শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করা নিয়ে আলোচনা
পর্যবেক্ষক দলের সংলাপের সুপারিশ সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ | ০৭:৪৮
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সব স্তরে প্রায় সব বৈঠকে বলে আসছে দেশটি। এদিকে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সবাই সব বৈঠকে এ নিশ্চয়তা দিয়ে আসছেন, আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়, ঢাকার বক্তব্যে কতটা আশ্বস্ত হয়েছে ওয়াশিংটন।
গতকাল সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আলোচনায় মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পর্যবেক্ষক দলের সুপারিশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান একই রকম। তারা চাচ্ছে আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু এবং সহিংসতামুক্ত যেন হয়। নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তা তুলে ধরা হয়েছে। পর্যবেক্ষক দলের সুপারিশে সংলাপের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সংলাপ রাজনৈতিক বিষয়। সংলাপ হবে কি হবে না, এ বিষয়টি নিয়ে আফরিন আক্তার কোনো প্রশ্ন করেননি। নাগরিক সমাজের স্থান সংকুচিত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন করলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, তারা বলেছে, পর্যবেক্ষক দলের সুপারিশগুলো যুক্তরাষ্ট্র সরকার সমর্থন করে। সুপারিশগুলোর বিষয়ে বাংলাদেশ কী করছে বা কী করবে, তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করেননি।
পর্যবেক্ষক দলের সুপারিশ বাংলাদেশ সমর্থন করে কিনা– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা তা এখনও বিচার-বিশ্লেষণ করছি। নির্বাচন কমিশনও এটা দেখছে। এই মুহূর্তে এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো মন্তব্য নেই। যুক্তরাষ্ট্র কি সংলাপ চায়– এ প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সংলাপের কথা যুক্তরাষ্ট্র বলেছে। নতুন করে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ নিয়ে বৈঠকে কোনো পক্ষ কিছু বলেনি। নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় কোনো চুক্তি হবে কিনা– জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ মুহূর্তে নতুন করে কোনো চুক্তির সম্ভাবনা দেখছি না। নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ কিনা– উত্তরে তিনি বলেন, তারা যদি অযাচিতভাবে এ বিষয়ে কথা বলে এবং সেটি যদি আমরা মনে করি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ, তখন আমরা ভিয়েনা সনদের কথা বলেছি। বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে বা উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে যদি কোনো মন্তব্য থাকে অভ্যন্তরীণ আলোচনায়, সেটি আমরা সবসময়ে উত্তর দিতে প্রস্তুত। কিন্তু জনসম্মুখে কিছু বললে আমাদের আপত্তি রয়েছে।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আইনি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে র্যাব ও এর কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। বাহিনী হিসেবে র্যাবের সংস্কারে সময় লাগবে।
র্যাবের কী সংস্কার করা হচ্ছে– এ প্রশ্নের উত্তরে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। র্যাবের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা র্যাবও জানে। যে কোনো প্রতিষ্ঠানেই ধারাবাহিক সংস্কার হতে থাকে। আমি নিশ্চিত, র্যাবও এ নিয়ে কাজ করছে। রোহিঙ্গা নিয়ে আলোচনার বিষয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হয়েছে। চীন-মিয়ানমার-বাংলাদেশের ত্রিপক্ষীয় প্রচেষ্টার বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে কিছু উদ্বেগের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। প্রত্যাবাসন যাতে স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও সুরক্ষিত এবং টেকসই হয়, সেটা চায় তারা। এ ছাড়া রাখাইনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আমলে নিতেও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। ঢাকা জানিয়েছে, তারা এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না, যেখানে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। তবে বাংলাদেশ দ্রুত প্রত্যাবাসন চায়।
- বিষয় :
- জাতীয় নির্বাচন
- পর্যবেক্ষক দল