- বাংলাদেশ
- জাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
জাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
খাবার সংকট

ছবি: সমকাল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর গ্রামবাসীর অতর্কিত হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার বিকেলে আশুলিয়া থানায় এ মামলা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের (রহিমা কানিজ) নির্দেশে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা করেছি। মামলার নম্বর ৫৯। তবে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুর রশিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিয়ে গেছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে মহামারির কারণে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর থেকে বন্ধ রয়েছে হলের ডাইনিং, ক্যান্টিন ও ক্যাম্পাসের খাবারের দোকানগুলো। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গেরুয়া এলাকায় সংঘর্ষের জেরে সেখানেও বন্ধ আছে সব দোকান। এ পরিস্থিতিতে তীব্র খাবার সংকটে তালা ভেঙে হলে ঢুকেছেন শিক্ষার্থীরা। খাবারের সংকট নিরসনে দ্রুত ক্যাম্পাসের ভেতরের খাবার দোকানগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আবার দীর্ঘদিন অভাব অনটনে দিন কাটানো ক্যাম্পাসের দোকানিরাও অপেক্ষায় আছেন দোকার খোলার জন্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এনামুল হক বলেন, 'শনিবার কোনোরকমে সাভারে গিয়ে খেয়েছি। হলের ডাইনিং-ক্যান্টিন এবং বটতলার দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে। এরকম বন্ধ থাকলে খাবার সংকটে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ব।'
অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস সংলগ্ন ইসলামনগর, আমবাগান ও সাভার গিয়ে রাতের খাবার খেয়েছেন। সেখানেও ছিল খাবারের স্বল্পতা। খাবার না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী হলের মাঠে ও বাইরে রান্না করে খেয়েছেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি গেট, প্রান্তিক গেট, ইসলামনগর ও আমবাগান এলাকায় কিছু দোকান রয়েছে। সেখানেও এখন খাবার সংকট। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ায় এমন হয়েছে বলে জানান দোকানিরা।
দোকান খোলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা দোকান মালিক সমিতির সেক্রেটারি হযরত আলী বলেন, হোটেল খোলার ব্যাপারে মঙ্গলবার তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে উপাচার্য সরকারের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আজ হয়তো সরকার থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে।
সংঘর্ষের পর থেকে গেরুয়া এলাকার সব খাবার দোকান বন্ধ রয়েছে। আতঙ্কে দোকান মালিকরা। সংঘর্ষে ভেঙেছে কয়েকটি দোকান। পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে দোকানের সরঞ্জাম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হোটেলের মালিক জানান, তার হোটেল গেরুয়া ও ক্যাম্পাসের সংযোগস্থলে। সংঘর্ষে দোকানের টেবিল-চেয়ার ও অন্যান্য সরঞ্জাম ভেঙে ও পুড়িয়ে ফেলেছে। আতঙ্কে দিন কাটছে। আবার কোন সময় গণ্ডগোল বাধে, তাই দোকান খুলছেন না।
এসব সংকটের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে তালা ভেঙে হলে থাকতে শুরু করেছেন ছাত্ররা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল খোলার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
মন্তব্য করুন