- বাংলাদেশ
- চকলেট খাওয়ানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে ৪ শিশুকে ধর্ষণ
চকলেট খাওয়ানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে ৪ শিশুকে ধর্ষণ

চকলেট খাওয়ানোর কথা বলে দুই দফায় চার শিশুকে নিজের ঘরে নিয়ে যায় ৫৫ বছর বয়সী রিকশাচালক সজল মোল্লা। তাকে 'নানা' বলে ডাকত শিশুরা। কিন্তু তিনি ঘরে নিয়ে শিশুদের ওপর চালাতেন পাশবিক নির্যাতন। পরে বিষয়টি কাউকে না বলার ভয়ও দেখাতেন। তাই শিশুরা প্রথমে কাউকে কিছু বলেনি। একপর্যায়ে তারা মায়ের কাছে ঘটনাটি জানায়। রাজধানীর উত্তর গোড়ানের এ ঘটনায় স্বজনরা অভিযোগ জানানোর পর বুধবার মধ্যরাতে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন তিনি। ভুক্তভোগী শিশুদের চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।
খিলগাঁও থানার ওসি ফারুকুল আলম সমকালকে বলেন, ভুক্তভোগী শিশুদের বয়স ৬ থেকে ৯ বছরের মধ্যে। তারা পরিবারের সঙ্গে উত্তর গোড়ানের টিনসেড বাসায় থাকে। তাদের মা-বাবারা শ্রমজীবী। সজল মোল্লা প্রতিবেশি হওয়ায় শিশুরা তাকে চিনত। তাই সে যখন শিশুদের ডেকেছে, তারা যেতে ভয় করেনি। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ভুক্তভোগী শিশু ও স্বজনদের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তরিত তথ্য নিয়েছে। তাতে সজলের অপকর্মের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ওসি জানান, শিশুদের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার দুই শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। কাছাকাছি আরেকদিন অপর দুই শিশুকেও ধর্ষণ করা হয়। তবে তারা দিনটি নিশ্চিত করে বলতে পারেনি।
পুলিশ ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, রিকশা চালানোর পাশাপাশি গ্যারেজে মেরামতের কাজও করে সজল। মঙ্গলবার দুপুরে এক শিশুর মা তার সন্তানকে না পেয়ে এলাকার বিভিন্নজনের ঘরে খোঁজ নিচ্ছিলেন। এসময় সজলের ঘরে ঢুকে তিনি দেখতে পান আপত্তিকর দৃশ্য। তার সন্তানসহ দু'জনকে যৌন নিপীড়ন করতে দেখে তিনি সজলকে গালমন্দ করেন ও শিশুদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। বারবার অভয় দেওয়ার পর ভুক্তভোগীরা জানায়, শুধু তাদের সঙ্গে নয়, অন্য শিশুদের ওপরও এমন নির্যাতন করেছে 'নানা'। পরে অপর দুই শিশুকে খুঁজে নিয়ে তাদের কাছ থেকেও একইরকম বর্ণনা পাওয়া যায়। নানার ভয়ে এতদিন তারা কাউকে কিছু বলেনি বলেও জানায়। একপর্যায়ে স্বজনরা খিলগাঁও থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এক শিশুর মা বাদী হয়ে খিলগাঁও থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন। ভুক্তভোগী দুই শিশুর মা-বাবা জানান, সজল মোল্লা তাদের প্রতিবেশী। তার স্ত্রীও একই বাসায় থাকেন। তবে যে সময়টায় তার স্ত্রী বাসায় থাকেন না, সেই সময়ে এসব অপকর্ম করেছে সজল। শিশুদের চকলেট ও টাকা দেওয়ার কথা বলে সে ঘরে নিয়ে যৌন নিপীড়ন চালায়।
ওসিসির সমন্বয়ক বিলকিস বেগম জানান, পরীক্ষায় শিশুদের ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তবে তারা শারীরিকভাবে ভালো আছে। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, বুধবার মধ্যরাতে উত্তর গোড়ানে অভিযান চালিয়ে সজলকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
মন্তব্য করুন