শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আপিলের রায় ১৭ ফেব্রুয়ারি

২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। আগামি ১৭ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে রায় দেওয়া হবে।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ  সোমবার রায়ের এ দিন ধার্য করেন। আদালত জানিয়েছেন, ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে এ রায়টি বাংলায় দেওয়া হবে। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর আলোচিত এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ মোহাম্মদ শাহীন মৃধা। আর পলাতক আসামির পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন অম্যুল্য কুমার সরকার। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ আহাসান।

২০০০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোটালীপাড়া সফরের অংশ হিসেবে শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল। সমাবেশের দু'দিন আগে ২০ জুলাই কলেজ প্রাঙ্গণে জনসভার প্যান্ডেল তৈরির সময় শক্তিশালী বোমার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। পরে ওই কলেজের উত্তর পাশে সন্তোষ সাধুর দোকানঘরের সামনে থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ৭৬ কেজি ওজনের বোমাটি উদ্ধার করে। পরদিন ২১ জুলাই গোপালগঞ্জ সদর থেকে ৮০ কেজি ওজনের আরও একটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এসব ঘটনায় আলাদা দু'টি মামলা দায়ের করা হয়। ২০১০ সালে মামলা দু'টি ঢাকার ২ নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয় গোপালগঞ্জের আদালত থেকে। ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার আদালত দুই মামলার একটিতে ১০ আসামিকে মৃত্যুণ্ডাদেশ দেন। এছাড়া একজন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তিনজনের ১৪ বছর করে কারাদণ্ড দেওযা হয়। অন্য মামলায় ৯ জনকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেয় আদালত। রায় ঘোষণার এক সপ্তাহের মাথায় বিধি অনুসারে ২৭ আগস্ট বিচারিক আদালত থেকে পাঠানো ডেথ রেফারেন্স, রায় ও মামলার নথিপত্র হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল আপিলের শুনানি শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।

বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক ওরফে মারফত আলী, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম ওরফে রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমন খান, ইউসুফ ওরফে মোসাহাব মোড়ল ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও মাওলানা আব্দুর রউফ ওরফে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে ওমর। 

এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। অন্যদিকে আসামি আনিসুল ইসলাম, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও সারোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন ঢাকার বিচারিক আদালত। অবশ্য একই মামলার প্রধান আসামি জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় তাকে এ মামলা থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আর ২০ বছর করে সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- ইউসুফ ওরফে মোসাহাব মোড়ল ওরফে আবু মুসা হারুন (পলাতক), আনিসুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী খান, ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক ওরফে মারফত আলী, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাহমুদ আজহার ওরফে মামুনুর রশিদ, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম ওরফে রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমন খান, শাহনেওয়াজ ওরফে আজিজুল হক ও শেখ এনামুল হক (পলাতক)।