- বাংলাদেশ
- পেঁয়াজের ঝাঁজে লাগাম
পেঁয়াজের ঝাঁজে লাগাম

রাজধানীর পাইকারি আড়ত শ্যামবাজারে বুধবার টানানো মূল্যতালিকায় পেঁয়াজের দাম কমার লক্ষণ। তবে সর্বক্ষেত্রে বিক্রি হয়নি এই দামে -সাজ্জাদ নয়ন
ভারত রপ্তানি বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে এক দিন অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির পর গতকাল দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম আর বাড়েনি। বরং যারা অস্বাভাবিক দাম বাড়িয়ে ছিলেন, তারাও আগের দিনের চেয়ে কিছুটা কম দামে বিক্রি করেছেন। ফলে পেঁয়াজের ঝাঁজে কিছুটা লাগাম টানা গেছে। রোববার রাতে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের পর এক দিনেই প্রায় দ্বিগুণ দাম বাড়ান ব্যবসায়ীরা। তবে সরকারের নানা পদক্ষেপে বাজারে অস্থিরতা কিছুটা কমেছে। ক্রেতাদের অস্বাভাবিক কেনাকাটাও গতকাল বুধবার কম ছিল।
রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বুধবার প্রতি কেজি ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের দিন কোথাও কোথাও ১২০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি হাইব্রিড বা ক্রস পেঁয়াজ ৯০ টাকা এবং আগে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। কিছু কিছু দোকানে বেশি দামে কেনা পেঁয়াজ বিক্রি শেষ করতে কেজিতে পাঁচ টাকা কমেও বিক্রি করেছে। গত সোমবার প্রতিমুহূর্তে দাম বৃদ্ধির কারণে একেক বাজারে একেক দাম ছিল। বিক্রেতারাও যেমন খুশি তেমন দামে বিক্রি করেন। গতকাল বাজারে এমন অস্থিরতা ছিল না।
এদিকে পেঁয়াজ আমদানিতে যে ৫ শতাংশ শুল্ক্ক রয়েছে, তা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, শুল্ক্ক প্রত্যাহারের আবেদন পুনরায় বিবেচনা করা হবে। সরকারের হাতে যা আছে, সেখানে কিছু করার থাকলে অবশ্যই ছাড় দেওয়া হবে। অতীতেও বিবেচনা করা হয়েছে। এখনও করা হবে। গতকাল বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। পেঁয়াজচাষিদের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিশ্চিত করা ও আমদানি নিরুৎসাহিত করতে চলতি অর্থবছরের বাজেটে পেঁয়াজ আমদানির ওপর ৫ শতাংশ শুল্ক্ক আরোপ করা হয়। সম্প্রতি দাম বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজ আমদানিকারকরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে শুল্ক্ক তুলে নেওয়ার সুপারিশ করেন। তবে এনবিআর সম্প্রতি ওই প্রস্তাব নাকচ করে।
গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দেশে যে পেঁয়াজ মজুদ আছে, তাতে আরও আড়াই থেকে তিন মাসের চাহিদা মিটবে। এর মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে আসবে। ফলে পেঁয়াজের কোনো সংকট হবে না। এদিকে, বাজার অভিযান জোরদার করায় দাম বাড়িয়ে বিক্রির সুযোগ কমেছে। এতে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী বিকল্প দেশ থেকে বড় অঙ্কের পেঁয়াজ আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এসব পেঁয়াজ এলে দাম আরও কমে যাবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
শ্যামবাজারে কমতে শুরু করেছে :রাজধানীর পেঁয়াজের পাইকারি আড়ত শ্যামবাজারে দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। স্মৃতি বাণিজ্যালয়ের রফিকুল ইসলাম জানান, সোমবার ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকার কমে বিক্রি হয়নি। এখন তা ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় ছেড়ে দিচ্ছেন। এই বাজারে ঢুকতেই ফরাশগঞ্জ ক্লাবের সামনে টিসিবির ট্রাকে ৩০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রিতে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। এর বিপরীত পাশে এস এস ট্রেডিংয়ে দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এই বাজারে ক্রস দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০ টাকা। এই বাজারে টানা গত দুই দিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযান জোরদার করায় দাম বাড়ানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। গতকাল বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বেশিরভাগ আড়তে দেখা যায়নি আড়তদারদের। শুধু কর্মচারীরাই পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অভিযানের ভয়ে অনেক আড়তদার আড়তে আসেননি। লালকুটির একটি আড়তের বিক্রয়কর্মী সফিকুর রহমান জানান, কম দামে কেনা পেঁয়াজ চালান অনুযায়ী কম দামে বিক্রি করতে বলেছেন আড়তদার। তিনি গতকাল সকালে ৬০ টাকায় বিক্রি করলেও বিকেলে ৫৫ টাকা করে বিক্রি করেছেন। এই আড়তে গতকাল ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। আড়তে টানানো বোর্ডে মূল্য তালিকায় ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫৫ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দেখা গেছে। এই তালিকার দামে কিছু আড়তে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আবার অনেকে আড়তে এর চেয়ে বাড়িয়ে বিক্রি করেছে। এই বাজারের আড়তদার মো. রাকিব হোসেন মোবাইল ফোনে জানান, সরবরাহ বাড়লে বাজারে পে?ঁয়াজের চড়া দাম স্থায়ী হবে না। আমদানিতে শুল্ক্ক কমানো ও অন্যান্য পর্যায়ে সরকারের সহযোগিতা বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
১৪৭ প্রতিষ্ঠানকে ৭ লাখ টাকা জরিমানা :পেঁয়াজের দামে লাগাম টানতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের অভিযান। অভিযানে ১৪৭টি প্রতিষ্ঠানকে ছয় লাখ ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ঢাকার শ্যামবাজার ও যাত্রাবাড়ী আড়ত, মালিবাগ বাজার এবং ঢাকার বাইরে বিভাগীয় কার্যালয়ের ৪৩টি টিম বিভিন্ন বাজারে তদারকি ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ সময় পেঁয়াজ, আদা, আলু, চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যৌক্তিক মূল্যে বিক্রি ও তদারকি করাসহ বিভিন্ন অপরাধে এ জরিমানা করা হয়। টিসিবির ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম তদারকি করা হয়। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে সারাদেশে পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাইকারি ও খুচরা বাজার তদারকি অব্যাহত থাকবে। পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীকে অবশ্যই পণ্যের কেনাবেচার রশিদ সংরক্ষণ করতে হবে।
ঢাকার বাইরে বরগুনা, হবিগঞ্জ, ঈশ্বরদী, নীলফামারীর জলঢাকা, মৌলভীবাজার, রাজশাহীসহ অন্যান্য জেলায় জরিমানা করা হয়। নাটোরের বাজার পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক মো. শাহারিয়ার জানান, পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ আছে। দাম বাড়ার কারণ নেই। দাম স্থিতিশীল রাখতে বগুড়ায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক। জয়পুরহাটে বাজার নজরদারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
পাবনা বড়বাজারের ঠাণ্ডু সবজি ভান্ডারের মালিক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু সমকালকে বলেন, পাবনার আড়তে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায় বেচাকেনা হয়। এতে দেশি পেঁয়াজের দাম পড়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি। আড়তদার মুন্না মানিক ভান্ডারের মালিক আব্দুল গফুর দাবি করেন, তারা দাম বাড়ান না। মজুদও করেন না। প্রতিদিন সাঁথিয়া অথবা সুজানগরের হাট থেকে যে দামে কেনেন তার সঙ্গে পরিবহন খরচ যোগ করে সামান্য লাভে বিক্রি করেন। তারা কেজিতে সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে সাত টাকা লাভ করেন।
পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ সমকালকে বলেন, গত দুই দিনে শুধু গুজবের ওপর ভিত্তি করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে। কৃষকের ঘরে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। দাম বৃদ্ধিতে কারও কারসাজি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ সমকালকে জানিয়েছেন, ভারত থেকে ২০০ টন পেঁয়াজ বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকার সময় রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার খবর আসে। তারা আশা করছেন নিষেধাজ্ঞা জারির আগে এলসি করা পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হবে। অভিন্ন চিত্র সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে। নিষেধাজ্ঞা জারির আগে এলসি করা দেড়শ' ট্রাক পেঁয়াজ ভারতীয় অংশের ঘোজাডাঙ্গায় অপেক্ষায় রয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বুধবার প্রতি কেজি ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের দিন কোথাও কোথাও ১২০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি হাইব্রিড বা ক্রস পেঁয়াজ ৯০ টাকা এবং আগে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। কিছু কিছু দোকানে বেশি দামে কেনা পেঁয়াজ বিক্রি শেষ করতে কেজিতে পাঁচ টাকা কমেও বিক্রি করেছে। গত সোমবার প্রতিমুহূর্তে দাম বৃদ্ধির কারণে একেক বাজারে একেক দাম ছিল। বিক্রেতারাও যেমন খুশি তেমন দামে বিক্রি করেন। গতকাল বাজারে এমন অস্থিরতা ছিল না।
এদিকে পেঁয়াজ আমদানিতে যে ৫ শতাংশ শুল্ক্ক রয়েছে, তা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, শুল্ক্ক প্রত্যাহারের আবেদন পুনরায় বিবেচনা করা হবে। সরকারের হাতে যা আছে, সেখানে কিছু করার থাকলে অবশ্যই ছাড় দেওয়া হবে। অতীতেও বিবেচনা করা হয়েছে। এখনও করা হবে। গতকাল বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। পেঁয়াজচাষিদের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিশ্চিত করা ও আমদানি নিরুৎসাহিত করতে চলতি অর্থবছরের বাজেটে পেঁয়াজ আমদানির ওপর ৫ শতাংশ শুল্ক্ক আরোপ করা হয়। সম্প্রতি দাম বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজ আমদানিকারকরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে শুল্ক্ক তুলে নেওয়ার সুপারিশ করেন। তবে এনবিআর সম্প্রতি ওই প্রস্তাব নাকচ করে।
গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দেশে যে পেঁয়াজ মজুদ আছে, তাতে আরও আড়াই থেকে তিন মাসের চাহিদা মিটবে। এর মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে আসবে। ফলে পেঁয়াজের কোনো সংকট হবে না। এদিকে, বাজার অভিযান জোরদার করায় দাম বাড়িয়ে বিক্রির সুযোগ কমেছে। এতে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী বিকল্প দেশ থেকে বড় অঙ্কের পেঁয়াজ আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এসব পেঁয়াজ এলে দাম আরও কমে যাবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
শ্যামবাজারে কমতে শুরু করেছে :রাজধানীর পেঁয়াজের পাইকারি আড়ত শ্যামবাজারে দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। স্মৃতি বাণিজ্যালয়ের রফিকুল ইসলাম জানান, সোমবার ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকার কমে বিক্রি হয়নি। এখন তা ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় ছেড়ে দিচ্ছেন। এই বাজারে ঢুকতেই ফরাশগঞ্জ ক্লাবের সামনে টিসিবির ট্রাকে ৩০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রিতে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। এর বিপরীত পাশে এস এস ট্রেডিংয়ে দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এই বাজারে ক্রস দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০ টাকা। এই বাজারে টানা গত দুই দিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযান জোরদার করায় দাম বাড়ানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। গতকাল বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বেশিরভাগ আড়তে দেখা যায়নি আড়তদারদের। শুধু কর্মচারীরাই পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অভিযানের ভয়ে অনেক আড়তদার আড়তে আসেননি। লালকুটির একটি আড়তের বিক্রয়কর্মী সফিকুর রহমান জানান, কম দামে কেনা পেঁয়াজ চালান অনুযায়ী কম দামে বিক্রি করতে বলেছেন আড়তদার। তিনি