- বাংলাদেশ
- টিকা গ্রহণে এগিয়ে পুরুষ পিছিয়ে নারীরা
টিকা গ্রহণে এগিয়ে পুরুষ পিছিয়ে নারীরা
চতুর্থ দিনে টিকা নিলেন দেড় লক্ষাধিক মানুষ

টিকা নিয়ে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। আগের দিনের তুলনায় পরের দিন ৫০ থেকে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত টিকাদানের হার বেড়েছে। গণটিকাদান কর্মসূচির চতুর্থ দিন গতকাল বুধবার দেড় লাখের বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। এর আগে সারাদেশে কর্মসূচির প্রথম দিন গত রোববার টিকা নেন ৩১ হাজার ১৬০ জন। দ্বিতীয় দিন এ সংখ্যা ছিল ৪৬ হাজার ৫০৯ জন। তৃতীয় দিন তা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে এক লাখ এক হাজার ৮২ জনে দাঁড়ায়। গতকাল চতুর্থ দিন টিকা নিলেন এক লাখ ৫৮ হাজার ৪৫১ জন। তবে ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি দু'দিনে ৫৬৭ জনকে পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত টিকা নিলেন তিন লাখ ৩৭ হাজার ৭৬৯ জন। টিকা গ্রহণের পর গতকাল মাত্র ৭০ জনের শরীরে সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত টিকা গ্রহণের পর ২৭৭ জনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে তা গুরুতর নয় বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষ। এদিকে, টিকা পেতে নিবন্ধনকারীর সংখ্যাও হু-হু করে বাড়ছে। গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ৯ লাখ ৪০ হাজার মানুষ টিকা পেতে সুরক্ষা ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করেছেন। তবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় টিকা পেতে নিবন্ধনকারীর সংখ্যা প্রায় ১০ লাখের কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখার পরিচালক ডা. মিজানুর রহমান।
টিকা গ্রহণে নারীদের আগ্রহ এখনও কম বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা। চতুর্থ দিন পর্যন্ত টিকাদানের তথ্য-উপাত্ত বিশ্নেষণ করে দেখা যায়, পুরুষদের টিকা গ্রহণের হার ৭২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আর নারীদের টিকা গ্রহণের হার ২৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
নারীরা কেন টিকা গ্রহণে পিছিয়ে রয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম সমকালকে বলেন, নারীদের টিকা গ্রহণের হার কম হওয়ার কারণ সরাসরি বলা যাবে না। তবে কাজকর্ম ও চাকরির কারণে পুরুষরা বেশির ভাগ ঘরের বাইরে অবস্থান করেন। এ কারণে সহজে তারা টিকাকেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিচ্ছেন। এটি একটি কারণ হতে পারে। আবার এখন পর্যন্ত যেসব ক্যাটাগরিতে টিকা দেওয়া হচ্ছে, তাতেও নারীর সংখ্যা পুরুষের তুলনায় কম। গার্মেন্ট ও বেসরকারি সেক্টরে নারীরা বেশি চাকরি করেন। টিকার জন্য এই সেক্টরগুলো এখনও উন্মুক্ত করা হয়নি। এসব সেক্টর উন্মুক্ত হলে তখন হয়তো নারীদের মধ্যে টিকা গ্রহণের হার বাড়বে।
মহাপরিচালক আরও বলেন, আবার দেশে সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, নারীদের তুলনায় করোনায় পুরুষ প্রায় তিন গুণ বেশি আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যুও প্রায় তিন গুণ বেশি পুরুষের। সুতরাং টিকা নেওয়ার বিষয়েও হয়তো এ কারণে পুরুষের আগ্রহ বেশি। তবে আমাদের আহ্বান থাকবে, যার যখন সময় আসবে, তিনি যেন তখন টিকা নিয়ে নেন। কারণ, করোনায় একমাত্র টিকাই আপনাকে সুরক্ষিত রাখবে।
টিকা গ্রহণে এগিয়ে পুরুষ, পিছিয়ে নারীরা :স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখা টিকাদানের বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করছে। এই শাখার হিসাব অনুযায়ী, টিকাদান কর্মসূচির চতুর্থ দিন পর্যন্ত এককভাবে রাজধানী ঢাকার ৪৬ প্রতিষ্ঠানে গতকাল টিকা নিয়েছেন ৪৪ হাজার ৪৪৮ জন। আর ঢাকা জেলাসহ ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় টিকা নিয়েছেন ৮৮ হাজার ৮৩০ জন। ঢাকা বিভাগ টিকাদানে প্রথমে রয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ৬৩ হাজার ২২৪ এবং নারী ২৫ হাজার ৬০৬ জন। পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭১ দশমিক ১৭ শতাংশ আর নারীদের হার ২৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। এই বিভাগে ১১ জেলায় টিকা নিয়েছেন ৭৭ হাজার ৯২৫ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৫৬ হাজার ৯৮৯ জন এবং নারী ২০ হাজার ৯৩৬ জন। পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭৩ দশমিক ১৩ শতাংশ আর নারীদের হার ২৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাজশাহী বিভাগ। এ বিভাগের ৮ জেলায় টিকা নিয়েছেন ৪০ হাজার ৪৮৪ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৩০ হাজার ১ জন এবং নারী ১০ হাজার ৪৮৩ জন। পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭৪ দশমিক ১০ আর নারীদের হার ২৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। টিকাদানে চতুর্থ স্থানে রয়েছে খুলনা বিভাগ। এ বিভাগের ১০ জেলায় টিকা নিয়েছেন ৩৫ হাজার ৮৯০ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২৬ হাজার ৫৫৪ জন এবং নারী ৯ হাজার ৩৩৬ জন। পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭৩ দশমিক ৯৮ আর নারীদের হার ২৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। টিকাদানে পঞ্চম স্থানে রয়েছে রংপুর বিভাগ। এ বিভাগের ৮ জেলায় টিকা নিয়েছেন ৩২ হাজার ৮৭৬ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২৪ হাজার ৭৬৩ জন এবং নারী ৮ হাজার ১১৩ জন। পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭৫ দশমিক ৩২ আর নারীদের হার ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। টিকাদানে ষষ্ঠ স্থানে থাকা সিলেট বিভাগের চার জেলায় টিকা নিয়েছেন ৩১ হাজার ৯৮৯ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২২ হাজার ৫৬৫ জন এবং নারী ৯ হাজার ৪২৪ জন। এ বিভাগে পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭০ দশমিক ৫৩ আর নারীদের হার ২৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ। টিকাদানে সপ্তম স্থানে থাকা ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৬ হাজার ৪৯১ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১২ হাজার ২৭৪ জন এবং নারী ৪ হাজার ২১৭ জন। এ বিভাগে পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭৪ দশমিক ৪২ আর নারীদের হার ২৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। টিকাদানে সর্বশেষ স্থানে থাকা বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৩ হাজার ২৮৪ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৫৬ জন এবং নারী ৩ হাজার ২২৮ জন। এ বিভাগে পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭৫ দশমিক ৭০ আর নারীদের হার ২৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।
চব্বিশ ঘণ্টায় টিকাদান বেড়েছে ৬৯ শতাংশের বেশি :গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে এক লাখ ৫৮ হাজার ৪৫১ জন টিকা নিয়েছেন। তৃতীয় দিনের তুলনায় চতুর্থ দিনে এ হার দাঁড়িয়েছে ৬৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় ১৯ হাজার ১১৫ জন টিকা নিয়েছেন। ঢাকা জেলাসহ ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় ৪০ হাজার ৯০৭ জন টিকা নিয়েছেন। ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় ৭ হাজার ৫৪৯ জন টিকা নিয়েছেন। চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় ৩৭ হাজার ৪৫৮ জন টিকা নিয়েছেন। রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৭ হাজার ৯৭১ জন। রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৪ হাজার হাজার ২২৪ জন। খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৭ হাজার ১১৫ জন। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় টিকা নিয়েছেন ৬ হাজার ১৪৭ জন এবং সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৭ হাজার ৮০ জন।
টিকাকেন্দ্রে নিবন্ধনের ভিড় :টিকাকেন্দ্রে নিবন্ধনের সুযোগ পাওয়া যাবে- সরকারি এ ঘোষণার পর গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর টিকাকেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ওই ভিড় সামলাতে নিবন্ধন বুথের কর্মীদের হিমশিম খেতে হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) টিকাদান তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার তাদের প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ৮৩৪ জন টিকা নিয়েছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রে তাৎক্ষণিক নিবন্ধন নিয়েছেন সাড়ে চারশর মতো মানুষ। প্রত্যেকটি নিবন্ধনের জন্য গড়ে ১০ মিনিট সময় লাগে। কিন্তু জনবল কম থাকায় এটি কঠিন হয়ে পড়ছে।
শ্যামলীতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের উপপরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক ডা. আবু রায়হান জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে মঙ্গলবার ২৩০ জন টিকা নিয়েছেন। এর মধ্যে শতাধিক মানুষ কেন্দ্রে এসে নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই বয়স্ক মানুষ। নিবন্ধনের জন্য হাসপাতালের টিকাকেন্দ্রে তিনটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। নিবন্ধন করতে কর্মীদের একটু কষ্ট হলেও মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। তবে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা আছে এমন ব্যক্তিরা নিবন্ধন করে কেন্দ্রে এলে টিকাদান প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে বলে মনে করেন তিনি।
