চিম্বুকে আগুনে শেষ ম্রোদের স্বপ্ন, পুড়ল ১০০ একর ফলদ বাগান
বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তরা- সংগৃহীত
বান্দরবান প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২১ | ০৮:৩৪ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর -০০০১ | ০০:০০
বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে আগুনে পুড়ে গেছে ম্রোদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন। যে বাগানের ওপর নির্ভর ছিল তাদের প্রধান আয়ের উৎস, পুড়ে গেছে তা। চিম্বুকের রামরি পাড়ার ৪০ পরিবারের প্রায় ১০০ একর জায়গার সম্পূর্ণ বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বাইট্টা পাড়া ও রাংলাই চেয়ারম্যান পাড়ার বাগানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সঙ্গে প্রায় ৬ হাজার ফুট পানির পাইপ লাইনও পুড়ে গেছে। মঙ্গলবার দুপুরে আগুন লেগে বুধবার পর্যন্ত জ্বলেছে।
রামরি পাড়ার কার্বারি (পাড়া প্রধান) মেনরুম ম্রো জানান, ম্রোরা সাধারণত দুপুরের দিকে বাগানে বা জুমে আগুন দেয় না। রাতের বেলা আগুন দেয় আশপাশের লোকেদের জানিয়ে। আর আগুন দিলেও আগুন যাতে অন্যত্র ছড়িয়ে না পড়ে তারজন্য পার্শ্ববর্তী জায়গা পরিষ্কার করে রাখা হয়।
তিনি জানান, রামরি পাড়ার ৫৯ পরিবারের মধ্যে ৪০ পরিবারের প্রায় ১০০ একর বাগান আগুনে পুড়ে গেছে। ফলদ বাগানে আম, লিচু, বড়ই, ড্রাগন ফলের গাছসহ বিভিন্ন জাতের ফল গাছ ছিল। তার নিজের ২০ একর জায়গার ফলদ বাগান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।
রামরি পাড়ার মেনরুম ম্রো জানান, তার নিজের ১৫ একর জায়গার ফলদ বাগান পুড়ে গেছে। যেটা ছিল তার পরিবারের প্রধান আয়ের উৎস। এই আগুন নাশকতা হতে পারে। কারণ গত কয়েক যুগেও এভাবে আগুন লেগে ক্ষতি হয়েছে এমন ঘটনা ঘটেনি।
সদর উপজেলা টংকাবতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফ্লোকান ম্রো বলেন, কীভাবে আগুন লেগেছে, তা এখনো জানা যায়নি। বাইট্টা পাড়া ও রাংলাই চেয়ারম্যান পাড়ার লোকেদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও জান যায়নি। তিনি বলেন, সিংহভাগ ম্রো এই ফলদ বাগানের ওপর নির্ভরশীল। সেই বাগান আগুনে পুড়ে আজ নিঃস্ব তারা।
রুইয়াং ম্রো বলেন, তাদের রামরি পাড়ার লোকজনের পানির প্রধান উৎস ছড়া বা ঝিরি। ঝিরিতে ছোট বাঁধ দিয়ে সেখান থেকে জিএফএসের (গ্রাফিটি ফ্লো সিস্টেম) মাধ্যমে পাড়ায় পানি নিয়ে আসা হয়। সেই পানির পাইপ লাইনের প্রায় ৬ হাজার ফুট পুড়ে গেছে। এখন পানির সংকটে ভুগছি আমরা।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌসিফ আহমেদ জানান, তিনিও চেয়ারম্যানের মাধ্যমে জেনেছেন। কত পরিবার, কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানা যায়নি। বৃহস্পতিবার আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানা যাবে।