গতকাল সকালে ৬০ টাকায় বিক্রি করলেও বিকেলে ৫৫ টাকা করে বিক্রি করেছেন। এই আড়তে গতকাল ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। আড়তে টানানো বোর্ডে মূল্য তালিকায় ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫৫ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দেখা গেছে। এই তালিকার দামে কিছু আড়তে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আবার অনেকে আড়তে এর চেয়ে বাড়িয়ে বিক্রি করেছে। এই বাজারের আড়তদার মো. রাকিব হোসেন মোবাইল ফোনে জানান, সরবরাহ বাড়লে বাজারে পে?ঁয়াজের চড়া দাম স্থায়ী হবে না। আমদানিতে শুল্ক্ক কমানো ও অন্যান্য পর্যায়ে সরকারের সহযোগিতা বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
১৪৭ প্রতিষ্ঠানকে ৭ লাখ টাকা জরিমানা :পেঁয়াজের দামে লাগাম টানতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের অভিযান। অভিযানে ১৪৭টি প্রতিষ্ঠানকে ছয় লাখ ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ঢাকার শ্যামবাজার ও যাত্রাবাড়ী আড়ত, মালিবাগ বাজার এবং ঢাকার বাইরে বিভাগীয় কার্যালয়ের ৪৩টি টিম বিভিন্ন বাজারে তদারকি ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ সময় পেঁয়াজ, আদা, আলু, চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যৌক্তিক মূল্যে বিক্রি ও তদারকি করাসহ বিভিন্ন অপরাধে এ জরিমানা করা হয়। টিসিবির ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম তদারকি করা হয়। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে সারাদেশে পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাইকারি ও খুচরা বাজার তদারকি অব্যাহত থাকবে। পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীকে অবশ্যই পণ্যের কেনাবেচার রশিদ সংরক্ষণ করতে হবে।
ঢাকার বাইরে বরগুনা, হবিগঞ্জ, ঈশ্বরদী, নীলফামারীর জলঢাকা, মৌলভীবাজার, রাজশাহীসহ অন্যান্য জেলায় জরিমানা করা হয়। নাটোরের বাজার পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক মো. শাহারিয়ার জানান, পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ আছে। দাম বাড়ার কারণ নেই। দাম স্থিতিশীল রাখতে বগুড়ায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক। জয়পুরহাটে বাজার নজরদারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
পাবনা বড়বাজারের ঠাণ্ডু সবজি ভান্ডারের মালিক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু সমকালকে বলেন, পাবনার আড়তে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায় বেচাকেনা হয়। এতে দেশি পেঁয়াজের দাম পড়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি। আড়তদার মুন্না মানিক ভান্ডারের মালিক আব্দুল গফুর দাবি করেন, তারা দাম বাড়ান না। মজুদও করেন না। প্রতিদিন সাঁথিয়া অথবা সুজানগরের হাট থেকে যে দামে কেনেন তার সঙ্গে পরিবহন খরচ যোগ করে সামান্য লাভে বিক্রি করেন। তারা কেজিতে সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে সাত টাকা লাভ করেন।
পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ সমকালকে বলেন, গত দুই দিনে শুধু গুজবের ওপর ভিত্তি করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে। কৃষকের ঘরে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। দাম বৃদ্ধিতে কারও কারসাজি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ সমকালকে জানিয়েছেন, ভারত থেকে ২০০ টন পেঁয়াজ বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকার সময় রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার খবর আসে। তারা আশা করছেন নিষেধাজ্ঞা জারির আগে এলসি করা পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হবে। অভিন্ন চিত্র সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে। নিষেধাজ্ঞা জারির আগে এলসি করা দেড়শ' ট্রাক পেঁয়াজ ভারতীয় অংশের ঘোজাডাঙ্গায় অপেক্ষায় রয়েছে।
মন্তব্য করুন