- বাংলাদেশ
- এবার ত্রাণ তৎপরতা কম
এবার ত্রাণ তৎপরতা কম

লকডাউন চললেও রাজধানীর রাস্তায় বেড়েছে যান চলাচল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বালাই নেই মানুষের মধ্যে। এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে মাইকিংও করতে হচ্ছে পুলিশকে। মঙ্গলবার পান্থপথের ছবি- মাহবুব হোসেন নবীন
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে দেশজুড়ে চলমান লকডাউনে এবার রাজধানীতে ত্রাণ তৎপরতা নেই বললেই চলে। পাশাপাশি পথেঘাটে সাহায্যপ্রার্থীও কম।
সীমিত পর্যায়ে এখনও যেসব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী ও ব্যক্তি ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের মতে, প্রথমত. এবার সংক্রমণের ভয়াবহতা অনেক বেশি হলেও আতঙ্ক ও উদ্বেগ অনেক কম। দ্বিতীয়ত. গত বছর ত্রাণ বিতরণে উদ্যোগী অনেকেই এবার আর্থিকভাবে আগের মতো শক্ত অবস্থানে নেই। কারণ গত এক বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধি অনেক সীমিত হয়ে পড়ায় অনেকেরই অন্যকে সাহায্যের সামর্থ্য কমে গেছে। তৃতীয়ত. গত বছর হঠাৎ ঘোষণায় লকডাউন শুরু হওয়ায় মানুষ প্রস্তুতি নিতে পারেনি; কিন্তু এবার ভাসমান ও স্বল্প আয়ের মানুষজনের একটি বড় অংশই গত বছরের অভিজ্ঞতায় আগেই ঢাকা ছেড়ে গ্রামে চলে গেছে। তারা বলছেন, এসব কারণে রাস্তায় রাস্তায়\হসাহায্যপ্রার্থীর সংখ্যা এবার কম। যদিও অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়ছেন এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন।
গত বছর ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে লকডাউন শুরু হয়েছিল। টানা দু'মাসের লকডাউনে অসংখ্য সামাজিক সংগঠনের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়েও অনেকে ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা চালিয়েছেন; কিন্তু এবার তেমন উদ্যোগ অনুপস্থিত। গত বছরের লকডাউনের শুরুতেই ঢাকা শহরজুড়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সবার আগে ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়েছিল। তাদের অসংখ্য সদস্য আক্রান্ত হওয়ার কারণে এবার তারা ত্রাণ বিতরণে নেই।\হঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কাউন্সিলরদের কাছেও কোনো আর্থিক সহায়তা পৌঁছেনি। তবে ব্যক্তি পর্যায়ে অনেক এলাকায় কাউন্সিলররা সীমিত পর্যায়ে ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন, সঙ্গে আছি, মাস্তুল ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এবার ঢাকার রাজপথে ত্রাণ বিতরণ চালানো হচ্ছে। তবে তাদের তৎপরতাও গত বছরের তুলনায় অনেক কম।\হএ বিষয়ে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের কমিউনিকেশন হেড সালমান খান জানান, গতবারের তাদের কোনো স্বেচ্ছাসেবী কর্মীই করোনায় আক্রান্ত হননি। কিন্তু এবার এরই মধ্যে ৭-৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং একজন মারা গেছেন। তিনি জানান, আগেরবার অনেক অনুদান এলেও এবার অনুদানের পরিমাণ কম। গত বছরে দিনে ২৪ হাজার মানুষকে তারা রান্না করা খাবার বিতরণ করেছেন। এবার দিনে ১০ হাজার মানুষকে দিচ্ছেন।\হরাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সালমান খান বলেন, গতবার মানুষ লকডাউনের নির্দেশনা যতটা মেনেছে, এবার তেমন দেখা যাচ্ছে না। রাজধানীর বিভিন্ন বস্তি এলাকায়ও পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চোখে পড়েছে। প্রধান সড়কগুলোতে মানুষ চলাচল কম থাকলেও ভেতরের দিকে দোকানপাট পুরোপুরি খোলা। মানুষজন মাস্ক না পরেই এসব দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছে, খাবার খাচ্ছে। ঢাকার সবচেয়ে বড় বস্তি কড়াউলে এমন চিত্র দেখা গেছে বলে দাবি করেন তিনি।
গত বছর পুলিশের ভূমিকা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু এবার পুলিশ সদস্যরা কেন মাঠে নেই- এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, গতবছর পুলিশের অসংখ্য সদস্য ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু তাকে তো কোনো লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে পারছি না। তাহলে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করব কী করে? কীভাবে তাকে ত্রাণ দিয়ে মাঠে পাঠাব? এসব কারণেই এবার ত্রাণ বিতরণের কাজ থেকে নিজেদের বিরত রেখেছে পুলিশ।
