার বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুরের পাঠানটেক গ্রামে। ৩৪ বছর বয়সী মোজাহিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা রয়েছে। বিভিন্ন মামলায় কারাগারে গিয়ে আলম নামের এক ডাকাতের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা কারাগার থেকে বের হয়ে একসঙ্গে থাকে। ২০০৮ সালের দিকে পুলিশ অস্ত্র ও মাদকের মামলায় আলম ও তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর আরও কিছু মামলা হয় তার নামে।
তবে মোজাহিদের বাবা মোসলেম মাস্টার জানিয়েছেন, তার ছেলে জঙ্গি হতে পারে, তা তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। তার ছেলেকে গত ১৮ আগস্ট ডিবি পরিচয়ে বাসা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল।
মন্তব্য করুন