যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। মার্কিন সেনাবাহিনী প্রধানের আমন্ত্রণে গত ২৯ জানুয়ারি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছিলেন। শুক্রবার সকাল ১০টায় তিনি দেশে ফিরেন।

শনিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়। সফরকালে তিনি মার্কিন সেনাপ্রধানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং মার্কিন সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা ও প্রশিক্ষণ সুবিধাদি পরিদর্শন করেন। এছাড়া তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।

গত ২ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী প্রধান ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি, অফিস অব সেক্রেটারি অব ডিফেন্স ফর পলিসি সাউথ অ্যান্ড সাউথইস্ট এশিয়া এবং ডিফেন্স সিকিউরিটি কো-অপারেশনের প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতামূলক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে সেনাবাহিনী প্রধান আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এসময় বঙ্গবন্ধু হত্যার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি রাশেদ চৌধুরীকে দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে জেনারেল আজিজ বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি মার্কিন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ম্যাকনভিলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় ১৯ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শনসহ গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এছাড়াও আর্লিংটন ন্যাশনাল সেমেটারিতে গার্ড অব অনার প্রদানকালে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। পরে তিনি মার্কিন সেনাপ্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। সাক্ষাৎকালে তিনি দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যকার সম্পর্ক আরও জোরদার এবং পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

গত সপ্তাহে সেনাবাহিনী প্রধান জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের মিলিটারি এডভাইজার, আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময় করেন। আলোচনার আগে জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পেশাগত দক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। আলোচনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নতুন একটি হেলিকপ্টার ইউনিট মিশন এলাকায় (গাও, মালিতে) মোতায়েনের জন্য এবং ডিআর কঙ্গোতে ১৩ সদস্যের একটি মিলিটারি পুলিশ ডিটাচমেন্ট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এছাড়াও বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের মিশন এলাকায় যাওয়ার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ব্যবহার, শান্তিরক্ষা মিশনে নারী শান্তিরক্ষীদের অবদানের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং বিভিন্ন মিশন এলাকায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে মতবিনিময় হয়।

আইএসপিআর বলছে, সেনাবাহিনী প্রধান জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জোরালো ভূমিকা বাড়ানোর ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং নীতিনির্ধারণী/ফোর্স কমান্ড পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে সেনাবাহিনী প্রধানের এ সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।