টিকাদানে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে, আশা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর :টিকা গ্রহীতাদের হার সময়ের সঙ্গে আরও বাড়ছে, মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ টিকাদানে সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সমকালকে বলেন, সরকারের লক্ষ্য ছিল প্রতিদিন এক লাখের মতো মানুষকে টিকার আওতায় আনা। কিন্তু ওই লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি মানুষ টিকা নিচ্ছেন। সুতরাং টিকা নিয়ে সরকারি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।
টিকা গ্রহণে নারীদের আগ্রহ এখনও কম বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা। চতুর্থ দিন পর্যন্ত টিকাদানের তথ্য-উপাত্ত বিশ্নেষণ করে দেখা যায়, পুরুষদের টিকা গ্রহণের হার ৭২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আর নারীদের টিকা গ্রহণের হার ২৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
নারীরা কেন টিকা গ্রহণে পিছিয়ে রয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম সমকালকে বলেন, নারীদের টিকা গ্রহণের হার কম হওয়ার কারণ সরাসরি বলা যাবে না। তবে কাজকর্ম ও চাকরির কারণে পুরুষরা বেশির ভাগ ঘরের বাইরে অবস্থান করেন। এ কারণে সহজে তারা টিকাকেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিচ্ছেন। এটি একটি কারণ হতে পারে। আবার এখন পর্যন্ত যেসব ক্যাটাগরিতে টিকা দেওয়া হচ্ছে, তাতেও নারীর সংখ্যা পুরুষের তুলনায় কম। গার্মেন্ট ও বেসরকারি সেক্টরে নারীরা বেশি চাকরি করেন। টিকার জন্য এই সেক্টরগুলো এখনও উন্মুক্ত করা হয়নি। এসব সেক্টর উন্মুক্ত হলে তখন হয়তো নারীদের মধ্যে টিকা গ্রহণের হার বাড়বে।
মহাপরিচালক আরও বলেন, আবার দেশে সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, নারীদের তুলনায় করোনায় পুরুষ প্রায় তিন গুণ বেশি আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যুও প্রায় তিন গুণ বেশি পুরুষের। সুতরাং টিকা নেওয়ার বিষয়েও হয়তো এ কারণে পুরুষের আগ্রহ বেশি। তবে আমাদের আহ্বান থাকবে, যার যখন সময় আসবে, তিনি যেন তখন টিকা নিয়ে নেন। কারণ, করোনায় একমাত্র টিকাই আপনাকে সুরক্ষিত রাখবে।
টিকা গ্রহণে এগিয়ে পুরুষ, পিছিয়ে নারীরা :স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখা টিকাদানের বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করছে। এই শাখার হিসাব অনুযায়ী, টিকাদান কর্মসূচির চতুর্থ দিন পর্যন্ত এককভাবে রাজধানী ঢাকার ৪৬ প্রতিষ্ঠানে গতকাল টিকা নিয়েছেন ৪৪ হাজার ৪৪৮ জন। আর ঢাকা জেলাসহ ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় টিকা নিয়েছেন ৮৮ হাজার ৮৩০ জন। ঢাকা বিভাগ টিকাদানে প্রথমে রয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ৬৩ হাজার ২২৪ এবং নারী ২৫ হাজার ৬০৬ জন। পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭১ দশমিক ১৭ শতাংশ আর নারীদের হার ২৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। এই বিভাগে ১১ জেলায় টিকা নিয়েছেন ৭৭ হাজার ৯২৫ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৫৬ হাজার ৯৮৯ জন এবং নারী ২০ হাজার ৯৩৬ জন। পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭৩ দশমিক ১৩ শতাংশ আর নারীদের হার ২৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাজশাহী বিভাগ। এ বিভাগের ৮ জেলায় টিকা নিয়েছেন ৪০ হাজার ৪৮৪ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৩০ হাজার ১ জন এবং নারী ১০ হাজার ৪৮৩ জন। পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭৪ দশমিক ১০ আর নারীদের হার ২৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। টিকাদানে চতুর্থ স্থানে রয়েছে খুলনা বিভাগ। এ বিভাগের ১০ জেলায় টিকা নিয়েছেন ৩৫ হাজার ৮৯০ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২৬ হাজার ৫৫৪ জন এবং নারী ৯ হাজার ৩৩৬ জন। পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭৩ দশমিক ৯৮ আর নারীদের হার ২৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। টিকাদানে পঞ্চম স্থানে রয়েছে রংপুর বিভাগ। এ বিভাগের ৮ জেলায় টিকা নিয়েছেন ৩২ হাজার ৮৭৬ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২৪ হাজার ৭৬৩ জন এবং নারী ৮ হাজার ১১৩ জন। পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭৫ দশমিক ৩২ আর নারীদের হার ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। টিকাদানে ষষ্ঠ স্থানে থাকা সিলেট বিভাগের চার জেলায় টিকা নিয়েছেন ৩১ হাজার ৯৮৯ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২২ হাজার ৫৬৫ জন এবং নারী ৯ হাজার ৪২৪ জন। এ বিভাগে পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭০ দশমিক ৫৩ আর নারীদের হার ২৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ। টিকাদানে সপ্তম স্থানে থাকা ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৬ হাজার ৪৯১ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১২ হাজার ২৭৪ জন এবং নারী ৪ হাজার ২১৭ জন। এ বিভাগে পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭৪ দশমিক ৪২ আর নারীদের হার ২৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। টিকাদানে সর্বশেষ স্থানে থাকা বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৩ হাজার ২৮৪ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৫৬ জন এবং নারী ৩ হাজার ২২৮ জন। এ বিভাগে পুরুষের টিকা গ্রহণের হার ৭৫ দশমিক ৭০ আর নারীদের হার ২৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।
চব্বিশ ঘণ্টায় টিকাদান বেড়েছে ৬৯ শতাংশের বেশি :গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে এক লাখ ৫৮ হাজার ৪৫১ জন টিকা নিয়েছেন। তৃতীয় দিনের তুলনায় চতুর্থ দিনে এ হার দাঁড়িয়েছে ৬৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় ১৯ হাজার ১১৫ জন টিকা নিয়েছেন। ঢাকা জেলাসহ ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় ৪০ হাজার ৯০৭ জন টিকা নিয়েছেন। ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় ৭ হাজার ৫৪৯ জন টিকা নিয়েছেন। চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় ৩৭ হাজার ৪৫৮ জন টিকা নিয়েছেন। রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৭ হাজার ৯৭১ জন। রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৪ হাজার হাজার ২২৪ জন। খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৭ হাজার ১১৫ জন। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় টিকা নিয়েছেন ৬ হাজার ১৪৭ জন এবং সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় টিকা নিয়েছেন ১৭ হাজার ৮০ জন।
টিকাকেন্দ্রে নিবন্ধনের ভিড় :টিকাকেন্দ্রে নিবন্ধনের সুযোগ পাওয়া যাবে- সরকারি এ ঘোষণার পর গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর টিকাকেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ওই ভিড় সামলাতে নিবন্ধন বুথের কর্মীদের হিমশিম খেতে হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) টিকাদান তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার তাদের প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ৮৩৪ জন টিকা নিয়েছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রে তাৎক্ষণিক নিবন্ধন নিয়েছেন সাড়ে চারশর মতো মানুষ। প্রত্যেকটি নিবন্ধনের জন্য গড়ে ১০ মিনিট সময় লাগে। কিন্তু জনবল কম থাকায় এটি কঠিন হয়ে পড়ছে।
শ্যামলীতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের উপপরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক ডা. আবু রায়হান জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে মঙ্গলবার ২৩০ জন টিকা নিয়েছেন। এর মধ্যে শতাধিক মানুষ কেন্দ্রে এসে নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই বয়স্ক মানুষ। নিবন্ধনের জন্য হাসপাতালের টিকাকেন্দ্রে তিনটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। নিবন্ধন করতে কর্মীদের একটু কষ্ট হলেও মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। তবে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা আছে এমন ব্যক্তিরা নিবন্ধন করে কেন্দ্রে এলে টিকাদান প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে বলে মনে করেন তিনি।
টিকাদানে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে, আশা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর :টিকা গ্রহীতাদের হার সময়ের সঙ্গে আরও বাড়ছে, মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ টিকাদানে সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সমকালকে বলেন, সরকারের লক্ষ্য ছিল প্রতিদিন এক লাখের মতো মানুষকে টিকার আওতায় আনা। কিন্তু ওই লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি মানুষ টিকা নিচ্ছেন। সুতরাং টিকা নিয়ে সরকারি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।
মন্তব্য করুন