মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের এক নেতা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে অপসারণের নিন্দা জানাই’।

রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ রয়টার্সকে বলেন, আমরা রোহিঙ্গা সম্প্রদায় মিয়ানমারে গণতন্ত্রকে হত্যার এই ঘৃণ্য চেষ্টার নিন্দা জানাই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন এগিয়ে আসে এবং যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। খবর বিবিসির

এদিকে, মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জন সিফটন। একইসঙ্গে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘও।

মিয়ানমারে আইনের শাসন মেনে চলতে, আইনি প্রক্রিয়ায় চলমান দ্বন্দ্বের নিষ্পত্তিতে এবং বেসামরিক সব নেতা ও অন্য যাদের বেআইনিভাবে আটক করা হয়েছে, সবাইকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে সামরিক বাহিনীকে আহ্বান জানিয়েছে তারা।

সোমবার ভোরে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উয়িন মিন্ট এবং ক্ষমতাসীন দলের সিনিয়র নেতাদের আটকে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। ‘নির্বাচনে জালিয়াতি’র প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

নিজেদের নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে একটি ভাষণে মিয়ানমার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ‘নির্বাচনে জালিয়াতি’র প্রতিক্রিয়ায় এ অভিযান চালানো হয়েছে। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং-এর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে এবং এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হবে। এরপর সামরিক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আর কোনো উত্তর দেননি।

সেনা অভ্যুত্থানের পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নিয়েছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ এবং সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং

সরকার ও প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে কয়েকদিন ধরে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনার পর এ ঘটনা ঘটল। এর আগে ১৯৬২ সালে এক অভ্যুত্থানের পর দেশটি টানা ৪৯ বছর সামরিক বাহিনীর হাতে শাসিত হয়েছে।

গত বছরের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি নিরঙ্কুশ জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬টি আসন। সোমবার থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। তারপর থেকেই দেশটিতে আবার সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছিল।