‘আমি চোর না ডাকাত’, নির্যাতনের বর্ণনায় আদালতে কাঁদলেন এ্যানি

শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। ছবি: সমকাল
আদালত প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৩ | ১৪:৫৩ | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৩ | ১৫:০৫
পুলিশের কাজে বাঁধা ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার মামলায় বিএনপির প্রচার সম্পাাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম রশিদুল আলম এ আদেশ দেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে এ্যানিকে ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিন দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শাহিদী হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন মহানগর আদাতের প্রধান কৌসুলি আব্দুল্লাহ আবু।
শুনানিতে এ্যানি কিছু বলবেন কি না, বিচারক জানতে চাইলে তিনি বিচারকের সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি রাজনীতি করি। কোনো অপরাধ করলে গ্রেপ্তার করবে। কিন্তু আমাকে থানায় নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা কোন যুগে বসবাস করছি। আমি কি চোর, না ডাকাত।’
এ্যানি আরও বলেন, ‘রাত ৩টার সময় তারা এসে আমার বাসার দরজা ভাঙছে। আমি বলেছি আমাদের বাসায় ছোট ছোট বাচ্চা আছে। আমাকে যদি গ্রেপ্তার করতেই হয় আপনারা অপেক্ষা করুন। যেহেতু রাত ৩টা বেজে গেছে আমি ফজরের নামাজ পড়েই আপনাদের সঙ্গে যাব। তারপরও তারা দরজা ভেঙেছে। পাঁচ মাস আগের মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতদিন ধরে আমি রাস্তায় ছিলাম। কয়েকবার ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়েছি, মিটিং করেছি। তখন কেন ধরল না। রাত ৩টায় কেন আমাকে টেনে-হিঁচড়ে বাসা থেকে বের করে আনবে। আমি একজন ওপেন হার্টের রোগী। আমি এর বিচার চাই।’
শুনানিতে এ্যানির পক্ষে মোসলেহ উদ্দিন জসিম, ওমর ফারুক ফারুকী, মহিউদ্দিন চৌধুরী, আব্দুল খালেক মিলন, দেলোয়ার জাহান রুমী ও তাহেরুল ইসলাম তৌহিদসহ অসংখ্য আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২৩ মে ধানমন্ডি সিটি কলেজের সামনে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার নেতাকর্মী জড়ো হয়ে পদযাত্রার সমাপনী বক্তব্য শেষে চলে যাওয়ার আগমুহূর্তে দেশি অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইট-পাটকেল ও ককটেল ইত্যাদি মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রসহ পুলিশের সরকারি কাজে বাধাদান, পুলিশের ওপর আক্রমণ, সরকারকে উৎখাত ও জনসাধারণের জানমালের ক্ষতিসাধন, গণপরিবহন ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করে। এছাড়া ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে ত্রাস সৃস্টি ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড শুরু করে।
এসময় পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের ওপর হামলা করে এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে, যাতে অফিসার ও ফোর্স গুরুতর আহত হয়। পরে সরকারি সম্পত্তি, জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য আসামিদের ধাওয়া করলে তারা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্নভাবে ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করে।