- বাংলাদেশ
- বাংলাদেশেও হয় কোকো ফল
বাংলাদেশেও হয় কোকো ফল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সংরক্ষিত বাগানে ধরেছে কোকো ফল -লেখক
কোকো ফলের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। কিন্তু এমন নামডাক যে ফলের, সে ফল কি আমাদের দেশে পাওয়া যায়? কোকো নাম শুনে এমন প্রশ্ন মনে আসতেই পারে। কারণ আমাদের চারপাশে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ফলের নামের সঙ্গে এর কোনো মিল নেই।
আমরা অনেকেই জানি, কোকো বিদেশি ফল। তবে একেবারে নিরাশ হওয়ারও কারণ নেই। আমাদের দেশেও আছে দু'চারটি গাছ। তা দেখে আপাতত মনকে সান্ত্বনা দেওয়া যাবে, এখানেও কোকো ফল হয়। জানা মতে, ঢাকায় একমাত্র গাছটি আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সংরক্ষিত বাগানে। ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও জার্মপ্লাজম সেন্টারে আছে আরও ১১টি গাছ।
ঢাকার গাছটি বেশ পুরোনো। প্রতি বছর নিভৃতে ফল উপহার দিচ্ছে। সুদূর দক্ষিণ আমেরিকার এ গাছটির বৃদ্ধি ও ফলন এখানেও বেশ স্বাভাবিক। তবে ফলটি নিয়ে আমাদের দেশে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়নি। শুধু কোকো ফলই নয়; এখানে স্ট্রবেরি, রাম্বুটান, ড্রাগন, অ্যাভোকাডো, আলুবোখারা, পিচসহ অনেক বিদেশি ফল বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে জন্মে। এর মধ্যে কোনো কোনোটি বাণিজ্যিকভাবে চাষও হচ্ছে।
কোকো (Theobroma cacao) চিরসবুজ গাছ, দেখতে ঝোপাল, ৭ থেকে ৮ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। কাণ্ড ও ডালপালার গায়ে গুচ্ছবদ্ধ গোলাপি হলুদ রঙের ফুল ধরে। গাছের বয়স সাধারণত ৪ বছর হলে ফল ধরতে শুরু করে। ফুল থেকে পরিণত ফল হতে সময় লাগে প্রায় ৬ মাস। ফলের রং বাদামি, ৩০ সেমি লম্বা ও ১০ সেমি পুরু, বাইরের আবরণ চামড়ার মতো শক্ত। প্রতিটি ফলে ২০ থেকে ৪০টির মতো বীজ থাকে। বীজগুলো প্রথমে কলাপাতায় মুড়িয়ে গাঁজানো হয়। পরে রোদে শুকিয়ে সেদ্ধ করে খোসা ছাড়ালেই পরিস্কার একটি শাঁস পাওয়া যায়। এ শাঁসকে বলা হয় কোকোবিন। কোকোবিনের গুঁড়াই কোকো পণ্য তৈরির কাজে ব্যবহূত হয়।
উৎকৃষ্টমানের চকলেট, মাখন, আইসক্রিম, রুটি, পুডিং, প্রসাধন সামগ্রী ও পানীয় তৈরিতে কোকো ফল ব্যাপক হারে ব্যবহূত হয়। দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে প্রচুর পরিমাণে কোকো উৎপন্ন হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় ১০০ বছর আগে কোকো চাষ শুরু হলেও ফলটি অনেক পুরোনো এবং হাজার হাজার বছর আগে থেকেই প্রকৃতিতে ছিল। 'মায়ানরা' মনে করত, কোকো ঈশ্বর প্রদত্ত ফল। পৃথিবীজুড়ে প্রায় ২৩ জাতের ফল দেখা গেলেও সাধারণত দুটি জাতই প্রধান। সবচেয়ে বেশি কোকো ফল হয় আইভরি কোস্টে; বার্ষিক গড় উৎপাদন ১,৩৩০ টন। তার পরপরই ঘানার অবস্থান, ৭৩৬ টন।
মন্তব্য করুন