পুলিশ কমিশনার বলেন, গতবারের তুলনায় এবার পুলিশ সদস্য আক্রান্তের হার একশ ভাগের এক ভাগেরও কম। একজন পুলিশ সদস্য ত্রাণ বিতরণে গিয়ে আক্রান্ত হলে আমাদের করার কিছুই থাকে না। যদি কেউ প্রাণ হারান, তার পরিবারের কাছে জবাব দেওয়ার উপায় থাকে না। ত্রাণ বিতরণ সমন্বয়ের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি জেলায় একজন করে সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারাই এখন এ বিষয়ে কাজ করবেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান মনে করেন, গত বছরের মার্চে লকডাউন শুরুর পরই মানুষ যার যা সামর্থ্য আছে তা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলেন; কিন্তু গত এক বছরে মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেননি। যেসব মানুষ গতবার সাহায্য নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন, তারাই এবার টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছেন। ফলে তৎপরতা কমে গেছে।
কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান জানান, সরকারি বা সিটি করপোরেশন থেকেও কোনো বরাদ্দ বা সহায়তা এখনও তাদের হাতে পৌঁছায়নি। ব্যক্তি উদ্যোগে তারা ত্রাণ বিতরণ করছেন। তার নির্বাচনী এলাকায় তিনি বাড়ি বাড়ি বিনামূল্যে সবজি বিতরণ করছেন। কারণ কাঁচাবাজার থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে।\হগত বছর লকডাউনে ত্রাণ বিতরণের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করা সামাজিক সংগঠন 'সঙ্গে আছি'র সভাপতি জসিম উদ্দীন খানও একই ধরনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, গতবার তারা প্রায় ৫০ লাখ টাকার ত্রাণ বিতরণ করেছিলেন। তখন রাস্তায় প্রচুর ক্ষুধার্ত মানুষের দেখা পাওয়া যেত। এবারের পরিস্থিতি পুরো ভিন্ন। আর্থিক অনুদান তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। লকাডাউনে গতবারের দুঃসহ পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে এবার ভাসমান জনগোষ্ঠীর অনেকেই আগেভাগেই গ্রামে চলে গেছে।
সীমিত পর্যায়ে এখনও যেসব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী ও ব্যক্তি ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের মতে, প্রথমত. এবার সংক্রমণের ভয়াবহতা অনেক বেশি হলেও আতঙ্ক ও উদ্বেগ অনেক কম। দ্বিতীয়ত. গত বছর ত্রাণ বিতরণে উদ্যোগী অনেকেই এবার আর্থিকভাবে আগের মতো শক্ত অবস্থানে নেই। কারণ গত এক বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধি অনেক সীমিত হয়ে পড়ায় অনেকেরই অন্যকে সাহায্যের সামর্থ্য কমে গেছে। তৃতীয়ত. গত বছর হঠাৎ ঘোষণায় লকডাউন শুরু হওয়ায় মানুষ প্রস্তুতি নিতে পারেনি; কিন্তু এবার ভাসমান ও স্বল্প আয়ের মানুষজনের একটি বড় অংশই গত বছরের অভিজ্ঞতায় আগেই ঢাকা ছেড়ে গ্রামে চলে গেছে। তারা বলছেন, এসব কারণে রাস্তায় রাস্তায়\হসাহায্যপ্রার্থীর সংখ্যা এবার কম। যদিও অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়ছেন এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন।
গত বছর ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে লকডাউন শুরু হয়েছিল। টানা দু'মাসের লকডাউনে অসংখ্য সামাজিক সংগঠনের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়েও অনেকে ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা চালিয়েছেন; কিন্তু এবার তেমন উদ্যোগ অনুপস্থিত। গত বছরের লকডাউনের শুরুতেই ঢাকা শহরজুড়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সবার আগে ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়েছিল। তাদের অসংখ্য সদস্য আক্রান্ত হওয়ার কারণে এবার তারা ত্রাণ বিতরণে নেই।\হঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কাউন্সিলরদের কাছেও কোনো আর্থিক সহায়তা পৌঁছেনি। তবে ব্যক্তি পর্যায়ে অনেক এলাকায় কাউন্সিলররা সীমিত পর্যায়ে ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন, সঙ্গে আছি, মাস্তুল ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এবার ঢাকার রাজপথে ত্রাণ বিতরণ চালানো হচ্ছে। তবে তাদের তৎপরতাও গত বছরের তুলনায় অনেক কম।\হএ বিষয়ে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের কমিউনিকেশন হেড সালমান খান জানান, গতবারের তাদের কোনো স্বেচ্ছাসেবী কর্মীই করোনায় আক্রান্ত হননি। কিন্তু এবার এরই মধ্যে ৭-৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং একজন মারা গেছেন। তিনি জানান, আগেরবার অনেক অনুদান এলেও এবার অনুদানের পরিমাণ কম। গত বছরে দিনে ২৪ হাজার মানুষকে তারা রান্না করা খাবার বিতরণ করেছেন। এবার দিনে ১০ হাজার মানুষকে দিচ্ছেন।\হরাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সালমান খান বলেন, গতবার মানুষ লকডাউনের নির্দেশনা যতটা মেনেছে, এবার তেমন দেখা যাচ্ছে না। রাজধানীর বিভিন্ন বস্তি এলাকায়ও পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চোখে পড়েছে। প্রধান সড়কগুলোতে মানুষ চলাচল কম থাকলেও ভেতরের দিকে দোকানপাট পুরোপুরি খোলা। মানুষজন মাস্ক না পরেই এসব দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছে, খাবার খাচ্ছে। ঢাকার সবচেয়ে বড় বস্তি কড়াউলে এমন চিত্র দেখা গেছে বলে দাবি করেন তিনি।
গত বছর পুলিশের ভূমিকা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু এবার পুলিশ সদস্যরা কেন মাঠে নেই- এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, গতবছর পুলিশের অসংখ্য সদস্য ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু তাকে তো কোনো লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে পারছি না। তাহলে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করব কী করে? কীভাবে তাকে ত্রাণ দিয়ে মাঠে পাঠাব? এসব কারণেই এবার ত্রাণ বিতরণের কাজ থেকে নিজেদের বিরত রেখেছে পুলিশ।
পুলিশ কমিশনার বলেন, গতবারের তুলনায় এবার পুলিশ সদস্য আক্রান্তের হার একশ ভাগের এক ভাগেরও কম। একজন পুলিশ সদস্য ত্রাণ বিতরণে গিয়ে আক্রান্ত হলে আমাদের করার কিছুই থাকে না। যদি কেউ প্রাণ হারান, তার পরিবারের কাছে জবাব দেওয়ার উপায় থাকে না। ত্রাণ বিতরণ সমন্বয়ের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি জেলায় একজন করে সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারাই এখন এ বিষয়ে কাজ করবেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান মনে করেন, গত বছরের মার্চে লকডাউন শুরুর পরই মানুষ যার যা সামর্থ্য আছে তা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলেন; কিন্তু গত এক বছরে মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেননি। যেসব মানুষ গতবার সাহায্য নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন, তারাই এবার টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছেন। ফলে তৎপরতা কমে গেছে।
কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান জানান, সরকারি বা সিটি করপোরেশন থেকেও কোনো বরাদ্দ বা সহায়তা এখনও তাদের হাতে পৌঁছায়নি। ব্যক্তি উদ্যোগে তারা ত্রাণ বিতরণ করছেন। তার নির্বাচনী এলাকায় তিনি বাড়ি বাড়ি বিনামূল্যে সবজি বিতরণ করছেন। কারণ কাঁচাবাজার থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে।\হগত বছর লকডাউনে ত্রাণ বিতরণের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করা সামাজিক সংগঠন 'সঙ্গে আছি'র সভাপতি জসিম উদ্দীন খানও একই ধরনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, গতবার তারা প্রায় ৫০ লাখ টাকার ত্রাণ বিতরণ করেছিলেন। তখন রাস্তায় প্রচুর ক্ষুধার্ত মানুষের দেখা পাওয়া যেত। এবারের পরিস্থিতি পুরো ভিন্ন। আর্থিক অনুদান তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। লকাডাউনে গতবারের দুঃসহ পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে এবার ভাসমান জনগোষ্ঠীর অনেকেই আগেভাগেই গ্রামে চলে গেছে।
মন্তব্য করুন