- বাংলাদেশ
- ২০ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা জুনে
উপাচার্যদের সভায় সিদ্ধান্ত
২০ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা জুনে

ফাইল ছবি
দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে গুচ্ছভুক্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে জুনের শেষ দুই শনিবার এবং জুলাইয়ের প্রথম দুই শনিবার বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য শাখার পরীক্ষা হবে।
বুধবার সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের (ভিসি) সংগঠন 'বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদে'র ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গুচ্ছভুক্ত সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ২৯ মে। এছাড়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ১০ জুন এবং রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট,কুয়েট, চুয়েট) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১২ জুন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২০ জুন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও চুয়েট ভিসি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল আলম সমকালকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ভার্চুয়াল সভায় বসেছিলেন উপাচার্যরা। সভায় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সম্ভাব্য ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তাবিত তারিখ সভায় উপস্থাপন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল কিংবা ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত কমিটির সভায় এ তারিখের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিষদের সভায় দেশের সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ জানান। এরপরই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
জানা গেছে, এবার দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বাদে বাকিরা বড় তিনটি গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে কারণে ভর্তি পরীক্ষা অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করছেন সংশ্নিষ্টরা।
এছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে বিশেষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি কীভাবে নিশ্চিত হবে সে বিষয়েও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপাচার্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্য ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, পরিষদের সভার ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এছাড়া হল খুললে একরকম, আর আর না খুললে অন্যরকম ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হবে ভর্তি পরীক্ষায়।
এ প্রসঙ্গে বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন বলেন, বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আলাদা কমিটি রয়েছে, তারা কাজ করছে।
চলতি বছর ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েট এবার স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। আর ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একটি গুচ্ছে একসঙ্গে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি রুয়েট, চুয়েট ও কুয়েট একটি গুচ্ছে এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আরেকটি গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা হবে। এর বাইরে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে।
সারাদেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও তার মধ্যে মাত্র ২০টি গুচ্ছ পদ্ধতিতে এলো। গত কয়েক বছরের মত এবারও পুরনো ও বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের মত করে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
গুচ্ছপদ্ধতির (ক্লাস্টার সিস্টেম) পরীক্ষায় এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে এখনো রাজি করাতে পারেনি সরকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে নিজস্ব নিয়মে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
ভর্তিচ্ছু লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি ও দুর্ভোগ কমাতে সরকার দীর্ঘদিন থেকেই চেষ্টা করে আসছে, ক্লাস্টার সিস্টেমে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার। এ পদ্ধতিতে একই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হতে একজন ভর্তিচ্ছুকে একটি মাত্র পরীক্ষা দিতে হবে। অভিযোগ আছে, ভর্তি ফরম বিক্রির কোটি কোটি টাকার আয়ের সুযোগ হাত ছাড়া করতে করতে চায় না বলেই বহু বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের মত করে ভর্তি পরীক্ষা নিতে চায়।
বর্তমানে দেশে ৪৬টি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও ৩৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য সরাসরি শিক্ষার্থী ভর্তি করা ৩৯টিতে আসন রয়েছে প্রায় ৬০ হাজার।
করোনার কারণে এবার পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসির মূল্যায়ন হওয়ায় ১৩ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করবেন। যাদের অধিকাংশের লক্ষ্যই থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। এর সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকায় গত বছর পাস করা শিক্ষার্থীদের অনেকেই ভর্তি পরীক্ষা দেবে। ফলে ভর্তিতে বিরাট চাপ পড়বে।
মন্তব্য করুন