- বাংলাদেশ
- শিশুসহ কিশোরী মাকে স্বামীর জিম্মায় দিতে নির্দেশ
শিশুসহ কিশোরী মাকে স্বামীর জিম্মায় দিতে নির্দেশ

আড়াই মাস বয়সী শিশুসহ এক কিশোরী মাকে স্বামীর জিম্মায় দিতে চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কিশোরীটি গাজীপুরের শিশু কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালিকা) থাকার সময় গত অক্টোবরে শিশুটির জন্ম হয়।
কিশোরীর স্বামী কামাল মজুমদারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। ওই কিশোরীর মতামত নিয়েই এ আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ আলী আহমেদ খোকন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তারেক আজিজ ও সজল আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
পরে আইনজীবী খোকন জানান, ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে পালিয়ে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের কিশোরী সাগুফতা ইয়াসমীন মেহজাবিন পরিবারের অমতে তার প্রেমিক কামাল মজুমদারকে বিয়ে করেন। বিয়ের কাবিনে মেয়েটির বয়স ১৮ বছর দেখানো হয়। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর হাজীগঞ্জ থানায় ওই কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে তার স্বামীর বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করা হয়। মামলায় মেয়েটির বয়স দেখানো হয়েছে ১৩ বছর ১১ মাস। যদিও জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী, কিশোরীর বয়স ২১ বছর। তবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মেয়েটি তার বয়স ১৬ বছর বলে উল্লেখ করে। মামলার পর ২০২০ সালের ২৬ মে মেহজাবিনের স্বামী কামালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই সঙ্গে মেয়েটিকেও পুলিশের জিম্মায় নেওয়া হয়। তখন কিশোরীটি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল।
গ্রেপ্তারের পর কামালকে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হলে ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠান। ওইদিন কিশোরীটির মা মেয়েকে নিজের জিম্মায় নিতে আবেদন করেন। কিশোরীটি পরিবারের কাছে ফিরতে না চাইলে ট্রাইব্যুনাল তাকে সেফ কাস্টডিতে (গাজীপুরের শিশু কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে) পাঠানোর আদেশ দেন। পরবর্তীতে ট্রাইব্যুনালে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন কিশোরীর স্বামী। ২০ অক্টোবর তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। এ অবস্থায় গত বছরের ২৭ অক্টোবর গাজীপুরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ওই কিশোরী একটি সন্তান প্রসব করে।
এদিকে জামিনে মুক্তি পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানকে নিজের জিম্মায় পেতে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন কিশোরীর স্বামী। গত বছর ১০ নভেম্বর ওই আবেদন নাকচ করেন ট্রাইব্যুনাল। তবে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হলে কিশোরী ও তাদের সন্তানকে আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর কিশোরীকে তার সন্তানসহ স্বামীর জিম্মায় পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মন্তব্য করুন