- বাংলাদেশ
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূল স্রোতে না আনলে এসডিজি অর্জন সম্ভব নয়
জেপিজিএসপিএইচ'র পলিসি ডায়লগ কর্মশালা
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূল স্রোতে না আনলে এসডিজি অর্জন সম্ভব নয়

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ (জেপিজিএসপিএইচ) এসডিজি এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘ কনভেনশনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার পলিসি ডায়লগ কর্মশালার আয়োজন করেছে।
গত ২৩ নভেম্বর অনলাইন কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী জুয়েনা আজিজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন নেদারল্যান্ড দূতাবাসের হিউম্যানেটারিয়ান এফেয়ারস এন্ড জেন্ডার বিষয়ক ফার্স্ট সেক্রেটারি ড. ভেরোনিকা ফ্লেগার।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেপিজিএসপিএইচ এর ডিন প্রফেসর ড. সাবিনা ফয়েজ রশিদ স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও এই গবেষণার প্রধান গবেষক ড. মো. তানভীর হাসান পলিসি ডায়লগের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। এই পলিসি ডায়লগের উদ্দেশ্য ছিল, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেপিজিএসপিএইচ কর্তৃক বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার (এসআরএইচআর) বিষয়ে দেশব্যাপী পরিচালিত গবেষণা প্রকল্পটির কিছু ফলাফল উপস্থাপন করা। দেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার উন্নয়নে ও নীতি নির্ধারনে এই গবেষনালব্ধ ফলাফল কিভাবে কাজে লাগানো যায় সে সম্পর্কে সরকারী এবং বেসরকারী নীতি নির্ধারকদের মতামত গ্রহণ করা।
গবেষণা প্রকল্পটির অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশের ঢাকাস্হ নেদারল্যান্ড দূতাবাস (দ্যা রয়েল এম্বেসী অব দ্যা কিংডম অব নেদারল্যান্ডস)।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেপিজিএসপিএইচ-এর সিনিয়র সহযোগী গবেষক ফাতেমা আক্তার বনি এই গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন। গবেষণার ফলাফল নিয়ে আলোচনা করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অটিজম এন্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিসএবিলিটিজ (এনডিডি) সেলের প্রধান সমন্বয়কারী (যুগ্মসচিব) ড. এ এম পারভেজ রহিম, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব ড. আশরাফি আহমেদ, অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের কো-ফাউন্ডার মহুয়া পাল।
ড. আশরাফি আহমদ বলেন, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সকলের জন্য একটি অধিকার। সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ তথ্যের পাশাপাশি যৌন ও প্রজনন বিষয়ক সুস্বাস্থ্য উপভোগের অধিকার সবার রয়েছে। ড. এ এম পারভেজ রহিম প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। তার বক্তব্যে সহিংসতার শিকার হওয়া প্রতিবন্ধী নারী ও বালিকাদের মতো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের জন্য সরকারের উদ্যোগের কথা উঠে আসে। মহুয়া পাল কৈশোরে প্রবেশের সাথে সাথে প্রতিবন্ধী কিশোর-কিশোরীদের বিভিন্ন ভোগান্তির বিষয় তুলে ধরে বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যৌন ও প্রজনন অধিকার একটি অনুপস্থিত এজেন্ডা। যা নিশ্চিত করতে হবে।
ড. ভেরোনিকা ফ্লেগার বলেন, বাংলাদেশ ২০০৭ সালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের কনভেনশনকে ইতিমধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বদ্ধপরিকর। এর মধ্যে তিনটি লক্ষ্য সরাসরি যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকারগুলোকে নির্দেশ করে। এসডিজির পাঁচটি গোলে স্পষ্টভাবেই প্রতিবন্ধিতা উল্লেখ করেছে।
জুয়েনা আজিজ বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে কাউকে পিছনে না ফেলার মূল আদর্শটি ১৯৭২ সালেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। যা প্রতিটি নাগরিককে সমান অধিকার এবং মর্যাদা দেয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূল স্রোতে না আনলে আমাদের এসডিজি অর্জন করা সম্ভব নয়।
ব্রাকের সিনিয়র পরিচালক (অ্যাডভোকেসি, টেকনোলজি অ্যান্ড পার্টনারশিপ) কে এ এম মোর্শেদ বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের এসআরএইচআর বিষয়ক প্রয়োজনীয় নীতিমালার খসড়া তৈরির ক্ষেত্রে এই পলিসি ডায়লগ ভূমিকা রাখবে। যা পরবর্তীতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবণা হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।
বিষয় : জেপিজিএসপিএইচ
মন্তব্য করুন