
আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। হাজার বছরে বাঙালি জাতির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৪ বছরের স্বাধীনতা সংগ্রাম আর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই দিনেই বাঙালি জাতি পেয়েছে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, নিজস্ব মানচিত্র আর চির গৌরবের পতাকা।
একাত্তরের এই দিন বিকেলে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে সগৌরবে উদ্ভাসিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। আর মাত্র কয়েকদিন পর বাঙালির স্বাধীনতা অর্জন ও বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের বছর শুরু হচ্ছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে 'মুজিববর্ষ' চলাকালেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সম্মিলনে জাতি প্রবেশ করছে অনন্য এক অধ্যায়ে।
আজকের দিনে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাবে জাতি। ভাসবে বিজয় আনন্দে। রাজধানী ঢাকা থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত উদযাপিত হবে বিজয়ের উৎসব।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করেছেন অগনিত মুক্তিযোদ্ধা, জাতির সূর্য সন্তানদের। ত্রিশ লাখ শহীদ; যাদের রক্তের বিনিময়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন সম্ভব হয়েছিল, তাদের কথা।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিজয় উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বাণী দিয়েছেন। এ ছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বাণী দিয়েছেন।
জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি :যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপনে এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূিচ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে কভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অন্যান্য বারের তুলনায় কিছুটা সীমিত পরিসরে বিজয় দিবস উদযাপিত হবে। আজ প্রত্যুষে ঢাকার তেজগাঁওয়ে পুরোনো বিমানবন্দর এলাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের অনুষ্ঠানমালার সূচনা ঘটবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। কভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতির কারণে এ বছর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
আজ সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সন্ধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো জাতীয় পতাকাসহ বিভিন্ন পতাকায় সজ্জিত থাকবে।
দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার বাংলাদেশসহ বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার হবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করবে। বাংলাদেশ ডাকবিভাগ স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করবে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হবে।
এ ছাড়া মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। দেশের সব শিশু পার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
অন্যান্য কর্মসূচি :বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিজয় দিবসে বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করবে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারাদেশের সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৯টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন, সকাল সাড়ে ৯টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, কবর জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। বেলা সাড়ে ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সীমিত পরিসরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সকাল সাড়ে ৯টায় টুঙ্গিপাড়ায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আজিজুস সামাদ ডন ও সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম অংশ নেবেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারাদেশে যথাযথ মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপনের জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীসহ সর্বস্তরে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিএনপি সূর্যোদয়ের মুহূর্তে নয়পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করবে। সকাল সাড়ে ৮টায় বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে জ্যেষ্ঠ নেতারা জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে ফিরে শেরেবাংলা নগরে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। বিকেল সাড়ে ৩টায় ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বিজয় দিবসের আলোচনা করবে বিএনপি। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ জেলা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন ও অন্যান্য কর্মসূচির আয়োজন করবে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠন।
বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ বিকেলে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করা হবে। কভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে এবারের আয়োজন সীমিত পরিসরে হচ্ছে।
এছাড়া দেশের রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নানাবিধ কর্মসূচি নিয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাতীয় পার্টি, ১৪ দল, বাম গণতান্ত্রিক জোট, সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, গণফোরাম, বিকল্পধারা, বাংলাদেশ জাসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, বাসদ, এলডিপি, বাংলাদেশ জাসদ, জেএসডি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বাসদ (মার্কসবাদী), জাকের পার্টি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, তাঁতী লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, নজরুল একাডেমি, ছায়ানট, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জাতীয় প্রেস ক্লাব, বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, মহিলা পরিষদ, কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।
একাত্তরের এই দিন বিকেলে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে সগৌরবে উদ্ভাসিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। আর মাত্র কয়েকদিন পর বাঙালির স্বাধীনতা অর্জন ও বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের বছর শুরু হচ্ছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে 'মুজিববর্ষ' চলাকালেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সম্মিলনে জাতি প্রবেশ করছে অনন্য এক অধ্যায়ে।
আজকের দিনে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাবে জাতি। ভাসবে বিজয় আনন্দে। রাজধানী ঢাকা থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত উদযাপিত হবে বিজয়ের উৎসব।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করেছেন অগনিত মুক্তিযোদ্ধা, জাতির সূর্য সন্তানদের। ত্রিশ লাখ শহীদ; যাদের রক্তের বিনিময়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন সম্ভব হয়েছিল, তাদের কথা।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিজয় উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বাণী দিয়েছেন। এ ছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বাণী দিয়েছেন।
জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি :যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপনে এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূিচ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে কভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অন্যান্য বারের তুলনায় কিছুটা সীমিত পরিসরে বিজয় দিবস উদযাপিত হবে। আজ প্রত্যুষে ঢাকার তেজগাঁওয়ে পুরোনো বিমানবন্দর এলাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের অনুষ্ঠানমালার সূচনা ঘটবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। কভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতির কারণে এ বছর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
আজ সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সন্ধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো জাতীয় পতাকাসহ বিভিন্ন পতাকায় সজ্জিত থাকবে।
দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার বাংলাদেশসহ বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার হবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করবে। বাংলাদেশ ডাকবিভাগ স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করবে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হবে।
এ ছাড়া মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। দেশের সব শিশু পার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
অন্যান্য কর্মসূচি :বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিজয় দিবসে বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করবে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারাদেশের সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৯টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন, সকাল সাড়ে ৯টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, কবর জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। বেলা সাড়ে ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সীমিত পরিসরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সকাল সাড়ে ৯টায় টুঙ্গিপাড়ায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আজিজুস সামাদ ডন ও সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম অংশ নেবেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারাদেশে যথাযথ মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপনের জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীসহ সর্বস্তরে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিএনপি সূর্যোদয়ের মুহূর্তে নয়পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করবে। সকাল সাড়ে ৮টায় বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে জ্যেষ্ঠ নেতারা জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে ফিরে শেরেবাংলা নগরে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। বিকেল সাড়ে ৩টায় ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বিজয় দিবসের আলোচনা করবে বিএনপি। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ জেলা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন ও অন্যান্য কর্মসূচির আয়োজন করবে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠন।
বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ বিকেলে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করা হবে। কভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে এবারের আয়োজন সীমিত পরিসরে হচ্ছে।
এছাড়া দেশের রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নানাবিধ কর্মসূচি নিয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাতীয় পার্টি, ১৪ দল, বাম গণতান্ত্রিক জোট, সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, গণফোরাম, বিকল্পধারা, বাংলাদেশ জাসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, বাসদ, এলডিপি, বাংলাদেশ জাসদ, জেএসডি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বাসদ (মার্কসবাদী), জাকের পার্টি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, তাঁতী লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, নজরুল একাডেমি, ছায়ানট, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জাতীয় প্রেস ক্লাব, বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, মহিলা পরিষদ, কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।
মন্তব্য করুন