কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে শাহবাগে মশাল মিছিলকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় আটক সাতজনের বিরুদ্ধে পুলিশ সদস্যদের ‘হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।

শুক্রবার মধ্যরাতে শাহবাগ থানায় মামলাটি করা হয়। এ মামলায় গ্রেপ্তার সাতজনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মাহবুব আলম।

প্রায় ছয় মাস আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে ছিলেন মুশতাক আহমেদ। বুধবার বন্দি অবস্থায় তিনি মারা যান। এর প্রতিবাদে শুক্রবার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বামধারার ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা সন্ধ্যায় টিএসসি থেকে মশাল মিছিল নিয়ে শাহবাগে এলে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।

এ সময় পুলিশের লাঠিপেটায় তাদের ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের অভিযোগ, রাস্তার পাশের ল্যাম্পপোস্ট বন্ধ করে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। অপরদিকে আন্দোলনকারীদের ‘হামলায়’ ১৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের বিষয়ে পুলিশের রমনা জোনের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সন্ধ্যার দিকে টিএসসি থেকে মশাল মিছিল নিয়ে জাদুঘরের সামনে এলে আমরা তাদের ইউ টার্ন নিতে বলি। পরে তারা মশালের লাঠি দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। তখন পুলিশ আত্মরক্ষার্থে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এদের একটা গ্রুপ বামপাশ দিয়ে চলে যায়, আরেকটা গ্রুপ পেছনে ফিরে পুলিশের ওপর অসংখ্য ইটপাটকেল ছুড়ে। এতে আমাদের ১২ থেকে ১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আমার নিজেরও পায়ে আঘাত লেগে ব্লিডিং হয়েছে।

আহত বিক্ষোভকারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা জানি না তারা কীভাবে আহত হয়েছেন। কিন্তু তারা যেভাবে ইটপাটকেল মেরেছেন, তাদের ইটপাটকেলেই তারা আহত হয়ে থাকতে পারেন। পুলিশ শুধু তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে। তারা যখন ইটপাটকেল মারছেন, তখন পুলিশ চার থেকে পাঁচটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।

তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ওই ঘটনার আলোকচিত্রে পুলিশ সদস্যদের লাঠিপেটা করতে দেখা গেছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন, আমজিন হায়দায় (২২), নজিব আমিন চৌধুরী (২৭), তানজিমুর রহমান (২২), আকিব আহমেদ (২২), আরাফাত (২৬), নাজিফা জান্নাত (২৪) ও জয়তী চক্রবর্তী (২৩)।

পরিদর্শক মাহবুব বলেন, আহত পুলিশ সদস্যদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আর গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে পুলিশকে হত্যার চেষ্টা, রক্তাক্ত জখম করা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।