সার্ভার থেকে গ্রাহকের সিম নিবন্ধনের গোপন তথ্য পাচারের অভিযোগে একটি মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির কাস্টমার সার্ভিস সেন্টারের কর্মী রুবেল মাহমুদ অনিক ও পারভীন আক্তার নূপুর নামে এক নারীকে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার হাতিরঝিল থানায় মামলাটি করেন পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ গোলাম আজম। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাটি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এর আগে দায়ের হওয়া আরেকটি মামলায় নূপুরসহ চক্রের চার সদস্যকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হারুন অর রশিদ বলেন, মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিটির কাস্টমার সার্ভিস সেন্টারে কর্মরত রুবেল মাহমুদ অনিক টাকার বিনিময়ে সার্ভার থেকে গ্রাহকের সিম নিবন্ধনের তথ্য প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেয়। এসব তথ্য নিয়ে চক্রের সদস্যরা অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মোবাইল অপারেটর কোম্পানিটি এর দায় এড়াতে পারে না।

এজাহারে বলা হয়, এই চক্রের অন্যতম হোতা পারভীন আক্তার নূপুর, তার বোন শেফালী বেগমসহ চারজনকে সম্প্রতি হাতিরঝিল থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। নূপুরকে একদিনের রিমান্ড নেয় পুলিশ। কার কাছ থেকে গ্রাহকের তথ্য নেওয়া হয় এবং কীভাবে মানুষের কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়, তা পুলিশকে জানিয়েছে নূপুর। তাদের টার্গেট থাকে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কাজ করছে পরিচয় দিয়ে নূপুর টার্গেট ব্যক্তিদের অফিসে বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দেখা করে অনুদান চায়। অনেক সময় চাকরিপ্রার্থী হিসেবে এবং নানা অজুহাতে টার্গেট ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করে সে।

এতে বলা হয়, বিভিন্ন অজুহাতে ওই ব্যক্তিদের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে এবং পরে ফোনে দু-তিন মাস কথা বলে। স্পর্শকাতর কথা বলে তা ফোনে রেকর্ড করে। পরে একটি মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানির কাস্টমার সার্ভিস সেন্টারে কর্মরত রুবেল মাহমুদ অনিকের কাছ থেকে টার্গেট ব্যক্তির সিম নিবন্ধন সংক্রান্ত ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়া হয়। পরে নূপুর টার্গেট ব্যক্তির কাছে ওইসব তথ্য নিয়ে হাজির হয়ে প্রেমের সম্পর্কের দাবি করে। প্রমাণ হিসেবে ফোনের কথোপকথন রেকর্ড সামনে আনে। প্রেমের সম্পর্ক আত্মীয়স্বজনকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা দাবি করে। এমনকি আদালতে মামলা করারও হুমকি দেওয়া হয়। সামাজিকভাবে অপদস্থ হওয়ার আশঙ্কায় অনেকেই নূপুর ও তার চক্রের হাতে চাঁদার টাকা তুলে দিয়েছে।